কর্মচারী করেন হাসপাতালের পরিচালকের কাজ

জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
 | প্রকাশিত : ১৫ জানুয়ারি ২০১৯, ১২:০০

দরপত্র কাটাছেঁড়া করে তারিখ বদল, পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ দিতে জালিয়াতি, ভুয়া ভাউচার বানিয়ে অর্থ আত্মসাৎÑএসব অভিযোগ উঠেছে সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক হীরক রঞ্জন গোস্বামীর বিরুদ্ধে। এই তথ্য জানিয়ে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কাছে লিখিত আবেদন করেছেন একজন সরবরাহকারী।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, হীরক রঞ্জনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দরপত্র ও হাসপাতালের মালামাল ক্রয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। মনোহারিসহ বিভিন্ন পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী জসিম উদ্দিন ৯ জানুয়ারি জেলা প্রশাসকের কাছে তা তুলে ধরেন।

এই আবেদন ও অন্যান্য সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, প্রধান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক হাসপাতালের দরপত্র নিয়ে জালিয়াতি করেছেন। পথ্য, মনোহারিসহ বিভিন্ন পণ্য সরবরাহ ও কাপড় ধোয়ার ব্যয়ের ভুয়া ভাউচার তৈরি করে মোটা অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।

এদিকে একটি দরপত্রের শিডিউলে দেখা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মনিসর চৌধুরী গত বছরের ২৪ অক্টোবর স্বাক্ষর করেছেন। কিন্তু এই সিডিউল ঠিকাদারদের দেওয়ার সময় হীরক রঞ্জন গোস্বামী ‘২০১৮-২০১৯’ অর্থবছর কেটে ‘২০১৭-২০১৮’ লিখে দেন। এ নিয়ে ঠিকাদারদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তাদের

অভিযোগ, দরপত্র বানচাল করার জন্য হীরক রঞ্জন এই কাজ করেছেন। এভাবে তিনি নিজে কোনো সুবিধা ভোগ করবেন।

দরপত্র কাটাছেঁড়ার মাধ্যমে অবৈধ সুবিধা আদায়ের আরও অভিযোগ রয়েছে হীরক রঞ্জনের বিরুদ্ধে। গত বছরের ৩০ অক্টোবর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের (প্রশাসন) কাছে মেসার্স নিহাব এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী দেলোয়ার হোসেন একটি অভিযোগপত্র দেন। সেখানে বলা হয়, গত বছরের ২৯ অক্টোবরের মনোহারি ও বিবিধ মালামাল দরপত্র বিজ্ঞপ্তি অনুসরণ করে দেলোয়ার তা দাখিল করেন। এতে সর্বনিম্ন দরদাতা নির্বাচিত হয় ইতি লন্ড্রি, যার স্বত্বাধিকারী ঝান্টু বৈদ্য। এদের জমা দেওয়া দরপত্র হীরক রঞ্জন লিখে জমা দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এবার দরপত্র-প্রক্রিয়ায় জড়িত অন্য ঠিকাদাররা বঞ্চনার শিকার হয়েছেন। কেননা দরপত্রদাতা প্রতিষ্ঠানের একজন একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সরাসরি সহায়তা করেছে।

এদিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মনোহারি ও বিবিধ মালামাল সরবরাহের শিডিউলে দেখা যায় ক্রমিক নম্বর ৩, ৪, ১২, ১৪, ১৫, ২২, ২৩, ২৪, ২৫, ২৬, ২৭, ২৯, ৩২, ৩৩, ৩৫, ৩৬Ñএই ১৬টি পণ্য কোন প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া হবে, তার কোনো উল্লেখ নেই। এগুলো না কিনেই ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে হীরক রঞ্জন গোস্বামী বিল উঠিয়ে নেন বলে অভিযোগ রয়েছে। দরপত্র ও কেনাকাটার অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে হীরক রঞ্জন গোস্বামী ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘দরপত্রে কোনো ওভার রাইটিং করা হয়নি।’ কেনাকাটার অনিয়ম নিয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো কথা বলেননি।

হীরক রঞ্জনের দরপত্র-জালিয়াতির বিষয়টি স্বীকার করে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মনিসর চৌধুরী ঢাকা টাইমসকে বলেন, দরপত্রের বিষয়ে মিডিয়ায় যা প্রকাশিত হচ্ছে, তা সত্য। ওভার রাইটিং করে দরপত্রের তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে কি না, এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হবে। হীরক রঞ্জনের বিরুদ্ধে ওঠা অন্যান্য অভিযোগও তদন্ত করার কথা বলেন তিনি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

স্বাস্থ্য বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

স্বাস্থ্য এর সর্বশেষ

গরমে স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি

ঔষধি গাছ থেকে তিন শতাধিক ওষুধ তৈরি হচ্ছে ইরানে

কণ্ঠের সব চিকিৎসা দেশেই রয়েছে, বিদেশে যাওয়ার প্রয়োজন নেই: বিএসএমএমইউ উপাচার্য 

এপ্রিল থেকেই ইনফ্লুয়েঞ্জা মৌসুম শুরু, মার্চের মধ্যে টিকা নেওয়ার সুপারিশ গবেষকদের

স্বাস্থ্য খাতে নতুন অশনি সংকেত অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ভাতা বাড়লো ইন্টার্ন চিকিৎসকদের

বিএসএমএমইউ বহির্বিভাগ ৪ দিন বন্ধ, খোলা থাকবে ইনডোর ও জরুরি বিভাগ

তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজ করতে বললেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী

বিএসএমএমইউতে বিশ্বের সর্বোৎকৃষ্ট মানের চিকিৎসা নিশ্চিত করা হবে: ভিসি দীন মোহাম্মদ

ঈদের ছুটিতে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে যেসব নির্দেশনা মানতে হবে হাসপাতালগুলোকে

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :