‘ব্লাউজ নিয়ে’ অঞ্জনার দুঃখ প্রকাশ

প্রকাশ | ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৫:৩৭

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস

বেসরকারি একটি টিভি টকশোতে উন্নয়নের কথা বলতে গিয়ে ‘ব্লাউজের’ প্রসঙ্গ টেনে আলোচনার খোরাক হয়েছেন ঢাকাই ছবির নাচের রানী অঞ্জনা।  

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে নিয়ে রম্য হচ্ছে। আলোচনা হচ্ছে। সমালোচনা হচ্ছে। নৌকার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত অঞ্জনার দৃষ্টিও এড়ায়নি। সোমবার ঢাকা টাইমসের সঙ্গে যখন তার আলাপ হচ্ছিল, তখন তিনি কিশোরগঞ্জের পথে। নির্বাচনী প্রচারে যাচ্ছেন।

‘ব্লাউজ’ প্রসঙ্গে টানতেই বললেন, ‘টকশোতে বলতে গিয়ে আমি বাক্যটা শেষ করতে পারেনি। এ জন্য কারো যদি বুঝতে অসুবিধা হয়, তার জন্য আমি দুঃখিত।’

সম্প্রতি টিভি টকশোতে ক্ষমতাসীন দল ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাফল্যের কথা বলছিলেন তিনি। এ সময় গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের কথা বলতে গিয়ে অঞ্জনা সুলতানা বলেন, ‘কয়জন, কয়জন আছে, এই যে কাপড়, গার্মেন্টেসের কাপড়। যেভাবেই হোক। আজকাল গ্রামেগঞ্জে কিন্তু ব্লাউজ ছাড়া কেউ থাকে না। এটা কার উদ্যোগ? কার সফলতা? এটা আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সফলতা। কেউ কিন্তু, ব্লাউজ ছাড়া কেউ থাকে না।’

তার এই বক্তব্যের ক্লিপিং ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বিতর্ক জমেছে তা থেকেই।

অঞ্জনা বললেন, ‘আমি তো ৩০ থেকে ৩৫ বছর আগের কথা বলতে চেয়েছি। গ্রামেগঞ্জে শুটিংয়ে যেতাম। দেখতাম নিম্নবিত্ত নারীরা একটা শাড়ি প্যাঁচিয়ে শুটিং দেখতে আসছেন। তাদের শরীরে কোনো ব্লাউজ ছিল না। জানতে চাইলে বলত, টাকার অভাবে ব্লাউজ কিনতে পারে না। অনেক কষ্ট-ক্লেশে একটা সময় তাদের দিন কেটেছে। এখন তো আর সেই অবস্থা নেই...।

বলতে বলতে গাড়ির চালককে পথ চেনাতে সময় চেয়ে নিলেন। তারপর আবারও বললেন, ‘টাকার অভাবে কেউ ব্লাউজ কিনতে পারে না-এখন এমন কাউকে আপনি খুঁজেই পাবেন না। এটা তো আসলে আমাদের গ্রামীণ অর্থনীতির এগিয়ে যাওয়ার এই উদাহরণ। সেই কথাই বলতে চেয়েছি। অথচ মানুষ ভুল বুঝছে।’

সিনেমায় নাচে অঞ্জনার কাছাকাছি আসতে পারেননি কেউ। তাকে নিয়ে গান হয়েছে। ‘নাচো নাচো গো অঞ্জনা, নাচো কোমড় দোলাইয়া’। সেই গানেও নেচেছেন তিনি। ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে সিনেমায় অভিনয় করছেন। ৩৫০টির বেশি ছবিতে অভিনয় করে দর্শক হৃদয়ে অঞ্জনা আছেন ভালোভাবেই।

তার অভিনীত প্রথম ছবি বাবুল চৌধুরী পরিচালিত ‘সেতু’। কিন্তু দর্শকের সামনে তিনি প্রথম আসেন মাসুদ পারভেজের ‘দস্যু বনহূর’ ছবির মাধ্যমে।  

১৯৬৫ সালের ২৭ জুন ঢাকা ব্যাংক কোয়ার্টারে জন্মগ্রহণ করেন অঞ্জনা। সংস্কৃতিমনা পারিবারিক আবহে ছোটবেলা থেকেই বেড়ে উঠেছেন। নৃত্যে ছিল বিশেষ দুর্বলতা। বাবা-মা তাকে ভারতে পাঠান নৃত্য শেখাতে। সেখানে তিনি ব্যাক্তিগতভাবে ওস্তাদজি বাবুরাজ হীরালালের অধীনে বেশ ভালোভাবেই কত্থক নৃত্য আয়ত্ব করে দেশে ফেরেন।

পরিণীতা’ (১৯৮৬)‘গাংচিল’ (১৯৮২) ছবিতে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় পুরস্কার পান অঞ্জনা। জাতীয় পুরস্কারের পাশাপাশি দুবার বাচসাস, নৃত্যে দুইবার শ্রেষ্ঠ জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন। এছাড়া ১৯৯৮ সালে ভারতীয় উপমহাদেশে নৃত্যে প্রথম হয়ে জিতে নিয়েছেন হলিউড অ্যাওয়ার্ড পুরষ্কার।

নায়করাজ রাজ্জাকের সঙ্গে সর্বাধিক ৩০টি ছবির নায়িকাও অঞ্জনা। এর মধ্যে অশিক্ষিত, রজনীগন্ধা, আশার আলো, জিঞ্জির, আনারকলি, বিধাতা, বৌরানী, সোনার হরিণ, মানা, রামরহিমজন, সানাই, সোহাগ, মাটির পুতুল, সাহেব বিবি গোলাম ও অভিযান উল্লেখযোগ্য।

(ঢাকাটাইমস/ ২৪ ডিসেম্বর/ এইচএফ)