আশরাফের এলাকায় বিএনপিও শোকাহত

আমিনুল হক সাদী, কিশোরগঞ্জ
 | প্রকাশিত : ০৪ জানুয়ারি ২০১৯, ২৩:০৫

কিশোরগঞ্জে যে নির্বাচনী এলাকায় ভোটে লড়তেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, সেখানে দলমত-নির্বিশেষে তিনি গ্রহণযোগ্য, জনপ্রিয়। তার মৃত্যুতে শোক জানাচ্ছেন স্থানীয় বিএনপির নেতারাও।

১৯৯১ সালে আশরাফ সংসদ সদস্য হওয়ার পর রাজনীতির ধারাই পাল্টে দেন এলাকায়। বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা তার কারণে হয়রানির শিকার হয়েছেন, এমন কোনো ঘটনা নেই।

কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মতো রাজনীতিবিদ থাকার কারণেই কিশোরগঞ্জের রাজনৈতিক অঙ্গনে শান্ত পরিবেশ ছিল। সৎ, পরিচ্ছন্ন এই রাজনীতিবিদের মৃত্যুতে আমরা শোকাহত।’

জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইসরাঈল মিয়া বলেন, ‘কিশোরগঞ্জের কৃতী সন্তান সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে আমরা গভীর শোকাহত। তিনি অন্য রাজনীতিকদের চেয়ে আলাদা।’

আশরাফের বাবা সৈয়দ নজরুল ইসলামের জন্য কিশোরগঞ্জবাসীর গর্বের শেষ নেই। মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনায় প্রবাসী সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ছিলেন তিনি। ১৯৯৬ সালে আশরাফ এলাকায় ফিরে যখন নৌকা নিয়ে ভোটে দাঁড়ান, তখন বাবার পরিচয়ই আশরাফের জয়ে ভূমিকা রেখেছিল। তবে তিনি পরে স্বমহিমায় উদ্ভাসিত হন। রাজনীতিতে ভিন্ন ধারা নিয়ে এসে জয় করেন বিরোধীদের মনও।

পরের নির্বাচনগুলোতে বিরোধীপক্ষও আশরাফকে আক্রমণ করে বক্তব্য রাখেনি। তার মৃত্যুর পর প্রতিক্রিয়াও হয়েছে দলমত-নির্বিশেষে।

বৃহস্পতিবার রাতে মৃত্যুর সংবাদটি জানাজানি হওয়ার পর কিশোরগঞ্জে দলীয় নেতাকর্মীরা ছুটে যান জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামরুল আহসান শাহজাহান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম কিশোরগঞ্জবাসীর এক অনুভূতির নাম। তার মতো একজন সৎ, ভদ্র ও বিনয়ী মানুষ হিসেবে ক্লিন ইমেজের এমন রাজনীতিবিদ বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিরল।’

১৯৯৬ সালের ১২ জুনের নির্বাচনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর সৈয়দ আশরাফ বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালের নির্বাচনে দলের চরম ভরাডুবির সময়েও সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এই আসন থেকে টানা দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের পর দলীয় সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক হওয়া আশরাফ ২০১৬ সালে ইচ্ছা করেই তৃতীয় মেয়াদে আর নির্বাচিত হতে চাননি। অতিকথন ও ক্ষমতার দম্ভ সৈয়দ আশরাফকে স্পর্শ করতে পারেনি। একজন উদার পশ্চিমা গণতান্ত্রিক রাজনীতিবিদের মতোই তিনি নীরবে নিভৃতে পথ হেঁটেছেন। তদবিরবাজ, সুবিধাবাদীরা যেমন তার কাছে ভিড়তে পারেনি, তেমনি দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, ক্ষমতার অপব্যবহারে ছিটেফোঁটাও তার গায়ে লাগেনি।

ফুসফুসে ক্যানসারের কারণে থাইল্যান্ডে চিকিৎসাধীন আশরাফ আর ফিরতে নাও পারেন, এটা জেনেও তাকে নৌকা দেওয়া হয় কিশোরগঞ্জ-১ আসনে। বিপুল ভোটে তাকে জিতিয়ে এলাকাবাসী জানালেন, তাকে কতটা ভালোবাসেন তারা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :