বিএনপিতে আসছে বিভক্তি!

প্রকাশ | ০৯ জানুয়ারি ২০১৯, ১৭:১৬

মহিবুল ইজদানী খান ডাবলু

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার চতুর্থবারের মতো দেশ পরিচালনার ম্যান্ডেট পেয়েছে। তবে বাংলাদেশের নির্বাচনী সংস্কৃতিতে যারা পরাজিত হয় তারা সবসময় পরাজয় স্বীকার না করে নির্বাচন বয়কট করে। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন তার কোনো ব্যতিক্রম নয়। এই নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টের কিছু প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেছেন। ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেন ইতিমধ্যেই নির্বাচনের ফল বর্জন করে নতুন নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। এ সময় নির্বাচনে বিজয়ী এমপি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

এ ধরনের পরিস্থিতিতে দলগতভাবে বিএনপি কী করতে পারে? পর্যবেক্ষক মহলের মতে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলসহ অন্যান্য যারা নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন তারা সম্ভবত সংসদে অবস্থান করতে চাইবেন। বিএনপি নির্বাচন বয়কট করলে জাতীয় সংসদে দলটির কোনো প্রতিনিধিত্ব থাকছে না। আসনগুলোতে পুনর্নির্বাচন হলে অন্য দলের হাতে চলে যাবে।

জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের ভূমিকায় আবারও আসছে এরশাদের জাতীয় পার্টি। এরশাদ নিজেই হচ্ছেন বিরোধীদলীয় নেতা। অন্যদিকে মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে তৃতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে বিএনপি সংসদে অবস্থান করবে। এখন বিএনপি সংসদে না থেকে নির্বাচন বয়কট করলে দলটির অবস্থা কী হতে পারে?

অন্যদিকে দলের ভেতরে চলছে নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব। বিএনপিকে এমনি অনেক সমস্যার মোকাবেলা করতে হবে এখন। লন্ডন থেকে তারেক রহমানের নির্দেশের ওপর নির্ভর করছে বিএনপির ভবিষ্যৎ। অনেকের মতে, বিএনপি যদি এখন নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়, তাহলে দলে ভাঙন ধরার আশঙ্কা রয়েছে। যারা জয়ী হয়েছেন, তারা সংসদে বিএনপির প্রতিনিধি হিসেবে অবস্থান করতে চাইবেন। আর যারা পরাজিত হয়েছেন তারা চাইবেন বিএনপি নির্বাচন বয়কট করুক। এখন নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বিএনপির ভূমিকার ওপর নির্ভর করবে দলটির ঐক্য। এ ধরনের পরিস্থিতিতে লন্ডন থেকে প্রেরিত তারেক রহমানের নির্দেশ কতটুকু কার্যকর হবে বলা কঠিন।

এমন অবস্থায় বিএনপি নির্বাচনের ফলাফল বর্জন করলে সংসদে অবস্থান করতে পারে খালেদা-তারেকবিহীন বিএনপি। আর যদি বর্জন না করে তাহলে পরাজিতরা অবস্থান নেবে বিপক্ষে। বিএনপির সামনে এখন এক কঠিন পরীক্ষাÑ নির্বাচন বর্জন না গ্রহণ?

দুই পথেই আছে সমস্যা। হয়তো এবার আর বিএনপিকে টিকিয়ে রাখা যাবে না। ইতিমধ্যে দলের ভেতরে দ্বন্দ্বের খবর মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। দলের নেতৃত্বে একে-অপরের প্রতি সন্দিহান। বিএনপি এবার যাবে কোন পথে?

পর্যবেক্ষক মহলের মতে, শেষ পর্যন্ত বিএনপিতে আসছে দ্বিধাবিভক্তি। এ ছাড়া দলটির আর কোনো গতি নেই। সময় বলবে বিএনপির এই ভাঙনে কারা আসছেন নেতৃত্বে? কারা হচ্ছেন তারেকের নির্দেশে বহিষ্কার? তাহলে বিএনপির কি এখন শেষ ঘণ্টা!

লেখক: সুইডিশ লেফট পার্টি (ভেনস্টার পার্টি) সেন্ট্রাল কমিটির মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য