হবিগঞ্জ

‘শক্তিশালী’ আ.লীগ বনাম ‘নড়বড়ে’ বিএনপি

পাবেল খান চৌধুরী
 | প্রকাশিত : ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ১০:২৩

অতীতের নির্বাচনের ফল বলছে, এই জেলার চারটি আসনেই শক্তিশালী আওয়ামী লীগ। সারা দেশে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সেখানে চ্যালেঞ্জ গড়ে তুলতে সফল হয়নি।

আগামী রবিবার জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে জেলার চারটি আসনেই পুরোশক্তি নিয়ে ভোটের ময়দানে ক্ষমতাসীন দল। অন্যদিকে বিএনপির তৎপরতা বেশি হবিগঞ্জ-৩ আসনে। বাকি তিন আসনে প্রচারে স্পষ্টতই পিছিয়ে তারা।

চা শ্রমিক অধ্যুষিত এলাকায় সব সময় শক্তিশালী আওয়ামী লীগ। বাগানের শ্রমিকদের প্রায় শতভাগ ভোটই পড়ে আসছে নৌকায়। সেই ধারাবাহিকতায় কখনো ছেদ ঘটাতে পারেনি প্রতিপক্ষ দলগুলো। আর এই বিষয়টিই চারটি আসন ধরে রাখার ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছে আওয়ামী লীগকে।

তবে বিএনপি এবার চমক দেখিয়েছে আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়াকে একটি আসনে ধানের শীষ মার্কা দিয়ে। রেজা অবশ্য বিএনপিতে যোগ দেননি। ঐক্যফ্রন্টে দলটির শরিক গণফোরামে যোগ দিয়ে তিনি প্রার্থী হয়েছেন।

চারটি আসনের মোট প্রার্থী ২৩ জন। এর মধ্যে হবিগঞ্জ-৪ ছাড়া বাকি তিনটিতে আসনে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা।

অন্যদিকে হবিগঞ্জ-৩ ছাড়া অন্য কোথাও দলীয় প্রার্থী নেই বিএনপির। গণফোরামকে হবিগঞ্জ-১ এবং খেলাফত মজলিসকে দেওয়া হয়েছে হবিগঞ্জ-২ ও ৪ আসন।

হবিগঞ্জ-১

নবীগঞ্জ ও বাহুবল উপজেলা নিয়ে গঠিত আসনটিতে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দুজনই বাবার কারণে আলোচিত। নৌকা পেয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক দেওয়ান ফরিদ গাজীর ছেলে শাহনওয়াজ মিলাদ গাজী। অন্যদিকে ধানের শীষ পেয়েছেন আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া।

দুই প্রার্থীই একই ইউনিয়নের এবং সেটি আওয়ামী লীগের ভোট ব্যাংক হিসেবেই পরিচিত। সেখানে রেজা কিবরিয়া কতটা ভাগ বসাতে পারেন, এটাই এখন আলোচনায়।

তবে রেজা কিবরিয়া প্রার্থী হওয়ার পর যতটা আলোচনা ছিল, এখন সেটি কমে এসেছে। রেজা প্রচারেও খুব বেশি মনোযোগী নন। অন্যদিকে মিলাদ ছুটে বেড়াচ্ছেন সকাল থেকে রাত অবধি।

মিলাদ গাজী ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘হবিগঞ্জ-১ আসনে নৌকার বিজয় নিশ্চিত। এখন মুখের কথায় নয়, মানুষ কাজে বিশ্বাস করে। গত ১০ বছরে নবীগঞ্জ-বাহুবলবাসীর যে উন্নয়ন আগ্রযাত্রা শুরু হয়েছে তা শেষ হয়ে যাক জনগণ চায় না।’

রেজা কিবরিয়া বলেন, ‘আমার বাবা ছিলেন এক সৎ আদর্শবান ব্যক্তি। যিনি নবীগঞ্জ-বাহুবলবাসীর কল্যাণে সারাটা জীবন কাজ করেছেন। এই হবিগঞ্জের মাটিতেই আমার বাবাকে জীবন দিতে হয়েছে। তাই আমি আমার বাবার অসম্পন্ন কাজগুলো শেষ করতে চাই। আগামী নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দিয়ে আমাকে নবীগঞ্জ-বাহুবলবাসীর উন্নয়নে কাজ করার সুযোগ দেবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

