চার্লি চ্যাপলিনের প্রয়াণের দিন

প্রকাশ | ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৫:০৪

বিনোদন ডেস্ক

নামেই সুপরিচিত স্যার চার্লস স্পেনসার চ্যাপলিন জুনিয়র। তিনি ছিলেন একজন ব্রিটিশ চলচ্চিত্র অভিনেতা, পরিচালক ও সুরকার। হলিউড চলচ্চিত্র শিল্পের শুরু সময় থেকে মধ্যকাল পর্যন্ত তিনি তার অভিনয় ও পরিচালনা দিয়ে সাফল্যের শিখরে ওঠেন। চ্যাপলিনকে বড় পর্দার শ্রেষ্ঠ মূকাভিনেতা ও কৌতুকা অভিনেতা হিসেবেও বিবেচনা করা হয়।

চলচ্চিত্র শিল্প জগতে চ্যাপলিনের প্রভাব অনস্বীকার্য। ১৯৭৭ সালের এই দিনে পৃথিবী ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন এই কিংবদন্তি অভিনেতা। ১৮৮৯ সালে সুইজারল্যান্ডে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ভিক্টোরীয় যুগে শৈশব থেকে মৃত্যুর এক বছর আগ পর্যন্ত তার কর্মজীবনের ব্যাপ্তি প্রায় ৭৫ বছর। এই সময়ে তার বর্ণময় ব্যক্তিজীবন ও সমাজজীবনে খ্যাতি ও বিতর্ক- দুইই নিম্ন থেকে শীর্ষবিন্দু ছুঁয়ে গেছে।

সুইজারল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করা চ্যাপলিন লন্ডনে প্রচ- দারিদ্র ও কষ্টের মধ্য দিয়ে তার শৈশব অতিবাহিত করেন। বাবা না থাকায় এবং মায়ের অর্থাভাবে মাত্র ৯ বছর বয়সে তিনি একটি কর্মশালায় কাজ করতেন। যখন তার বয়স ১৪, তখন তার মাকে পাগলাগারদে পাঠানো হয়। শৈশব থেকেই চ্যাপলিন শিশুশিল্পী হিসেবে ইংল্যান্ডের বিভিন্ন রঙ্গশালায় সফর করেন। পরে মঞ্চাভিনেতা ও কৌতুক অভিনেতা হিসেবে অভিনয় শুরু করেনি।

১৯ বছর বয়সে তিনি স্বনামধন্য ফ্রেড কার্নো কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। যারা তাকে আমেরিকা নিয়ে যায়। চ্যাপলিন সেখানে হলিউডের সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯১৪ সালে কিস্টোন স্টুডিওজের হয়ে বড় পর্দায় অভিনয় শুরু করেন। অচিরেই তিনি নিজের সৃষ্ট ‘ভবঘুরে দ্য ট্রাম্প’ চরিত্রের মাধ্যমে পরিচিতি লাভ করেন। ফ্রান্স, ইতালি, স্পেন, পর্তুগালে তিনি ‘শার্লট’ নামে পরিচিতি পান।শার্লটের পরনে চাপা কোট, সাইজে বড় প্যান্ট, বড় জুতা, মাথায় বাউলার হ্যাট, হাতে ছড়ি আর অদ্বিতীয় টুথব্রাশ গোঁফ।

চ্যাপলিন শুরু থেকেই তার চলচ্চিত্রগুলো পরিচালনা করতেন। পরবর্তীতে এসানে, মিউচ্যুয়াল ও ফার্স্ট ন্যাশনাল করপোরেশনের হয়েও চলচ্চিত্র পরিচালনা চালিয়ে যান। ১৯১৮ সালের মধ্যে তিনি বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত ব্যক্তিত্বের মর্যাদা লাভ করেন। ১৯১৯ সালে তিনি সহ-প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে পরিবেশনা প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড আর্টিস্ট্স গঠন করেন। তাঁর নির্মিত প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘দ্য কিড’। যিটি ১৯২১ সালে মুক্তি পায়। পরবর্তীতে তিনি ‘আ ওম্যান অব প্যারিস’ (১৯২৩), ‘দ্য গোল্ড রাশ’ (১৯২৫) এবং ‘দ্য সার্কাস’ (১৯২৮) চলচ্চিত্রগুলো নির্মাণ করেন। সেগুলোতে তিনি অভিনয়ও করেন।

চলচ্চিত্র শিল্পে বিশেষ অবদানের জন্য ফ্রান্স সরকার তাকে ১৯৭১ সালে ‘লেজিওঁ দনরের কমান্ডার’ ও রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ ১৯৭৫ সালে ‘নাইটহুড’ উপাধীতে ভূষিত করেন। মৃত্যুর পরও চ্যাপলিন তার নির্মিত ‘দ্য গোল্ড রাশ’, ‘সিটি লাইট্স’, ‘মডার্ন টাইমস’ ও ‘দ্য গ্রেট ডিক্টেটর’ চলচ্চিত্রগুলো দিয়ে অমর হয়ে আছেন। এই চলচ্চিত্রগুলোকে প্রায়ই মার্কিন চলচ্চিত্রের সর্বকালের সেরা তালিকায় স্থান করে নিতে দেখা যায়।

ঢাকা টাইমস/২৫ ডিসেম্বর/এএইচ