দুই শিক্ষার্থী ধর্ষণ মামলায় সাফাতের জামিন বাতিলের আবেদন
বহুল আলোচিত বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদের জামিন বাতিলের আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।
মঙ্গলবার ঢাকার ৭ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এ আবেদন জানানো হয়। অন্যদিকে জামিনের আবেদন করেছেন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা সাফাতের বন্ধু আসামি নাঈম আশরাফ ওরফে এইচএম হালিম।
ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. খাদেম উল কায়েস উভয়পক্ষের শুনানি শেষে নথি পর্যালোচনায় দুটি আবেদনের বিষয়েই পরে আদেশ দিবেন বলে জানিয়েছেন। অন্যদিকে মামলার একজন ভিকটিম ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিতে এলেও কারাগারে থাকা আসামি নাঈমকে কারা কর্তৃপক্ষ হাজির না করায় সাক্ষ্যগ্রহণ পিছিয়ে আগামী ২২ জানুয়ারি পুনর্নির্ধারণ করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
আসামি নাঈমের পক্ষে জামিনের আবেদন ও শুনানি করেন আইনজীবী এমএবিএম খায়রুল ইসলাম লিটন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর পিপি আব্দুল্লাহ আবু ও বিশেষ পিপি মো. লিয়াকত আলী এবং ভিকটিম পক্ষে আইনজীবী ফারুক আহমেদ জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা সাফাতের জামিন বাতিলের পক্ষে ও সাফাতের আইনজীবী মো. হেমায়েত উদ্দিন মোল্লা তার জামিন স্থায়ীর আবেদন করেন। গত বছরের ২৯ নভেম্বর সাফাতের জামিন মঞ্জুর করেন ট্রাইব্যুনাল। অন্য তিন আসামি সাফাতের দেহরক্ষী রহমত আলী ও গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন এবং বন্ধু সাদমান সাকিব এর আগে হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন।
গ্রেপ্তারের পর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন পাঁচ আসামিই।
২০১৭ সালের ১৩ জুলাই আসামিদের অব্যাহতির আবেদন নামঞ্জুর করে অভিযোগ (চার্জ) গঠনের মাধ্যমে মামলাটির বিচার শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল।
একই বছরের ৭ জুন তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের (ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার) পরিদর্শক ইসমত আরা এমি আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন।চার্জশিটে আসামি সাফাত আহমেদ ও নাঈম আশরাফ ওরফে এইচএম হালিমের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারায় সরাসরি ধর্ষণ এবং অন্য তিন আসামি সাদমান সাকিব, রহমত আলী ও বিল্লাল হোসনের বিরুদ্ধে ওই আইনের ৩০ ধারায় ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ করা হয়েছে। ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়ে অস্ত্রের মুখে ঢাকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই দুই ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে ৬ মে বনানী থানায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন।
মামলায় বলা হয়, আসামিদের মধ্যে সাফাত ও নাঈম দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং তারা ওই দুই ধর্ষিতা ছাত্রীর বন্ধু। ২৮ মার্চ ঘটনার দিন আসামি সাফাতের জন্মদিনের অনুষ্ঠানের যান ওই দুই ছাত্রী। ওইদিন রাত ৯টা থেকে পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত আসামিরা তাদের আটকে রেখে অস্ত্র দেখিয়ে ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। জোর করে একটি কক্ষে নিয়ে যান আসামিরা। আসামি সাফাত ও নাঈম একাধিকবার তাদের ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের সময় আসামি সাফাত গাড়িচালক বিল্লালকে দিয়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করেন। পরে বাসায় দেহরক্ষী পাঠিয়ে তাদের ভয়ভীতি দেখান। লোকলজ্জার ভয় ও মানসিক অসুস্থতা কাটিয়ে উঠে পরে আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে আলোচনা করে মামলাটি করেন ধর্ষিতারা।
(ঢাকাটাইমস/১৫জানুয়ারি/জেডআর/এআর)