সুনামগঞ্জ

‘ক্ষমতায় আসছি ভোট দিন’

জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া
| আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ১২:৪৩ | প্রকাশিত : ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ১০:৪০

সুনামগঞ্জে ভোটের প্রচারে দুই পক্ষই ব্যস্ত জমজমাট প্রচারে। আওয়ামী লীগ বলছে, ক্ষমতায় ফিরছে তারাই। বিরোধী দলকে ভোট দিলে উন্নয়নে পিছিয়ে পড়তে হবে। অন্যদিকে বিএনপি বলছে, এবার ভোটবিপ্লব হবে তাদের পক্ষেই। নৌকাকে ভোট দিলেই বঞ্চিত হবে মানুষ।

জেলায় আসন পাঁচটি। সবশেষ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে পাঁচটিতেই বড় জয় পায় মহাজোটের প্রার্থীরা। এবার পাঁচটি আসনের চারটিতে নৌকা এবং একটিতে আছেন লাঙ্গলের প্রার্থী। বিএনপি একটি আসন শরিক দলকে ছেড়ে দিয়েছে। তবে তারও মার্কা ধানের শীষ।

পাঁচটি আসনেই বরাবর শক্তিশালী আওয়ামী লীগ। তবে কোনো কোনো নির্বাচনে একটি বা দুটিতে ছন্দপতন হয়েছে দলটির। তবে একটি মাত্র আসনে টানা দুইবার হেরেছে দলটি। আবার আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জাতীয় পার্টিও অতীতের নির্বাচনগুলোতে বেশ ভালো ভোট পেয়েছে। দুই পক্ষের ভোট যোগ হওয়ায় এবারও বড় জয়ের প্রত্যাশায় মহাজোট।

তবে বিএনপি অতীতে বিভিন্ন আসনে জিতে যাওয়ার বিষয়টি নিয়েই স্বপ্ন দেখছে। দলটি বলছে, একাধিক আসনে এবারও জয় ছিনিয়ে নেওয়া সম্ভব।

পাঁচটি আসনে উপজেলা মোট ১১টি। আর ভোটার সংখ্যা ১৬ লাখ ৪৭ হাজার ৫১১ জন। তাদের মন জয়ে প্রার্থী হয়েছেন ৩২ জন। যদিও আলোচনা ১০ জনকে ঘিরেই।

সুনামগঞ্জ-১

এই আসনে ১৯৯১ সাল থেকে একবারই হেরেছে আওয়ামী লীগ। ২০০১ সালে জয় ছিনিয়ে নেয় বিএনপি। বাকি তিনটি নির্বাচনেই বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে বর্তমানে ক্ষমতাসীনরা।

তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা ও মধ্যনগর আসনে নৌকা নিয়ে লড়ছেন মোয়াজ্জেম হোসেন রতন। তিনি ২০০৮ সালে বিএনপিকে ৫৮ হাজার ৪৮০ ভোটে হারান।

১০ বছর আগে বিএনপি মার্কা দিয়েছিল রফিক চৌধুরীকে। এবার দিয়েছে নজির হোসেনকে। আরও তিনজন প্রার্থী থাকলেও তারা আলোচনায় নেই।

আওয়ামী লীগ এলাকায় প্রচার চালাচ্ছে, তারা আবার ক্ষমতায় ফিরছে। নেতারা বলছেন, অন্য দলকে ভোট দিলে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হবে এলাকা।

তবে বিএনপিও মাঠ ছেড়ে দিতে চাইছে না। তারাও কোমর বেঁধে নেমেছে। তাদের প্রার্থী নজির হোসেন ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগ থেকেই জিতেছিলেন। তারও রয়েছে বড় কর্মিবাহিনী। এ কারণে তিনিও চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেবেন বলে আশা করছে বিএনপি।

সুনামগঞ্জ-২

দিরাই ও শাল্লা আসনটি থেকে বারবার জিতেছিলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। তার মৃত্যুতে ফাঁকা হওয়া আসনে উপনির্বাচনে তার স্ত্রী জয়া সেনগুপ্তা জেতেন। এবার জাতীয় নির্বাচনেও তাকেই প্রার্থী করেছে ক্ষমতাসীন দল।

বিএনপি প্রার্থী করেছে ১৯৯৬ সালে জাতীয় পার্টির হয়ে সুরঞ্জিতকে হারিয়ে দেওয়া নাছির উদ্দিন চৌধুরীকে। তিনিই চ্যালেঞ্জ করছেন জয়াকে।

হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় আওয়ামী লীগ বেশ শক্তিশালী। তবে ক্ষমতাসীন দলে বিভেদ আছে। সেটি মিটিয়ে ফেলার ওপর নির্ভর করবে ফল কী হবে।

২০০৮ সালের নির্বাচনে ১৭ হাজার ৯৪৮ ভোটে জিতেছিলেন সুরঞ্জিত। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন নাছির।

