ভোক্তার অভিযোগ বেশি অনলাইন কেনাকাটায়

প্রকাশ | ২২ জানুয়ারি ২০১৯, ১৩:০০

জহির রায়হান

বেসরকারি চাকরিজীবী আসাদুজ্জামান। ‘আজকের ডিল’ নামে একটি অনলাইন মার্কেট থেকে স্মার্টওয়াচের স্ক্রিন প্রটেক্টর কিনে ঠকেছেন। পাঠানোর কথা কাচের প্রটেক্টর। কিন্তু পাঠানো হয় পাতলা পলিথিন।

অভিযোগ করেন আসাদ। কিন্তু তার আসল পণ্য দিতে গড়িমসি চলতে থাকে। অনেকবার যোগাযোগের পর এক মাস লাগে তার কাক্সিক্ষত পণ্য পাঠাতে। এত সময় লাগার কারণ জানতে চাইলে কাস্টমার কেয়ার থেকে বলা হয়, আসলেই ভুল পণ্য দেওয়া হয়েছে কি না তা যাচাই করতেই এই সময় লেগেছে।

অনলাইনে কেনাকাটা যেমন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে ভোক্তার প্রতারণা। ছবিতে যে পণ্য দেখানো হয়, অনেক ক্ষেত্রেই তা পাঠানো হয় না। কেউ কেউ অগ্রিম টাকা নিয়ে পণ্য পাঠায়, ফলে কিছুই করার থাকে না ভোক্তার। ‘ক্যাশ ইন ডেলিভারি’র ক্ষেত্রে আবার পণ্য ফেরত পাঠাতে হলে মাশুল দিতে হয়। ফলে পণ্যও পান না ভোক্তা, সময়ের পাশাপাশি গচ্চা যায় টাকা।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরও বলছে, ইদানীং অনলাইনে কেনাকাটায় প্রতারণার অভিযোগই বেশি আসছে। অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক জান্নাতুল ফেরদাউস ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘দেখা যায় অনেকে টাকা দিয়েছে, কিন্তু পণ্য আর পাচ্ছে না। আবার দেখা যায় পণ্য পেতে দেরি হচ্ছে। পণ্যের মান ঠিক থাকছে না।’

‘এ ছাড়া মোড়কের গায়ে সংশ্লিষ্ট পণ্যের খুচরা বিক্রয়মূল্য, উৎপাদনের তারিখ, মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ ইত্যাদি লেখা থাকে না।

যেসব অনলাইন মার্কেটের বিরুদ্ধে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরে অভিযোগ এসেছে তার মধ্যে অনলাইন মার্কেট দারাজ ডটকম, সাদমার্ট গ্লোবাল, আজকের ডিল, চাল ডাল ডটকম আছে। এগুলো প্রসিদ্ধ অনলাইন মার্কেট প্লেস।

এসবের বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে দুই পক্ষকে ডেকে অভিযোগের বিষয়ে শুনানি হয়। কিন্তু বিডি শপ ডটকম, এ এক্সপ্রেস বিডি, ই কাইড মার্টসহ আরও কিছু অনলাইনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি তাদের স্থায়ী ঠিকানা না থাকায়।

জান্নাতুল ফেরদাউস বলেন, ‘যেসব অনলাইন মার্কেটের ঠিকানা রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি। আর কিছু অনলাইন মার্কেটের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাই, যার ঠিকানাই নেই। এদের তো আমরা আর খুঁজে পাই না। তাই ভোক্তাদেরও কেনাকাটায় সতর্ক হতে হবে, তারা যেন মানসম্পন্ন অনলাইন থেকে পণ্য কেনে।’

অনলাইন মার্কেটের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার সুযোগ বেশি থাকার একটি কারণ হলো, কেনাকাটার প্রমাণ করার জন্য অনেক ডকুমেন্ট থাকে। আর বাইরে কেনাকাটা করলে দেখা যায় অনেক প্রতিষ্ঠান কেনাকাটার রসিদই দেয় না। আর রসিদ না দিলে তো অভিযোগ প্রমাণ করা কষ্টকর হয়ে পড়ে।