মানবতা

সংবাদ হচ্ছে জেনে আশ্রয় মিলল ফুটপাতের লিপির

প্রকাশ | ২১ জানুয়ারি ২০১৯, ০৮:৫২ | আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৯, ১৫:৩৪

বোরহান উদ্দিন

লিপি আক্তার। শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী এই নারীর ঠাঁই ছিল ফুটপাতে। মাস তিনেক ধরে রাজধানীর ইস্কাটনের সবজিবাগান এলাকায় দেখা যাচ্ছিল তাকে। এই নারীকে কারা এখানে ফেলে রেখে যায়, তা জানা যায়নি। কেউ তার খোঁজেও আসেনি। অবশেষে তার ঠাঁই মিলেছে ঢাকা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের মিরপুরের আশ্রয়ণ প্রকল্পে।

সবজিবাগান মসজিদের পাশের টিনের ঘরের বাসিন্দা আলেয়া বেগম ও লিপি বেগম প্রতিবন্ধী এই নারীর দেখভাল করছিলেন। তারা জানালেন, তারাও চাইছিলেন লিপির স্থায়ী কোনো বন্দোবস্ত হোক। দানের টাকা একত্র করে তারা লিপির জন্য একটি হুইল চেয়ার কিনে দিয়েছিলেন। দিনের বেলা সেটার ওপর তুলে দেওয়া হতো তাকে। সেখানে বসে বসে তিনি রোদে ওম নিতেন।

তারা আরও জানান, মানুষ লিপিকে দেখে টাকাপয়সা দিত। সেগুলো দিয়ে ওর খাওয়া-দাওয়া চলত। মাঝে মাঝে এক নারী এসে লিপিকে কিছু পোশাক ও ডায়াপার দিয়ে যেতেন।

অসহায় লিপির দিন কী এভাবেই যাবে? তাই তার নাম-পরিচয় জানার চেষ্টা করে ঢাকা টাইমস। তিনি নিজের নাম আর জেলার নাম ছাড়া আর কিছুই বলতে পারেন না। লিপির অসহাত্বের বিষয়টি জানাতে গতকাল বিকেলে দিলু রোডের ঢাকা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে যান এই প্রতিবেদক। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে আশ্রয় দেওয়ার ব্যাপারে আশ্বাস দেন উপপরিচালক আবু সাঈদ মো. কাওছার রহমান। তিনি ফোন করেন শহর সমাজসেবা কার্যালয়-২-এর কর্মকর্তা জিয়াউর রহমানকে। ফুটপাতে থাকা প্রতিবন্ধী এই নারীকে সেখান থেকে মিরপুরের আশ্রয়ণ প্রকল্পে নেওয়ার নির্দেশনা দেন।

ঘণ্টাখানেকের মধ্যে জিয়াউর রহমান দুজন নারী কর্মীকে নিয়ে ইস্কাটনের ফুটপাতে চলে আসেন। তখন লিপির শরীরে মলমূত্র লেগে ছিল। স্থানীয় এক নারী তাকে পরিষ্কার করেন। এরপর সিএনজি অটোরিকশায় চড়িয়ে লিপিকে নিয়ে যাওয়া হয় সমাজসেবার ‘আশ্রয়ণে’।

জিয়াউর রহমান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘লিপিকে আপাতত মিরপুরে যে আশ্রয়ণ প্রকল্প আছে, সেখানে পাঠানো হয়েছে। তিনি এখন আমাদের জিম্মায় থাকবেন।’ লিপির খবর জানানোর জন্য তিনি এই প্রতিবেদক ও ঢাকা টাইমসকে ধন্যবাদ দেন।

লিপি আক্তারের বাড়ির খোঁজ নেওয়া হবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘লিপি অল্প হলেও কথা বলতে পারে। সে বলেছে বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে। এখন সেখানে আমাদের অফিসের মাধ্যমে তার বাড়ি বা আত্মীয়স্বজনের খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করব। যত দিন না পাওয়া যাবে, তত দিন আমাদের আশ্রয়ে থাকবে।’