মায়ের পাশে শায়িত আমজাদ হোসেন

প্রকাশ | ২৩ ডিসেম্বর ২০১৮, ১০:৫৭ | আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৬:৩৬

বিনোদন প্রতিবেদক

গ্রামের বাড়ি জামালপুরে মায়ের কবরের পাশে শায়িত হলেন চলচ্চিত্র পরিচালক, চিত্রনাট্যকার ও গীতিকার আমজাদ হোসেন। মৃত্যুর আগে প্রখ্যাত এই নির্মাতা এমন ইচ্ছার কথাই জানিয়ে রেখেছিলেন পরিবারকে। আজ রবিবার সকাল ১০টায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করে তার সেই ইচ্ছা পূরণ করা হল। 

তবে আমজাদ হোসেনের স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার চেয়েছিলেন ঢাকায় বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তার স্বামীকে দাফন করতে। কিন্তু দুই ছেলে সাজ্জাদ হোসেন দোদুল ও সোহেল আরমান মায়ের সঙ্গে আলোচনা করে বাবার ইচ্ছাকেই প্রাধান্য দেন।

মৃত্যুর ছয় দিন পর গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ব্যাংকক থেকে দেশে আনা হয় আমজাদ হোসেনের মরদেহ। এরপর শনিবার সকালে মরদেহ নেওয়া হয় ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে সর্বস্তরের মানুষ প্রয়াত নির্মাতাকে শেষ শ্রদ্ধা জানান।

পরে মরদেহ নেওয়া হয় আমজাদ হোসেনের দীর্ঘদিনের কর্মস্থল এফডিসিতে।  সেখানে নবীণ-প্রবীণ সহকর্মীরা চোখের জলে তাকে শেষ বিদায় দেন। এফডিসিতে প্রথম জানাজা শেষে মরদেহ নেওয়া হয় চ্যানেল আই ভবন প্রাঙ্গণে। সেখানে দ্বিতীয় শ্রদ্ধা নিবেদন ও জানাজার নামাজ শেষে মরদেহ জামালপুরে নেওয়া হয়।

গত ১৪ ডিসেম্বর ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মুক্তিযোদ্ধা পরিচালক আমজাদ হোসেন। তার চিকিৎসায় প্রায় ৬৫ লাখ টাকা খরচ হয়। হাসপাতালের এত টাকা বিল মিটিয়ে বাবার মরদেহ দেশে আনতে পারছিলেন না দুই ছেলে দোদুল ও সোহেল। এ কারণে মরদেহ বাংলাদেশে আনতে বিলম্ব হয়। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহায়তায় মরদেহ দেশে আনা হয়।

এর আগে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে তেজগাঁওয়ের ইমপালস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল আমজাদ হোসেনকে। সেখানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছিল তাকে। কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য গুণী এই নির্মাতাকে ব্যাংককে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ জন্য ৪২ লাখ টাকা দেন তিনি।

প্রয়াত আমজাদ হোসনের পরিচালনা জীবন শুরু হয়েছিল ১৯৬১ সালে ‘তোমার আমার’ ছবিটি নির্মাণের মধ্যদিয়ে। প্রায় ৫৮ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ‘আগুন নিয়ে খেলা’, ‘নয়নমনি’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সুন্দরী’, ‘ভাত দে’, ‘দুই পয়সার আলতা’ ও ‘জন্ম থেকে জ¦লছি’র মতো কালজয়ী কিছু চলচ্চিত্র তিনি নির্মাণ করেছেন। এর স্বীকৃতিস্বরূপ দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১২টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার তিনি লাভ করেছেন। তার ঝুলিতে রয়েছে ‘একুশে পদক’ ও বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার’ও।

ঢাকা টাইমস/২৩ ডিসেম্বর/এএইচ