ভ্রমণ

শহর থেকে একটু দূরে

প্রকাশ | ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৩:২৪

ফিচার প্রতিবেদক
ঢাকাটাইমস

ঢাকা শহরের অদূরে রয়েছে বেশ কিছু পিকনিক স্পট। এসব জায়গায় দিনে গিয়ে দিনে ফেরা যায়। ভ্রমণের এই মৌসুমে ঢাকার কাছের কয়েকটি পিকনিক স্পটের খবর রইল এই প্রতিবেদনে।

পদ্মা রিসোর্ট
ঢাকা থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলায় পদ্মা নদীতে চরের ওপর এই রিসোর্টটি অবস্থিত। পদ্মা নদীর পাড়ে অবস্থিত বলেও জায়গাটি অতি মনোরম আর সুন্দর। বর্ষা ঋতুর সময় গেলে আপনার বেশি ভালো লাগবে।

বেলাই বিল
গাজীপুরের বেলাই বিল মনোরম একটি জায়গা। চেলাই নদীর সঙ্গেই বেলাই বিল। এখানে ইঞ্জিনচালিত আর ডিঙি নৌকা দুটোই পাওয়া যায়। যেটাতে ভালো লাগে উঠে পড়ুন। সারাদিনের জন্য ভাড়া করে নিতে পারেন এবং ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিলে নিজেরাই চালিয়ে ঘুরতে পারেন। বিকেলে এই বিলের চারপাশে অপূর্ব দৃশ্য তৈরি হয়, সঙ্গে শাপলার ছড়াছড়ি। শুধু চারদিক তাকিয়ে থাকবেন। আবার কিছুক্ষণ পরপরই বাতাসের ঝাপটা লাগবে গায়ে। বেশি সময় নিয়ে গেলে অবশ্যই খাবার নিয়ে যাবেন।

মেঘনার চর
ঢাকার কাছে আড়াইহাজার চর এলাকা অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে খুব অল্প সময়ে। বিস্তীর্ণ এলাকায় এরকম মনোরম পরিবেশ আর কোথাও নেই শহরের আশপাশে। সারাদিনের জন্য ঘুরতে আসতে পারেন এখানে। নদীর তীরে ট্রলারে সন্ধ্যার সময়টা কাটাতে পারেন।

জল জঙ্গলের কাব্য
গাজীপুর জেলার টংগীর পুবাইলে অবস্থিত জল জঙ্গলের কাব্য রিসোর্ট। প্রাকৃতিক এক ভূমিকে অবিকৃত রেখে আরও প্রাকৃতিক করা হয়েছে ডিজাইনারের নিপুণ ছোঁয়ায়। জোছনা দেখতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন এখান থেকে। বিলের ওপর জোছনার আলো এক অন্য রকম অনুভূতি দেবে আপনাকে। অল্প খরচে সারাদিনের ঘুরে আসার জন্য এর চেয়ে ভালো জায়গা হবে না।

মেঘনা ভিলেজ
মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলায়, মেঘনা নদীর কাছে মেঘনা ব্রিজ হতে ১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মেঘনা ভিলেজ। সারাদিনের জন্য পরিবার বা বন্ধুদের নিয়ে খুব সহজেই ঘুরে আসতে পারেন এখান থেকে। আপনি চাইলে রিসোর্ট ভাড়া করে থাকতে পারেন। সেখানে রয়েছে এসি-ননএসি উভয় প্রকার কটেজ। এখানকার কটেজগুলো একটু ভিন্নভাবে তৈরি হয়েছে যা দেখতে অনেকটা নেপালি কটেজের মতো। 

নুহাশপল্লী
হুমায়ূন আহমেদকে সবাই চেনেন, তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে ৪০ বিঘা জায়গা নিয়ে তৈরি করেছেন ‘নুহাশপল্লী’। নুহাশপল্লী গাজীপুরে অবস্থিত একটি বাগানবাড়ি, নুহাশ চলচিত্রের শুটিং স্পট ও পারিবারিক বিনোদন কেন্দ্র। নুহাশপল্লীর পুরো জায়গাটি সবুজ গাছপালা দিয়ে আবৃত। দেখলেই মন জুড়িয়ে যাবে। এখানে অনেক প্রজাতির এবং অনেক রকমের গাছ রয়েছে। গাছের গায়ে সেটে দেওয়া পরিচিতি ফলক রয়েছে। আরও রয়েছে সুইমিংপুল আর ছোট্ট পুকুর। মাঠের মাঝখানে একটি গাছের ওপর ঘর তৈরি করা আছে, যা আবাক করবে আপনাকে! হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত প্রায় অনেক নাটক সিনেমার অন্যতম শুটিংস্পট এটি।

বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক
বিস্তৃত শালবনের ভেতর প্রাচীর দিয়ে তৈরি এই পার্ক। ভেতরে আছে সরু পিচঢালা সড়ক। দুই দিকে নানা প্রজাতির গাছ দিয়ে বিস্তৃত। থাইল্যান্ডের সাফারি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এশিয়ার সর্ববৃহত্তম বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক বাংলাদেশের গাজীপুরে নির্মিত হয়েছে। ২ ইঞ্চি কাচের দেয়াল দিয়ে ঘেরা আছে হিংস্র বন্য পশুদের জায়গা। তাই আপনি তাদের কাছ থেকে দেখতে পারলেও ভয়ের কোনো কারণ নেই। তাছাড়া খুব সুন্দর ব্যবস্থায় তৈরি করা হয়েছে এটি।

উয়ারী-বটেশ্বর
ইতিহাস আপানার পছন্দ! আগ্রহ আছে প্রতœতাত্ত্বিক বিষয়ে তবে ঘুরে আসতে পারেন উয়ারী-বটেশ্বর থেকে। নরসিংদী জেলার বেলাব উপজেলা থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার পশ্চিমে অবিস্থত উয়ারী এবং বটেশ্বর গ্রাম। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন জনপদ। অসম রাজার গড় নামে এটি সমাধিক পরিচিত। এখানে প্রায় তিন হাজার বছর আগের প্রাচীন শিলালিপি মূদ্রাসহ সভ্যতার অনেক নিদর্শন পাওয়া গেছে। এখানে পর্যটকদের জন্য রেস্ট হাউস রয়েছে। 

গোলাপ গ্রাম
ছোট ছোট দ্বীপ সবুজে ঢাকা। চারপাশে নীলাভ জলের ঢেউ। পানকৌড়ির ডুব-সাঁতার, বকের একপায়ে দাঁড়িয়ে থাকা। ছোট ছোট নৌকায় মাছ ধরার দৃশ্য আপনাকে নিয়ে যাবে নৈসর্গিক এক ভুবনে। নদীর চারপাশে সবুজে ঢাকা গ্রামগুলো দেখতে মনে হবে ছবির মতো। যেতে পারেন নদীর ওপারে গ্রামে। বড় বটবৃক্ষের নিচে ছোট ছোট দোকান, নদীর মাছ বিক্রি করা, মিষ্টির দোকান, গ্রাম্য খাবারের হোটেল, পাশেই শাক-সবজির মাচা। তার পাশেই বিস্তীর্ণ গোলাপের বাগান। কীভাবে গোলাপের চাষ করা হয় তা নিজ চোখে দেখতে পাবেন। গোলাপের চারা তৈরি, গোলাপ ক্ষেত পরিচর্যা, গোলাপ তোলা দেখতে দেখতে আপনার মন হারিয়ে যাবে ফুলের রাজ্যে।

(ঢাকাটাইমস/২৯ডিসেম্বর/এজেড)