সন্ত্রাসবাদ সূচকে বাংলাদেশের উন্নতি

নিরাপদ হোক আগামী সময়

প্রকাশ | ১৭ জানুয়ারি ২০১৯, ১৬:২৭

আরিফুর রহমান

বিশ্ব সন্ত্রাসবাদ সূচকে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের চেয়ে বাংলাদেশের অবস্থা আগের চেয়ে ভালো হয়েছে। গত বছর সবচেয়ে সন্ত্রাসকবল দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থা ছিল ২১তম। এবার চার ধাপ পিছিয়ে দাঁড়িয়েছে ২৫-এর ঘরে। অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড পিসের ‘গ্লোবাল টেররিজম ইনডেক্স’ শিরোনামে এই সূচক আমাদের নিরাপদ বাংলাদেশের আশা জাগাচ্ছে।

দেশের ভেতর সন্ত্রাসী তৎপরতার প্রবণতা নিয়ে এই সূচক নির্ধারণ করা হয়। উন্নত রাষ্ট্রের চেয়ে এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে। আমাদের সামাজিক নিরাপত্তা আগের চেয়ে বেড়েছে। অপরাধ কমেছে। বিশেষ করে উগ্র-সন্ত্রাসবাদের তৎপরতা বাংলাদেশে নেই বললেই চলে।

এই ইতিবাচক অবস্থান গত এক দশকে অর্জিত হয়েছে আমাদের। দেশের সামগ্রিক অপরাধপ্রবণতা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এখন আর আগের মতো সন্ত্রাসী তৎপরতা নেই। অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি কমে গেছে অনেক। অন্যান্য চাঁদাবাজির  হরহামেশা চিত্র এখন আর নেই। টেন্ডারবাজিতে যে বিশৃঙ্খলা ছিল খুবই স্বাভাবিক ঘটনা, দূর হয়েছে নানা পদক্ষেপের কারণে।

তবে পথেঘাটে ছিনতাইয়ের ঘটনা বিচ্ছিন্নভাবে বলবৎ আছে। এ ধরনের অপরাধে জড়িতদের বেশির ভাগই মাদকাসক্ত। চুরি-ডাকাতির ঘটনা আগের মতো দেখা না গেলেও একেবারে বন্ধ হয়ে যায়নি। এসব ক্ষেত্রে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও সক্রিয় হতে হবে।

নাগরিকের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা তৈরি হওয়ার পেছনে বড় কারণ কর্মসংস্থানের অভাব। বেকারদের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা বেশি থাকে। আবার মাদকাসক্তিও মানুষকে বিপথে ঠেলে দেয়। এই মাদকাসক্তের পেছনেও আছে বেকারত্বের বোঝা।

আশার কথা, দেশে আগের চেয়ে কর্মসংস্থান বেড়েছে। কমেছে বেকারের সংখ্যা। সরকারি-বেসরকারি দুই খাতেই বেড়েছে কর্মসংস্থান। বিভিন্ন খাতে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। তবে সেই অনুপাতে দক্ষ জনগোষ্ঠীর অভাব রয়েছে আমাদের। প্রকৃতপক্ষে দেশে দক্ষ জনগোষ্ঠীর মধ্যে বেকারত্ব খুব বেশি নেই। এটা আমাদের জন্য স্বস্তির কথা। বেকার জনগোষ্ঠীকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে তোলার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষায় আরও মনোযোগ দিতে হবে সরকারকে।
উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের সামনে এখন বিপুল সম্ভাবনা। অর্থনীতি, সমাজনীতি ও রাজনীতিতে আমাদের অগ্রগতি আন্তর্জাতিক বিশে^ সমাদৃত। তবে অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে কিছুটা টানাপোড়েন বিশেষ করে সরকারের বিপরীতে শক্তিশালী বিরোধী দলের সংকট এখন আলোচিত হচ্ছে বেশি।
সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পরিক সহযোগিতায় এ সংকটের উত্তরণ হবে বলে আমরা আশা করি। মানুষ শান্তি চায়। সমৃদ্ধ বাংলাদেশ চায়। নিরাপদ জীবন চায়। এ জন্য সবার সম্মিলিত প্রয়াস প্রয়োজন। অন্যান্য খাতের মতো সন্ত্রাসবাদ সূচকে দেশের এই অগ্রগতি অব্যাহত থাকুক। এই প্রত্যাশা করছি।