রাবেয়া-রোকাইয়াকে হাঙ্গেরি পাঠানো হচ্ছে
পাবনায় জোড়া মাথা নিয়ে জন্ম গ্রহণ করা রাবেয়া-রোকাইয়াকে চিকিৎসার জন্য হাঙ্গেরি পাঠানো হচ্ছে। সেখান থেকে ফেরার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে তাদের অস্ত্রোপচার করা হবে।
শুক্রবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসতাপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকরা।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম রোকেয়া-রোকাইয়ার পরিবারের হাতে চিকিৎসার অর্থ তুলে দেন। এসময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী শিশু দুটির সুস্বাস্থ্য কামনা করেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক সামন্তলাল সেন জানান, বাংলাদেশ ও হাঙ্গেরির যৌথ উদ্যোগে রাবেয়া-রোকাইয়ার চিকিৎসা হবে। বাংলাদেশ, হাঙ্গেরি ও জার্মানি ২০ জন সদস্য পাঁচটি দলে বিভক্ত হয়ে শিশু দুটির চিকিৎসায় কাজ করবেন।
হাঙ্গেরিতে রাবেয়া-রোকাইয়াকে তিন থেকে চার মাস থাকতে হতে পারে বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। সেখানে ‘ফর বাংলাদেশ’ নামে হাঙ্গেরিভিত্তিক একটি বাংলাদেশি সংগঠন শিশু দুটির দেখাশোনার দায়িত্বে থাকবে।
এরমধ্যে বাংলাদেশেই শিশু দুটির মস্তিষ্কের রক্তনালিতে দুইবার অস্ত্রোপচার করা হয়। হাঙ্গেরি থেকে ফেরার পর দেশে শেখ হাসিনা ন্যাশনাল বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে তাদের মূল অস্ত্রোপচার করা হবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
চিকিৎসকরা জানান, রাবেয়া-রোকাইয়ার মস্তিষ্ক আলাদা। কিন্তু ওদের পুরোপুরি আলাদা করার জন্য কোষ বাড়াতে হবে। এছাড়া আরও কিছু চিকিৎসার জন্য ওদের হাঙ্গেরি নেওয়া হচ্ছে।
চিকিৎসকদের মতে, পৃথিবীতে এ ধরনের চিকিৎসায় সফলতার হার ২০ শতাংশেরও কম।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম, ডা. হাবিবে মিল্লাত এমপি, ফর বাংলাদেশের হাসনাত মিয়া এবং বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকেরা।
এর আগে ২০১৬ সালের ১৬ জুন জোড়া মাথা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে রাবেয়া-রোকাইয়া। ২০১৭ সালে স্থানীয় সাংসদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে শিশু দুটির খবর পৌঁছায়। এরপর তাদের চিকিৎসার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
২০১৭ সাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে তাদের চিকিৎসা চলছিল। উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলের ডাক্তারদের সঙ্গে যুক্ত করা হয় জার্মানি ও হাঙ্গেরির প্রতিনিধিদল।
পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের আটলঙ্কা গ্রামের স্কুলশিক্ষক রফিকুল ইসলাম ও তাসলিমা দম্পতির সন্তান এই দুই মেয়ে শিশু। শিশু দুটির মা-বাব প্রধানমন্ত্রী সহায়তার জন্য তাকে বিশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। এছাড়া দেশবাসীর কাছে দুই সন্তানের জন্য দোয়া চেয়েছেন।
(ঢাকাটাইমস/০৪জানুয়ারি/কারই/জেবি)