যে কারণে এখনো মন্ত্রী মায়া-জয়

প্রকাশ | ০৬ জানুয়ারি ২০১৯, ০৮:৪১

হাবিবুল্লাহ ফাহাদ

বর্তমান সরকারের শেষ দিবসে যারা মন্ত্রী আছেন, তাদের মধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া এবং যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়ই কেবল সংসদ সদস্য নন। তবে তাদের টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীও বলা যাবে না।

এরই মধ্যে একাদশ সংসদের সদস্যরা শপথ নিয়েছেন। ফলে দশম সংসদের নির্বাচিতরা আর সংসদ সদস্য নেই।

সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ ঢাকা টাইমসকে বলেন, সংবিধান অনুযায়ী নতুন মন্ত্রিসভা দায়িত্ব না নেওয়া পর্যন্ত আগের মন্ত্রিসভা দায়িত্ব পালন করে যাবে। ফলে এখন তারা সংসদ সদস্য আছেন কি নেই, তারা টেকনোক্র্যাট কি না, এই প্রশ্নের সুযোগ নেই।

সাবেক আইনমন্ত্রী বলেন, ‘দশম জাতীয় সংসদ ভেঙে গেলেও এর প্রভাব বর্তমান মন্ত্রিসভায় পড়বে না। সংবিধানে এ ব্যাপারে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়া আছে।’

“সংবিধানের ৫৮ ধারায় বলা আছে, সংসদ ভাংগিয়া যাওয়া অবস্থায় যেকোন সময়ে কোন মন্ত্রীকে স্বীয় পদে বহাল থাকিতে এই অনুচ্ছেদের (১) দফার (ক), (খ) ও (ঘ) উপ-দফার কোন কিছুই অযোগ্য করিবে না।’

“প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করিলে বা স্বীয় পদে বহাল না থাকিলে মন্ত্রীদের প্রত্যেকে পদত্যাগ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে; তবে এই পরিচ্ছেদের বিধানাবলী-সাপেক্ষে তাঁহাদের উত্তরাধিকারীগণ কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত তাঁহারা স্ব স্ব পদে বহাল থাকিবেন। এই অনুচ্ছেদে ‘মন্ত্রী’ বলিতে প্রতিমন্ত্রী ও উপ-মন্ত্রী অন্তর্ভুক্ত।”

গত পাঁচ বছর দায়িত্ব পালন করে যাওয়া সংসদ সদস্য মন্ত্রীদের মধ্যে এবার কেবল দুজন পাননি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন। তারা হলেন মায়া ও জয়।

১৯৯৬ সালে চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর) আসন থেকে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে ১৯৯৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী হন মায়া। পরে ১৯৯৮ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।

২০১৪ সালে একই আসন থেকে দ্বিতীয়বার সংসদ সদস্য হওয়ার পর পান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। কিন্তু একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দল তাকে মনোনয়ন দেয়নি।

কী কারণে মনোনয়ন দৌড়ে টিকতে পারেননি মায়া, তা নিয়ে আছে নানা আলোচনা। দলের একটি সূত্র বলছে, ছেলে ও মেয়ের জামাতার বিতর্কিত কাজের খেসারত দিতে হয়েছে তাকে।

জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আরিফ খান জয় নতুন করে আলোচনায় আসেন ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার মধ্য দিয়ে। নেত্রকোনা-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর মন্ত্রিসভাতেও ডাক পড়ে তার। হন যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী।

ফুটবলার-জীবনে জয়ের অর্জন থাকলেও সংসদীয় রাজনীতিতে নিজেকে ওই অর্থে মেলে ধরতে পারেননি মাঠের প্রতিরক্ষা ভাগে খেলা এই খেলোয়াড়।

আওয়ামী লীগের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রে জানা গেছে, যে চিন্তা করে আওয়ামী লীগ তাকে সংসদীয় রাজনীতিতে এনেছিল, তা পুরোপুরি পূরণ করতে পারেননি জয়। খেলার মাঠে প্রকাশ্যে অস্ত্র বের করে অন্যকে শাসানো, এলাকায় প্রভাব-প্রতিপত্তি বিস্তার, নিয়োগ-বাণিজ্যসহ নানা কারণে বিতর্ক ছড়িয়েছেন তিনি ও তার ঘনিষ্ঠরা। মনোনয়নবঞ্চিত হওয়ার পেছনে এই কারণগুলোকেই বড় করে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।