কিবরিয়াকে যখন হত্যা করা হয়, তখন ক্ষমতায় বিএনপি-জামায়াত জোট। এই ঘটনায় কিবরিয়া পরিবার বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে নানা কর্মসূচিও পালন করেছে।

হবিগঞ্জ-২

বানিয়াচং ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত আসনটি আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবেই পরিচিত। নৌকার প্রার্থী এখানে কখনো হারে না। এবার দলটির প্রতীক পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য আব্দুল মজিদ খান।

এখানে বিএনপির প্রার্থী নেই। শরিক দল বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির আব্দুল বাছিত আজাদকে দেওয়া হয়েছে ধানের শীষ। তবে দলটির কোনো অবস্থানই নেই সেখানে। আবার কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হাসান জীবনকে মনোনয়ন না দেয়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে অসন্তোষ।

হবিগঞ্জ-৩

সদর, লাখাই ও শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত আসনটিতেই কেবল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে লড়াই হচ্ছে। ক্ষমতাসীন দল প্রতীক দিয়েছে বর্তমান সংসদ সদস্য আবু জাহিরকে। আর বিএনপি প্রতীক দিয়েছে সাবেক পৌর মেয়র জি কে গউছকে। তিনি সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া হত্যা মামলায় কারাগারে থেকেও গত পৌর নির্বাচনে জয়ী হোন।

আসনটিতে ওই দুই হেভিওয়েট প্রার্থী যেমন সমানে সমান তেমনি তাদের কর্মী-সমর্থকও রয়েছে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক।

আবু জাহির ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল নির্মাণ, স্টেডিয়াম নির্মাণ, বৃন্দাবন সরকারি কলেজে অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স চালু, কলেজ নির্মাণ ছাড়াও রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। আরও উন্নয়ন পেতে আবার নৌকায় ভোট দেবে জনগণ।’

জি কে গউছ বলেন, ‘আমি তিনবারের পৌরমেয়র। পৌরসভাকে একটি আধুনিক পৌরসভায় রূপান্তরিত করেছি। সংসদ সদস্য হলে তিনটি উপজেলাকেই উন্নত উপজেলায় পরিণত করব।

হবিগঞ্জ-৪

চুনারুঘাট ও মাধবপুর উপজেলায় চা-বাগানবেষ্টিত এ আসনটি দীর্ঘদিন ধরেই আওয়ামী লীগের দখলে। সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী প্রয়াত এনামুল হক মোস্তফা শহীদ ছয়বার এখান থেকে জিতেছেন। ২০১৪ সালে জেতেন মাহবুব আলী।

এখানে ধানের শীষ পেয়েছেন খেলাফত মজলিসের আহমাদ আব্দুল কাদের। বিএনপি থেকে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়সল। তিনি ধানের শীষ না পাওয়ায় বিএনপির কর্মী-সমর্থকরা অনেকটাই দূরে দূরে।

এই আসনে চা বাগান বেশি হওয়ায় ফলে চা শ্রমিকরা নির্বাচনে জয়-পরাজয়ে ভূমিকা রাখেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

দেশ গরমে পুড়ছে, সরকার মিথ্যা উন্নয়নের বাঁশি বাজাচ্ছে: এবি পার্টি

বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদ সালাম-মজনুর

নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে রাজধানীতে রিজভীর নেতৃত্বে মিছিল

মন্দিরে আগুন ও দুই শ্রমিক পিটিয়ে হত্যায় বিএনপির উদ্বেগ, তদন্ত কমিটি গঠন

প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় এদেশে আইনের প্রয়োগ হয়: রিজভী

দেশি-বিদেশি চক্র নির্বাচিত সরকারকে হটানোর চক্রান্ত করছে: ওবায়দুল কাদের

প্রতিমা পোড়ানোর মিথ্যা অভিযোগে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শাস্তি দিতে হবে: ছাত্রশিবির সভাপতি

আল্লামা ইকবালের ৮৫তম মৃত্যুবার্ষিকীতে মুসলিম লীগের আলোচনা সভা

সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যার প্রতিবাদ জানাল রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন

ভারতীয় পণ্য বর্জন চলবে: ফারুক

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :