একবারই মরব: জনসভায় ফখরুল

প্রকাশ | ২১ ডিসেম্বর ২০১৮, ২০:৪৮ | আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৮, ২০:৫১

নারায়ণগঞ্জ প্রতিবেদক

ভয় না পেয়ে ৩০ ডিসেম্বর কেন্দ্রে কেন্দ্রে অবস্থান নিতে দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বলেছেন, ন্যয়ের জন্যই এই কাজটি করতে হবে।

৩০ ডিসেম্বরের ভোটকে সামনে রেখে গতকাল নারায়ণগঞ্জের বন্দরের সোনাকান্দা স্টেডিয়ামে ঐক্যফ্যন্টের জনসভায় এ কথা বলেন বিএনপি নেতা।

ফখরুল বলেন, ‘ভয়ের কিছু নেই। আপনি ন্যায়ের জন্য ধানের শীষের জন্য ভোটকেন্দ্রে অবস্থান নেন। মানুষ একবারই মরে, বীরের মৃত্যু নেই। বারবার মরব না।’

সমাবেশে নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী কাজী মনিরুজ্জামান মনির, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের নজরুল ইসলাম আজাদ, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের মনির হোসাইন কাসেমী এবং নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের প্রার্থী ও নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা এস এম আকরাম উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিটি জেলায়, প্রতিটি গ্রামে মানুষ বিএনপির পক্ষে জেগে উঠছে বলেও মনে করেন ফখরুল। বলেন, ‘যত মানুষ জেগে উঠছে, ততই নির্যাতনের মাত্রা বাড়াচ্ছে। মানুষ কখন নির্যাতন করে? যখন মানুষ একা হয়ে যায়।’

সমাবেশটি হওয়ার কথা ছিল বেলা তিনটায়। তবে বন্দরের মদনপুরে মহাসড়কে কে বা কারা রাস্তায় বাঁশ ফেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে মির্জা ফখরুল ভিন্ন রাস্তা দিয়ে সমাবেশে প্রবেশ করেন।

এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিএনপি নেতাদেরকে নিয়ে যান নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ।

সমাবেশে ৩০ ডিসেম্বর ধানের শীষে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আপনারা ভোটের আগের দিন রাত থেকে ভোটকেন্দ্র পাহারা দেবেন। ... তারিখ রায় দেওয়ার সময় আলোর দিকে থাকবেন নাকি অন্ধকারে থাকবেন, মুক্তির পথে থাকবেন নাকি পরাধীনতার পথে থাকবেন সেটা ভাবতে হবে।’

ভোটের পরিবেশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী তার অঙ্গীকার রাখেননি বলেও অভিযোগ করা হয় সমাবেশে। ফখরুল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন তফসিল ঘোষণার পর হামলা-মামলা গ্রেপ্তার করা হবে না, কিন্তু হচ্ছে। তাহলে কি তাকে সত্যবাদী বলা যায়? হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, জামিন দেওয়া হচ্ছে না। প্রচারণা করতে দেওয়া হচ্ছে না। এটাই কি গণতন্ত্র?’

‘এক দল হাজার হাজার মানুষ নিয়ে সভা সমাবেশ করছে। আর আমাদের মাইক লাগাতে দেয় না, ভোট চাইতে দেয় না। দেশে এক অদ্ভুত নির্বাচন হচ্ছে। আর সিইসি বলেছেন নির্বাচনের সুবাতাস বইছে, লেভেল প্লেইং ফিল্ড আছে।’

নির্বাচন কমিশনকে ‘ঠুঁটো জগন্নাথ’ উল্লেখ করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমরা কথা বললেও তারা চুপ করে বসে থাকে। ...আপনি দায়িত্ব পালন করুন। যদি দায়িত্ব পালন করতে না পারেন তাহলে দায়িত্ব ছেড়ে দিন। নতুবা জনগণ মেনে নেবে না।’

বর্তমান সরকার দেশে যে ব্যাপক উন্নয়নের দাবি করছে তাকেও নাকচ করেন বিএনপি মহাসচিব। বলেন, ‘ দেশের উন্নয়ন নয়, উন্নয়ন হয়েছে ঠিকই তা সরকার দলীয় নেতাদের পকেটের। সব কিছুরই দাম বেড়েছে। বাড়ি ভাড়া বেড়েছে। অথচ, লাখ টাকা দিয়েও চাকরি পাওয়া যাচ্ছে না। তবে হ্যাঁ চাকরি হচ্ছে, তার জন্য চাকরির আবেদনকারীদের ডিএনএ পরীক্ষা করে নেওয়া হচ্ছে, তাদের রক্তে আওয়ামী লীগ আছে কি না সেটা দেখা হচ্ছে।

ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতায় এলে বেকারদের চাকরি দেওয়া, না পারলে ভাতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় সমাবেশে। ফখরুল বলেন, ‘দেশে শিল্প কারখানা করব, মেয়েদের উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা করব। ধর্মীয় কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। এদেশ সব ধর্মের মানুষের দেশ। কারো উপর হাত দেওয়া হবেন না।’

ঐক্যফ্রন্ট নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না, জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপি নেতা তৈমূর আলম খন্দকার প্রমুখ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।