ডি ভিলিয়ার্সের ৩১ বলের মুগ্ধতার দিন

প্রকাশ | ১৮ জানুয়ারি ২০১৯, ১৩:২৭ | আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০১৯, ১৪:৫৭

হিমু আক্তার

চোখের পলকে ক্রিকেটে লিখে ফেললেন মহাকাব্য। ২০১৫ সালের এই দিনটিকে নিঃসন্দেহে মনে রাখবে ক্রিকেট বিশ্ব। এই দিনেই জোহানেসবার্গের ওয়ান্ডারার্সে ক্যারিবীয় বোলারদের পিটিয়ে ৩১ বলে সেঞ্চুরি আর ৪৪ বলে ১৪৯ রানের এক বিস্ফোরক ইনিংস খেলে ইতিহাসের জন্ম দেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক অধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ার্স।

২০১৫ সালের ১৮ জানুয়ারি পিংক ডে ম্যাচে জেরোম টেইলরের করা ৩৯ ওভারে রাইলি রুশো সাজঘরে ফিরলে ক্রিজে আসেন ডি ভিলিয়ার্স। মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলেই চার হাঁকিয়ে তিনি জানান দেন অতিথিদের সামনে ঠিক কী অপেক্ষা করছে!

প্রথম চার বলে আট রান নেয়া ডি ভিলিয়ার্সের ঝড়ের শুরু আন্দ্রে রাসেলের চার বলে ২০ রান নিয়ে। ১৫ বলে ৪৫ রান করা ডি ভিলিয়ার্সের ১৮ বছরের রেকর্ড ভেঙে ইতিহাস গড়তে প্রয়োজন ছিল একটি ছক্কার। উন্ডিজের অধিনায়ক জেসন হোল্ডারের বলে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগের ওপর দিয়ে বল সীমানার বাইরে পাঠিয়ে স্পর্শ করেন রেকর্ডটি। তারআগে ১৯৯৬ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৭ বলে অর্ধশতকে পৌঁছার বিশ্ব রেকর্ডটি ছিল সনৎ জয়াসুরিয়া।

১৮ বছরের পুরনো এই রেকর্ড ভেঙেও থামেননি ভিলিয়ার্স। হোল্ডারের সেই ওভারের শেষ তিন বলে ১৬ রান নিয়ে শতকের দিকে এগিয়ে যান। ২৮ বলে ৮৮ রানে পৌঁছে যাওয়া ডি ভিলিয়ার্সের দ্বিতীয় রেকর্ড ছুঁতে দরকার ছিল ৭ বলে ১২ রান। অথচ মাত্র তিন বলেই এই রান তুলে নেন তিনি। হোল্ডারের বলে চার মেরে নব্বইয়ের ঘরে পৌঁছান। পরের দুটি বলে পরপর ছক্কা হাঁকিয়ে জন্ম দেন সবচেয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরি করার ইতিহাসের। তার দ্বিতীয় অর্ধশতকটি আসে মাত্র ১৫ বলে। ৩১ বলে শতকে পৌঁছাতে ৮টি চার ও ১০টি ছক্কা হাঁকান ডি ভিলিয়ার্স। অর্থাৎ চার ও ছক্কা থেকেই আসে ৯২ রান। ইনিংসের শেষ ওভারে আন্দ্রে রাসেলের বলে টাইমিংয়ের হেরফেরে ধরা পড়েন ডিপ এক্সট্রা কাভারে। তবে বিদায় নেওয়ার আগে জোহানেসবার্গের মাটিতে ৪৪ বলে ১৪৯ রানের এক মহাকাব্যিক ইনিংস উপহার দিয়ে যান ডি ভিলিয়ার্স।

অথচ ঐ সময় ক্রিজে আসার কথাই ছিল না তার। ডেভিড মিলারকে ক্রিজে চেয়েছিলেন তিনি। কোচ চেয়েছিলেন ৩০ বছর বয়সী ডি ভিলিয়ার্সই ব্যাটিং করুক। আর কোচের কথায় মাঠে নেমে দিন নিজের করে নিলেন মিস্টার ৩৬০।

৩১ বলের মুগ্ধতা

৪ ২ ১ ১ ৪ ৬ ৪ ৬ ৬ ০ ২ ২ ১ ১ ৬ ৬ ৬ ৪ ৬ ১ ৪ ১ ১ ০ ৪ ৪ ০ ৬ ৪ ৬ ৬

মহাকাব্যিক ইনিংস

৩১ বলে সেঞ্চুরি। ভাঙলেন নিউজিল্যান্ডের কোরি অ্যান্ডারসনের বিশ্বরেকর্ড (৩৬ বল)।

১৬ বলে হাফসেঞ্চুরি। টপকালেন সনৎ জয়াসুরিয়ার বিশ্বরেকর্ড (১৭ বল)।

১৬ ছক্কা দিয়ে ছুঁলেন রোহিত শর্মার ওয়ানডেতে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ওভার বাউন্ডারির রেকর্ড।

৪০ মিনিট। পৌঁছান সেঞ্চুরিতে। ১৯ মিনিট নেন হাফসেঞ্চুরি করতে।

৩৩৯ স্ট্রাইক রেট। ১৪৯ রানের ইনিংসের। একশোর বেশি রানের ইনিংসে তিনশোর বেশি স্ট্রাইক রেট তোলা তিনিই প্রথম ক্রিকেটার।

(ঢাকাটাইমস/১৮ জানুয়ারি/ এইচএ)