নার্স দিয়ে অপারেশন, হাসপাতাল মালিকের দম্ভোক্তি
মাগুরায় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নার্সকে দিয়ে রোগীর অপারেশনের অভিযোগ উঠেছে। ওই রোগী বর্তমানে অন্য একটি হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওই হাসপাতাল মালিক দম্ভোক্তি করেছেন, বলেছেন, পারলে যা খুশি লিখতে।
ওই হাসপাতালের মালিক নিজেও একজন চিকিৎসক। তিনি সরকারি হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ছিলেন। আর তিনি দায়িত্বে থাকাকালেও পলি ক্লিনিক নামে ওই হাসপাতাল গড়ে তোলেন।
ভুক্তভোগী নারীর নাম তনু বেগম। তার স্বামী মাগুরার সদর উপজেলার আবালপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক জানান, জরায়ুতে টিউমারে আক্রান্ত গত ১৩ জানুয়ারি ক্লিনিকটিতে স্ক্রীকে ভর্তি করান তিনি। এ সময় তাদের বলা হয়, এখনই অপারেশন না করলে রোগীর মৃত্যু হতে পারে।
রাজ্জাক জানান, এই কথা শুনে ধান দেনা করে টাকা নিয়ে আসেন। আর গত ১৪ জানুয়ারি সকাল ৯টার দিকে ডাক্তার মুক্তাদির রহমান নিজে অপারেশন না করে দুইজন নার্স দিয়ে অপারেশন করতে বলেন।
অস্ত্রোপচার কক্ষে দুই নার্স যখন রোগীর পেট কাটতে যান, তখন তনু ডাক্তার কোথায় জানতে চান। তখন নার্সরা জানান, তিনি চলে আসবেন।
পেট কাটার পর জরায়ু ও টিউমারে অতিরিক্ত চর্বি দেখে চিকিৎসককে ফোন করেন দুই নার্স। প্রায় ১৫ মিনিট পর চিকিৎসক মুক্তাদির রহমান অপারেশন থিয়েটারে এসে নার্সদের বলেন সেলাই দিতে।
‘ডাক্তার মুক্তাদির রহমান ওটি থেকে বেরিয়ে আমাকে জানান, আপনার রোগীর অপারেশন এখানে হবে না। রোগীর অবস্থা খুবই খারাপ। এখনই ফরিদপুর নিয়ে যেতে হবে’- বলেন রাজ্জাক।
ওই নারী ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।
চিকিৎসক মুক্তাদির মাগুরা সদর হাসপাতালের আরএমও পদ থেকে অবসরে গেছেন। তবে ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি মাগুরা শহরে ক্লিনিক ব্যবসা করে আসছেন। পলি পলি ক্লিনিক তিনি গড়ে তোলেন এই সময়েই।
এই হাসপাতালের বিরুদ্ধে দালালদের মাধ্যমে সরকারি হাসপাতালের রোগী ভাগিয়ে আনার অভিযোগ পুরনো।
নার্স দিয়ে অপারেশন করানোর বিষয়ে জানতে চাইলে চিকিৎসক মুক্তাদির সাংবাদিক ও সংবাদপত্র সম্পর্কে বিরুপ মন্তব্য করেন। বলেন, ‘নিউজ করে যা পারেন করেন-গে। ’
সিভিল সার্জন ছাদুল্লাহর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’