মাগুরার দুই আসনে দুই চিত্র

মোখলেছুর রহমান
 | প্রকাশিত : ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৯:৪৫

মাগুরার দুটি আসনে প্রচারে ভিন্ন চিত্র। একটি আসনে বিএনপির প্রার্থী নাশকতার মামলায় কারাগারে। অন্য আসনটিতে দুই পক্ষেই চলছে জমজমাট প্রচার।

যে আসনটিতে বিএনপির প্রচার নেই, সেখানে নেতা-কর্মীরা অবশ্য বলছেন, তথ্য প্রযুক্তির বিকাশের যুগে স্বশরীরে না গিয়েও ভোটারদের কাছে পৌঁছা যায়। আর সে চেষ্টা করছেন তারা। সামাজিক মাধ্যমে চলছে সে চেষ্টা।

মাগুরা-১

সদর ও শ্রীপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত আসনটিতে নৌকা পেয়েছেন সাইফুজ্জামান শিখর। ব্যাপক গণসংযোগ, পথসভা, ওঠান বৈঠক চলছে।

বিএনপির প্রার্থী মনোয়ার হোসেন খান কারাগারে। ২০১৫ সালের ২১ মার্চ মঘির ঢাল এলাকায় পেট্রল বোমা হামলা মামলার আসামি তিনি। ঘটনার পর সিঙ্গাপুরে চলে যান। গত নভেম্বরে দেশে ফিরে হাইকোর্র্ট থেকে জামিন নেন। কিন্তু তথ্য গোপন করে জামিন দেওয়ার ঘটনার প্রমাণ মিললে তা বাতিল হয় এবং বর্তমানে তিনি কারাগারে।

নির্বাচনী আসনে মনোয়ারের পক্ষে উল্লেখযোগ্য কোন পোস্টার চোখে পড়েনি। দেখা যায়নি প্রচার। নেতাকর্মীদের মধ্যেও হতাশা স্পষ্ট।

জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আকতার হোসেন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘এখানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বলে কিছু নেই। নেতা কর্মীরা সবসময় গ্রেপ্তার আতঙ্কে।’

বিএনপির প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কারী শাহেদ হাসান টগর বলেন, ‘সরকারদলীয় পা পাড়িয়ে সংঘর্ষ করছে। দলের নেতাকর্মীরা পলাতক রয়েছে। তফসিল ঘোষণার পর আটটি মামলা হয়েছে।’

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তানজেল হোসেন খান বলেন, ‘ আমাদের প্রার্থী পরপর চার বার নির্বাচিত প্রয়াত নেতা আছাদুজ্জামানের ছেলে। তাকে পেয়ে নেতা-কর্মীরা উজ্জ্বীবিত। তিনি যোগ্য প্রার্থী। তার পক্ষে তরুণ প্রজন্ম থেকে শুরু করে সর্বস্তরের ভোটাররাই।’

১৯৯১ সালে এই আসনে বিএনপি জিতলেও এর ১৯৯৬ সাল থেকে আসনটি আওয়ামী লীগের দখলে। চারটি নির্বাচনে জয়ী সিরাজুল ইসলাম ২০১৫ সালে মারা গেলে উপনির্বাচনে দলের প্রার্থী আব্দুল ওহাব জেতেন। এখানে দলের সাংগঠনিক অবস্থা আর জনসমর্থনের বিষয়টি নিয়ে কোনো সংশয় নেই।

মাগুরা-২

এই আসনটি তুমুল আলোচিত ৯০ দশক থেকে। ১৯৯৪ সালে এই আসনের উপনির্বাচনে কারচুপির অভিযোগের পর নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলে আওয়ামী লীগ।

এখানে নৌকার প্রার্থী যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার। বিএনপি থেকে প্রার্থী হয়েছেন এরশাদ সরকারের মন্ত্রী নিতাই রায় চৌধুরী। ২০০৮ সালেও দুই নেতা মুখোমুখী হন। জেতের বীরেন।

এই আসনে ১৯৯৪ সালের সেই উপ-নির্বাচন এবং ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচন ছাড়া সব নির্বাচনে জেতে আওয়ামী লীগ।

এবার প্রতীক বরাদ্দের সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইতে নেমে পড়েছে নেতাকর্মীরা।

নির্বাচনী এলাকার মাঠে-ঘাটে এবং চায়ের দোকানে চলছে চলছে ভোটের হিসাব-নিকাশ ও চুলচেড়া বিশ্লেষণ। আসনটি ধরে রাখতে মরিয়া আওয়ামী লীগ, বিএনপি চাইছে পুনরুদ্ধার।

বীরেন শিকদার বলেন, ‘ এলাকায় রাস্তা, সেতু, স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার অনেক উন্নয়ন করেছি। উপজেলার সব শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে আমার আত্মার সম্পর্ক। নৌকার প্রার্থী হিসেবে এ কারণে জনগণের রায় পাব।

বিএনপি প্রার্থী নিতাই রায় চৌধুরী ১৯৮৮ সালে একতরফা নির্বাচনে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে জেতেন। ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সালে ধানের শীষ নিয়ে হারেন। তবে এবার জয়ের ব্যাপারে তিনি ভীষণ আত্মবিশ্বাসী। ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমি বিএনপির জন্য নিজের জীবন বিসর্জন দিয়ে মাঠে। ভোটের পরিবেশ ভালো থাকলে আশা রাখছি আসনটি পুনরুদ্ধার করে দেশনেত্রীকে উপহার দিতে পারব।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :