শতকোটি টাকার সম্পদ

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আবজাল বরখাস্ত

প্রকাশ | ১৪ জানুয়ারি ২০১৯, ১৫:০৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

অবৈধ সম্পদসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবজাল হোসেন বরখাস্ত করেছে মন্ত্রণালয়। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে জানাতেও বলা হয়েছে।

আবজলের দেশে বিদেশে সম্পদের তথ্য নিয়ে তোলপারের মধ্যে সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের এক আদেশে এই নির্দেশ দেওয়া হয়।

উপসচিব শাহিনা খাতুন সাক্ষরিত প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় এবং সংবাদ মাধ্যমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রেষণ/সংযু্ক্তিতে কর্মরত হিসার রক্ষণ কর্মকর্তা আবজাল হোসেন সম্পর্কে বিভিন্ন অনিয়ম ও দূনীতির অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। সংবাদ প্রতিবেদনে তার ঢাকায় এবং বাংলাদেশের বাহিরে একাধিক বাড়ি, গাড়ি ও প্লট থাকার অভিযোগ রয়েছে। তার অর্থ সম্পদ জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসামাঞ্জস্যপূর্ণ।

গত ১০ জানুয়ারি আবজলকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। এর আগেই গণমাধ্যমে তার সম্পর্কে নানা তথ্য আসে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়,  জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ সম্পদ অর্জন ও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে দূর্নীতির অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ায় তাকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার ২০১৮ এর ১২ বিধি মোতাবেক সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করতে অনুরোধ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ পূর্বক স্বাস্থ্যসেবা বিভাগকে অবহিত করতেও বলা হয়েছে।

উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর সড়কে পাশাপাশি দুটি ছয়তলা বাড়ি (নম্বর ৪৭ ও ৬২) রয়েছে আবজলের। আরও একটি বহুতল বাড়ির নির্মাণ চলছে পাশের ৪৯ নম্বর প্লটে। কাছাকাছি আরও একটি বহুতল বাড়ি আছে, যার নম্বর ৬৬।

এই সেক্টরের ১৬ নম্বর সড়কের ১৬ নম্বরের ছয় তলা বাড়িটিও আবজল ও তার স্ত্রী রুবিনা খানমের।

রুবিনা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন শাখায় স্টেনোগ্রাফার হিসেবে চাকরি করতেন। তবে বিপুল বিত্তবৈভব হওয়ার পর চাকরি ছেড়ে ব্যবসা করছেন। প্রচার আছে পোশাকশিল্প গড়েছেন।

দুদক বলছে, তাদের আরও সম্পদ আছে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা, ফরিদপুর শহরে এমনকি অস্ট্রেলিয়ায়। আর এর সব তথ্য-প্রমাণও আছে তাদের হাতে।

তবে বাড়ির তত্ত্বাবধানে যাদের রেখেছেন এই দম্পতি, তাদের বেশির ভাগের কাছে নিজেদের পরিচয় গোপন করেছেন তারা। কেবল একটি বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক জানাতে পেরেছেন বাড়ির মালিক রুবিনা। তবে তিনি পোশাক ব্যবসায়ী।

দুদকের সূত্র জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে আবজাল জানিয়েছেন, স্ত্রীর নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও লাইসেন্স তৈরি করে টেন্ডার-বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েন তিনি। প্রতিবছরই বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের জন্য শতকোটি টাকার কেনাকাটা হয়। হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হওয়ায় তার পক্ষে টেন্ডার-বাণিজ্য করা কঠিন কিছু ছিল না। ২০ বছর ধরে এই কাজ করে বিপুল সম্পদ গড়েছেন তিনি। যে তথ্য আছে তাতে এই সম্পদ ১০০ কোটি টাকারও বেশি।

আবজাল হোসেন গত এক বছরে অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে ২৮ বারেরও বেশি সময় সফর করেছেন। সফরের যে ব্যয় হয়েছে, সেই অর্থ কোথায় পেয়েছেন তা নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরেও রয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা। এরই মধ্যে আবজাল দম্পতির বিদেশ যাত্রা ঠেকাতে দেওয়া হয়েছে নিষেধাজ্ঞা।

(ঢাকাটাইমস/১৪জানুয়ারি/ডব্লিউবি)