সুনামগঞ্জ-৩

জগন্নাথপুর ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ আসনটিকে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি বলা যায়। মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আবদুস সামাদ আজাদ এখান থেকে নির্বাচন করতেন। তার মৃত্যুর পর আওয়ামী লীগ প্রতীক দিয়ে আসছে এম এ মান্নানকে। তিনি সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত এবং বর্তমানে মন্ত্রিসভার সদস্য।

আওয়ামী লীগ একাট্টা থাকলে এই আসনে লড়াই গড়ে তোলা বিএনপির পক্ষে কঠিন হবে। তবে আজাদের ছেলে আজিজুস সামাদ ডন এবার মনোনয়নের দাবি নিয়ে এলাকায় বেশ ভালোভাবে সোচ্চার ছিলেন। তারও রয়েছে ব্যাপক সমর্থকগোষ্ঠী। তার মনোনয়ন না পাওয়ায় ডনের ঐক্যফ্রন্টে যাওয়া নিয়েও কথা উঠেছিল। তবে পরে তা সত্য প্রমাণ হয়নি।

এই আসনে বিএনপির প্রার্থী নেই। জোটের শরিক জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামীর নেতা শাহীনুর পাশা চৌধুরীকে দেওয়া হয়েছে ধানের শীষ।

২০০৮ সালে মান্নান ও শাহীনুর লড়াই করেছিলেন। সে সময় এক লাখ ৩৩ হাজার ৫৬৬ ভোট পেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী শাহীনুরকে ৭৭ হাজার ৯৫ ভোটে হারান।

সুনামগঞ্জ-৪

সদর ও বিশ্বম্ভরপুর আসনে আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী নেই। মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান মিসবাহকে সমর্থন দিয়েছে আওয়ামী লীগ।

এই আসনটিতে ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগ জেতে। তবে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে জেতেন বিএনপির ফজলুল হক আছপিয়া। তিনিই এবার পেয়েছেন দলীয় প্রতীক। আর দুইবার প্রতিপক্ষের দুর্গে হানা দেওয়া নেতা আবার সেটি কেন পারবেন না, সেই প্রশ্ন তুলছেন তার সমর্থকরা।

এই আসনে আছপিয়ার ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। দল ও জোটের শরিক দলের সবাই তার হয়ে কাজও করছে।

এই আসনে জাতীয় পার্টিরও বেশ সাংগঠনিক শক্তি আছে। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের সমর্থনে এখান থেকে জেতেন জাতীয় পার্টির মমতাজ ইকবাল। তিনি এক লাখ ২২ হাজার ৬৫৫ ভোট পেয়ে ৬৪ হাজার ২৩৮ ভোটে হারান। ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের সমর্থনে জয়ী পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ পারিবারিক কারণেই এলাকায় ব্যাপকভাবে পরিচিত। সঙ্গে আওয়ামী লীগের সমর্থন নিশ্চিত হলে সহজ জয়ের প্রত্যাশায় তার সমর্থকরা।

সুনামগঞ্জ-৫

ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলা নিয়ে গঠিত আসনেও ১৯৯১ সাল থেকে একবারই জিতেছে বিএনপি। ২০০১ সালে জয় পান দলের প্রার্থী কলিমউদ্দিন আহমেদ। তবে ২০০৮ সালে তাকে ৭৯ হাজার ২৬ ভোটে হারিয়ে দুর্গের দখল নেন আওয়ামী লীগের মহিবুর রহমান মানিক। তিনি ১৯৯৬ সালেও জেতেন।

এবার বিএনপি সেখানে প্রার্থী করেছে মিজানুর রহমান চৌধুরীকে। তার তাকে প্রার্থী করার পর দলের একটি অংশ বিদ্রোহ করেছে। আওয়ামী লীগে যোগও দিয়েছে তারা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

দেশ গরমে পুড়ছে, সরকার মিথ্যা উন্নয়নের বাঁশি বাজাচ্ছে: এবি পার্টি

বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদ সালাম-মজনুর

নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে রাজধানীতে রিজভীর নেতৃত্বে মিছিল

মন্দিরে আগুন ও দুই শ্রমিক পিটিয়ে হত্যায় বিএনপির উদ্বেগ, তদন্ত কমিটি গঠন

প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় এদেশে আইনের প্রয়োগ হয়: রিজভী

দেশি-বিদেশি চক্র নির্বাচিত সরকারকে হটানোর চক্রান্ত করছে: ওবায়দুল কাদের

প্রতিমা পোড়ানোর মিথ্যা অভিযোগে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শাস্তি দিতে হবে: ছাত্রশিবির সভাপতি

আল্লামা ইকবালের ৮৫তম মৃত্যুবার্ষিকীতে মুসলিম লীগের আলোচনা সভা

সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যার প্রতিবাদ জানাল রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন

ভারতীয় পণ্য বর্জন চলবে: ফারুক

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :