১১ হাসপাতালে অনুপস্থিত ৪০ শতাংশ চিকিৎসক

প্রকাশ | ২১ জানুয়ারি ২০১৯, ১৮:০০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

ঢাকাসহ আটটি জেলার ১১টি সরকারি হাসপাতাল পরিদর্শন করে ৪০ শতাংশ চিকিৎসককে কাজে পায়নি দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।

সোমবার সকালে এই অভিযান চালায় দুদকের এনফোর্সমেন্ট দল। এর মধ্যে কেবল ঢাকার মুগদা হাসপাতালে সব চিকিৎসকের উপস্থিতি দেখা গেছে। বাকি হাসপাতালগুলোর প্রায় সবগুলোতে অর্ধেকের বেশি ডাক্তার কর্মস্থলে আসেইনি।

হাসপাতালগুলো খোলা থাকে সকাল আটটা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত। আর শেষ পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করে দুদকের দল।

অভিযানে দেখা যায়, ঢাকার বাইরে সাতটি হাসপাতালে অনুপস্থিত চিকিৎসকের হার ৬১.৮ শতাংশ। অর্থাৎ বেশিরভাগ চিকিৎসক কাজেই আসেন না। কিন্তু মাস শেষে বেতন তুলে নেন।

দুদক জানতে পেরেছে, উপজেলা হাসপাতালগুলোতে শীর্ষ কর্মকর্তারা মাসের বেশিরভাগ সময় অনুপস্থিত থাকেন। এ সুযোগে কনসালটেন্ট ও মেডিকেল অফিসাররাও কর্মস্থলে ঠিকমতো হাজির থাকেন না। অনেকে সপ্তাহে দুই একদিন হাজিরা খাতায় সই করে পুরো মাস অনুপস্থিত থাকেন এবং পুরো মাসের বেতন উত্তোলন করেন।

চিকিৎসকদের অনুপস্থিতির কারণে হয়রানির শিকার রোগীদের পক্ষ থেকে দুদক হটলাইন ১০৬ নম্বরে অভিযোগ আসার পর এই অভিযান চালানো হয়।

দুদকের এনফোর্সমেন্ট অভিযানের সমন্বয়ক দুদকের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মুনীর চৌধুরী বলেন, ‘স্বাস্থ্য সেক্টরে এ অবক্ষয় অত্যন্ত দুঃখজনক। মানবসেবার চেতনা না থাকলে চিকিৎসা সেবা পরিত্যাগ করা উচিত।’

দায়িত্বে অবহেলার বিষয়ে দুদক কঠোর অবস্থান নেবে জানিয়ে এই দুদক কর্মকর্তা বলেন, ‘কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তাদেরকে চাকরি হারাতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সারাদেশের স্বাস্থ্য সেক্টর দুদকের নজরদারিতে থাকবে।’

যেসব হাসপাতালে অভিযান চালানো হয়েছে, সেগুলো হলো ঢাকার তিনটি কর্মচারী কল্যাণ হাসপাতাল, মা ও শিশু সদন ও মুগদা জেনারেল হাসাপাতাল, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, রংপুরের পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, দিনাজপুর সদর হাসপাতাল, কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পাবনার সদর জেনারেল হাসপাতাল ও আটঘরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

দুদকের অভিযানে ২৩০ জন চিকিৎসকের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত পাওয়া যায় মাত্র ৯২ জনকে, যা মোট চিকিৎসকের ৪০ শতাংশ।

ঢাকার দুই হাসপাতালের ৯৯ জনের মধ্যে ১১ জন অনুপস্থিত ছিলেন। ঢাকার বাইরের সাত জেলার মোট চিকিৎসক থাকার কথা ছিল ১৩১ জন। কিন্তু পাওয়া গেছে ৮১ জনকে।

মুগদা হাসপাতালে ঘুষ গ্রহণের সময় কর্মচারী গ্রেপ্তার

মুগদা হাসপাতালে চিকিৎসকের চিকিৎসকের উপস্থিতি ভালো হলেও সিরিয়ালের জন্য এক কর্মচারীকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ পায় দুদক। পরে হাতেনাতে ধরা পরেন জরুরি বিভাগের কর্মচারী আবু মুসা ভূঞা। পরে দুদক দলের সুপারিশে তাকে তাৎক্ষণিক বরখাস্ত করা হয়।