মেলায় সাড়া ফেলেছে ডাক বিভাগের ‘নগদ’

প্রকাশ | ১৮ জানুয়ারি ২০১৯, ০৯:১৫

জহির রায়হান

বাণিজ্য মেলায় ডাক বিভাগের নগদের প্যাভিলিয়ন দূর থেকেই চোখে পড়ছে। প্যাভিলিয়নটিতে ভিড় জমেছে তরুণদের। আগ্রহ নিয়ে তারা এই সেবা সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানছেন। কেউ কেউ আবার তাৎক্ষণিকভাবে নিবন্ধন করে নিচ্ছেন এই সেবার। ডাক বিভাগের লোকজনও হাসিমুখে দিচ্ছেন সেবা। শুধু বাণিজ্য মেলাতেই ১০ হাজারের বেশি ব্যক্তি নগদ নিবন্ধন করেছেন।

বৃহস্পতিবার বিকেলে বাণিজ্য মেলা প্রাঙ্গণে স্থাপিত নগদের প্যাভিলিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে বিপুলসংখ্যক দর্শনার্থীর উপস্থিতি রয়েছে। সন্ধ্যার দিকে ভিড় লেগে যায় নগদ সেবা সম্পর্কে জানতে আগ্রহী মানুষের। অনেকেই তাৎক্ষণিকভাবে নিবন্ধনও করে নিয়েছেন।

নগদ ডাক বিভাগের চালু করা একটি মোবাইল ব্যাংকিং সেবা। এটি ব্যবহার করে বিকাশ, রকেট, ইউক্যাশের মতো টাকা লেনদেন করা যাবে। তবে নগদের খরচ বিকাশ, রকেটসহ অন্য মোবাইল ব্যাংকিংয়ের চেয়ে কম। নগদের নিবন্ধন নিলে দেওয়া হচ্ছে একটি কাগজের কার্ড। এতে থাকছে একটি নির্দিষ্ট নম্বর। পরবর্তী কালে এই নম্বর ডিজিটাল কার্ডে ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে ডাক বিভাগের। নগদ ব্যবহার করে দিনে সর্বোচ্চ আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেনের সুবিধা রয়েছে। আর প্রতি মাসে লেনদেনের সীমা পাঁচ লাখ টাকা। ক্যাশ ইনের ক্ষেত্রে কোনো চার্জ নেই। ক্যাশ আউটের ক্ষেত্রে অন্য প্রতিষ্ঠানের চেয়ে চার্জ অনেকাংশেই কম।

মূল ফটক দিয়ে মেলায় প্রবেশের পর বড় টাওয়ার হয়ে একটু বাম দিকে গেলেই নগদের প্যাভিলিয়ন চোখে পড়বে। প্যাভিলিয়নটির সাজসজ্জা ডাক বিভাগের ঐতিহ্য তুলে ধরছে। পোস্ট বক্স ও ডাক হরকরার অবয়বই বলে দেয় দেশের সেই পুরোনো ডাক। আর এর ভেতরে ঢুকলেই মিলছে নগদ সেবা।

প্যাভিলিয়নে সেবা নিতে এসেছিলেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী নাজমুল হক রাহাত। ঢাকা টাইমসকে তিনি বলেন, ‘লেনদেনের ক্ষেত্রে সরকারি সেবার প্রতি সবার আস্থা বেশি। যেহেতু বিকাশের মতো বেসরকারি সেবা গ্রহণ করছি, তাই ডাক বিভাগের চালু করা সহজ সেবার গ্রাহক হয়ে গেলাম। নতুন এই সেবায় যুক্ত হয়ে খুব ভালো লাগছে। সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে তাদের সরবরাহ করা ভার্চুয়াল কার্ড।’

নগদে একাউন্ট খোলার পর ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী নাজিয়া করিম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘বিকাশে টাকা উত্তোলনে খরচ বেশি। তা ছাড়া দিনে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত লেনদেন করা যায়। কিন্তু নগদ সেবায় আড়াই লাখ পর্যন্ত লেনদেন করা যাবে। এ কারণে নগদ বাছাই করে নিলাম।’

মোহাম্মদপুর থেকে মেলায় এসেছিলেন অনলাইনে পোশাক বিক্রেতা সামিরা রহমান। তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘ব্যবসায়িক প্রয়োজনেই আমাকে মোবাইল ব্যাংকিং করতে হয়। এখন ডাক বিভাগের নগদেই আমার ভরসা। কারণ এটি রাষ্ট্রীয় সেবা। আমি চাই এটি দেশের সর্বস্তরের জনগণের দোরগোড়ায় যেন পৌঁছে যায়।’

নগদের এক্সিকিউটিভ (কর্পোরেট অ্যান্ড সেল) আশিক আহমেদ ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘মেলায় এখন পর্যন্ত ১০ হাজার গ্রাহক নগদে একাউন্ট খুলেছেন। সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে নগদ নিয়ে অন্য রকমের আগ্রহ লক্ষ করা যাচ্ছে।’

‘দেশের বিভিন্ন স্থানে নগদের উদ্যোক্তা ছড়িয়ে পড়ছে। প্রায় প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এখন নগদের পয়েন্ট আছে। আর ডাক বিভাগের প্রতিটি জিপিও থেকে নগদ সেবা পাওয়া যাচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদ সেন্টারেও এই সেবা দেওয়া হবে।’

এদিকে নবম দিনে মেলা জমে উঠেছে। গতকাল দুপুরের দিকে লোকসমাগম কম হলেও বিকেল থেকে সন্ধ্যার দিকে ঢল নামে মানুষের। আগত ক্রেতা-দর্শনার্থীরা বিভিন্ন স্টল ও প্যাভিলিয়নে পছন্দের নানা পণ্য দেখেছেন এবং কিনেছেন। আজ শুক্রবার ছুটির দিনে মেলা আরও জমে উঠবে বলেই প্রত্যাশা করছেন আয়োজকেরা।

বাণিজ্য মেলার সদস্যসচিব আবদুর রউফ ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত মেলায় প্রতিদিনই দর্শনার্থীদের বেশ সাড়া লক্ষ করা গেছে। রাত ১০টায়ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে গেট বন্ধ করা যাচ্ছে না। আমরা আশা করছি, সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্র ও শনিবার মেলা আরও বেশি জমে উঠবে।’