সেই রাতের বর্ণনা দিলেন অহনা

প্রকাশ | ১৭ জানুয়ারি ২০১৯, ১২:০৫

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস

নেশাগ্রস্ত এক ট্রাকচালকের অমানবিক কাণ্ডে গুরুতর আহত অভিনেত্রী অহনাকে উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতাল থেকে গত মঙ্গলবার রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার রক্তে জীবানু ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বরত চিকিৎসকরা। শরীরের এই খারাপ অবস্থার মধ্যেই ভীতিকর সেই ভোররাতের ঘটনা শোনালেন অভিনেত্রী। জানালেন কী নিষ্ঠুরতা ট্রাকচালক তার সঙ্গে করেছিলেন।

সেই ভোররাতে ট্রাকের জানালা বেয়ে উঠে চালককে নামাতে যাওয়ার গল্প শুনে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই অহনার সমালোচনা করেছেন। তাদের মতে, এতটা দুঃসাহস দেখানো উচিত হয়নি। তবে অহনার দাবি, ট্রাকের জানালা বেয়ে না উঠলে চালক নাকি ট্রাকটি তার উপর দিয়েই চালিয়ে দিতেন। জীবন বাঁচাতেই তিনি লাফ দিয়ে জানালায় উঠেছিলেন।

শুরু থেকে ট্রাকচালকের সঙ্গে তর্কাতর্কির ঘটনার ভিডিও করছিলেন অহনার খালাতো বোন লিজা ইয়াসমিন মিতু। অহনার কথায়, ‘আমি তাকে ভিডিও করা বন্ধ করে থানায় ফোন করে পুলিশ ডাকতে বলেছিলাম। চালক তখন বলে ‘পুলিশ ডাকছে, দেখাচ্ছি।’ এই বলেই সে ট্রাক চালিয়ে দেয়। আমি ট্রাকের জানালা থেকে নামার সুযোগই পাইনি।’

ওই রাতে অহনা নেশাগ্রস্ত ছিলেন বলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকের মন্তব্য। এর প্রতিবাদ করে নায়িকা বলেন, ‘আমি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি। আমি মদ খাইনি, নেশাগ্রস্ত ছিল ট্রাকচালক। বেঁচে থাকলে আমার সামনে এমন ঘটনা আবার ঘটলে আমি তখনও প্রতিবাদ করব।’ সোশ্যাল মিডিয়ার ভক্তদের কাছে প্রশ্ন রেখে অভিনেত্রী বলেন, ‘ওই রাতে আমার জায়গায় যদি আপনাদের মা, বোন বা প্রেমিকা থাকতো, তাহলে কী এমন অভিযোগ করতে পারতেন?

গত ১০ জানুয়ারি ভোররাতে পুরান ঢাকায় একটি নাটকের শুটিং শেষে উত্তরার বাসায় ফিরছিলেন অভিনেত্রী অহনা। উত্তরা লেকড্রাইভ রোডের সাত নম্বর সেক্টরে পৌছালে পেছন থেকে একটি ট্রাক অহনার গাড়িকে ধাক্কা দেয়। এ সময় তিনি নিজেই গাড়ি চালাচ্ছিলেন। গাড়ি থেকে নেমে অহনা এর প্রতিবাদ করলে ট্রাকচালকের সঙ্গে তার তর্কাতর্কি শুরু হয়। অহনা ট্রাকচালককে গাড়ি থেকে নামতে বলেন।

এক পর্যায়ে অভিনেত্রী নিজেই জানালা দিয়ে উঠে চালককে নামাতে যান। এই অবস্থায় ট্রাক চালিয়ে দেন চালক। জানালায় ঝুলতে থাকেন অহনা। এভাবে ১২ নম্বর সেক্টর পর্যন্ত গেলে অহনার চিৎকার এবং স্থানীয়দের বাধায় জোরে ব্রেক কষেন চালক। ছিটকে পড়েন অহনা। গুরুতর আহতাবস্থায় দ্রুত তাকে নিয়ে যাওয়া উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে। গত মঙ্গলবার পর্যন্ত সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন।

এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেন অহনার খালাতো বোন লিজা ইয়াসমিন মিতু।  এরপর গত শুক্রবার আশুলিয়া থেকে প্রথমে গ্রেপ্তার করা হয় ট্রাকের হেলপার রোহানকে। তার দেয়া তথ্য ধরে শনিবার সাভার থেকে গ্রেপ্তার করা হয় নিষ্ঠুর সেই ট্রাকচালক সুমনকেও। পরে ঢাকার মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ^াসের আদালতে তারা দুজনই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

ঢাকা টাইমস/১৭ জানুয়ারি/এএইচ