তে-ভাগা আন্দোলনের অগ্রপথিক অমল সেনের মৃত্যুবার্ষিকী কাল

প্রকাশ | ১৬ জানুয়ারি ২০১৯, ২২:৪৪

নড়াইল প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

তে-ভাগা আন্দোলনের অগ্রপথিক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কমরেড অমল সেনের ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী বৃহস্পতিবার (১৭ জানুয়ারি)। ২০০৩ সালের ১৭ জানুয়ারি বার্ধক্যজনিত কারণে ঢাকা কমিউনিটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। অমল সেনের কর্মস্থল যশোরের বাঘারপাড়ার বাঁকড়ী বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় চত্বরে তাকে সমাধিস্থ করা হয়।

অমল সেন স্মৃতি রক্ষা কমিটির সভাপতি ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য কমরেড ইকবাল কবির জাহিদ জানান, অমল সেনের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাঁকড়ী গ্রামে তার (অমল সেন) সমাধি চত্বরে দুই দিনব্যাপী (বৃহস্পতি ও শুক্রবার) স্মরণমেলার আয়োজন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে অমল সেনের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন দলীয় নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন। আলোচনা সভা ছাড়াও মেলায় কৃষক সমাবেশ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, চিত্রাংকন ও বিতর্ক  প্রতিযোগিতা, গ্রামীণ মেলাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

অমল সেন ১৯১৪ সালের ১৯ জুলাই নড়াইলের আউড়িয়া গ্রামে মামাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। আফরা গ্রামের (নড়াইল সদর) জমিদার বংশের সন্তান হয়েও খুব সাদাসিধে জীবনযাপন করতেন তিনি। শোষিত-নিপীড়িত কৃষক সমাজের অধিকার আদায়ে সচেষ্ট ছিলেন। কৃষকদের অধিকার আদায়ে তে-ভাগা আন্দোলনে অগ্রপথিকের ভূমিকা পালন করেন তিনি।

নড়াইলের আব্দুল হাই ডিগ্রি কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মলয় নন্দী জানান, নবম শ্রেণিতে পড়ার সময়ে বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক সংগঠন ‘অনুশীলন’ গ্রুপে যোগ দেন অমল সেন। খুলনার বিএল কলেজে গণিতে পড়ার সময় মার্কসবাদী আদর্শে উদ্বুদ্ধ হন এবং নড়াইলে ফিরে এসে কৃষক আন্দোলন গড়ে তোলেন। বাবার জমিদারি প্রথা কখনো আকৃষ্ট করতে পারেনি অমল সেনকে। তিনি মনে-প্রাণে বিশ্বাস করতেন-মানবজীবনের সর্বোচ্চ প্রাপ্তি হতে পারে মানবকল্যাণে আত্মনিয়োগ করা। শ্রমজীবী মানুষের শোষণ মুক্তির লড়াইয়ে অংশগ্রহণ করা।

বাঁকড়ী গ্রামের বিভিন্ন পেশার মানুষ জানান, অমল স্যার শিক্ষকতা করেছেন বাঁকড়ী বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। স্কুলেই বেশির ভাগ সময় কাটাতেন তিনি। অবসরে একটি গাভী লালন-পালন করতেন। অমল সেন সব সময় কৃষকের ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রামসহ শোষিত-বঞ্চিত মানুষের পক্ষে কাজ করে গেছেন।

জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম জানান, আন্দোলন-সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করায় পাকিস্তান শাসনামলে ১৯ বছর অমল সেনকে কারাগারে কাটাতে হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সময়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি।

এদিকে, কৃষকের কষ্টার্জিত ফসলের তিন ভাগের দুই ভাগ বর্গাচাষির, আর একভাগ জমি মালিকের-এ দাবিতে কৃষকদের সংগঠিত করে আন্দোলন গড়ে তোলেন অমল সেন। এক সময় আন্দোলন সফল হলো। দেশের বর্গাচাষিরা এখনও সেই সুবিধা (তে-ভাগা) পাচ্ছেন। এটিই ‘তে-ভাগা আন্দোলন’ নামে পরিচিত।

(ঢাকাটাইমস/১৬জানুয়ারি/এলএ)