ও কি গাড়িয়াল ভাই

প্রকাশ | ০৫ জানুয়ারি ২০১৯, ০৯:৪০

রাহেবুল ইসলাম টিটুল, ঢাকাটাইস

একবিংশ শতাব্দী এই যান্ত্রিক যুগে মাঠে মাঠে পাওয়ার টিলার ও ট্রাক্টরে জমি চাষবাস হচ্ছে নিয়মিত। হাল চাষের গরু আর দেখা যায় না তেমন। সব কাজে মানুষ যন্ত্রনির্ভর হয়ে উঠলেও লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ তিস্তার চরাঞ্চলে পণ্য পরিবহণে এখনো মহিষই ভরসা।

ওই সব এলাকা গেলে দূর থেকে কানে ভেসে আসবে মহিষের গাড়ির চাকার ক্যা..ক্যু টানা শব্দ। যান্ত্রিক যানের পাশাপাশি কৃষকের উৎপদিত বিভিন্ন পণ্য নিয়ে দুলকি চালে যাচ্ছে মহিষের গাড়ি। তিস্তার বুক চিরে উঁচু-নিচু কাঁচাপাকা রাস্তায়ও দেখা মিলবে ‘ওকি ও গাড়িয়াল ভাই’দের। 

কৃষকের মাঠ থেকে কাটা ধান মহিষের গাড়িতে করে বাড়ির আঙিনায় আনার কাজ চলে আসছে আদ্যিকাল থেকে। এখনো তিস্তার সব এলাকায় দেখা যায় এসব গাড়িতে হাটবাজারে বিক্রির জন্য ধান নিয়ে আসছেন কৃষকরা। ধান, ভুট্টা, রসুন, পিঁয়াজ, তরমুজ ও ক্ষিরাই মাঠ থেকে মোকামে পৌঁছানো হয় মহিষের গাড়িতে করে।
আগে মহিষের গড়িতে নাইয়ুর যেতেন গ্রামের বধূরা। বিয়েশাদির বরযাত্রাও হতো মহিষের গাড়িতে। এখন এই রীতি আর সচরাচর চোখে পড়ে না।

তবে চাষবাস ও পরিবহণসহ নানা কাজে বিল অঞ্চলের প্রায় গ্রামেই রয়েছে মহিষের ব্যবহার। হালচাষে যান্ত্রিক ট্র্াক্টর ব্যবহার করা হলেও জমির মাটি সমান করে তা বীজ কিংবা চারা রোপণযোগ্য করতে মহিষের বিকল্প নেই। ইরি-বোরো মৌসুমে চাষ করা কাদামাটি সমান করতে মহিষের ব্যবহারই উপযুক্ত বলে কৃষকরা জানান। 

হালচাষে মহিষ ভাড়া দিয়ে আয় করছেন অনেকে। প্রতি বিঘা জমির মাটি সমান করতে মহিষের মালিকরা পারিশ্রমিক পান ৬০ থেকে ১০০ টাকা। এ কাজে এক জোড়া মহিষের মালিক প্রতিদিন আয় করেন দুই হাজার টাকা পর্যন্ত।

কৃষি কর্মকর্তারা জানান, মহিষের ব্যবহারে মাটি সমান করার বিকল্প এখনো কৃষকের নাগালে আসেনি। এ ক্ষেত্রে মহিষের বিকল্প মহিষই।