পুলিশের এডিসি ছিলেন বলে রক্ষা মেয়েটির
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের এক নারী নিরাপত্তা কর্মী অন্যান্য দিনের মতো বুধবার কর্মস্থলে আসতে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন রাজধানীর মহাখালীর আমতলিতে। সাতসকালে রাস্তায় লোকজনের আনাগোনাও ছিল কম। এই সুযোগে তার দিকে কুনজর দেন আলমগীর হোসেন নামের এক যুবক। মেয়েটি এর কড়া প্রতিবাদ জানায়। পরে শুরু হয় টানাটানি। এক পর্যায়ে মেয়েটি চিৎকার করে বাঁচার আকুতি জানালে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন আলমগীর।
ওই মুহূর্তে পাশ দিয়ে গুলশান-১ এর দিকে যাচ্ছিলেন ডিএমপির অতিরিক্ত উপ কমিশনার (এডিসি) তাপস কুমার দাস। মেয়েটির চিৎকার শুনে গাড়ি নিয়ে ছুটে আসেন পুলিশ কর্মকর্তা। মুখে আঘাত করায় রক্তাক্ত হয়ে যাওয়া মেয়েটিকে উদ্ধার করেন তিনি। তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী ও গাড়ির চালক মিলে ধরে ফেলেন আলমগীরকে। পরে তার ছোট ভাই সেখানে উপস্থিত হলে তাকেও আটক করা হয়। পরে অবশ্য সে নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
তাপস কুমার দাস মেয়েটিকে উদ্ধার করে তার চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে। সেখানে তার মুখে ছয়টি সেলাই দিতে হয়েছে। অন্যদিকে আটককৃতদের নিয়ে যাওয়া হয় বনানী থানায়। খবর পেয়ে চ্যানেলের সংবাদকর্মীরা বনানী থানায় ছুটে যান। পরে নারী-শিশু নির্যাতন আইন এবং আহত হওয়ার ঘটনায় দুই ধারায় মামলা করেন নির্যাতিত মেয়েটি।
ঢাকা টাইমসকে পুরো ঘটনার বিস্তারিত জানান তাপস কুমার দাস। তিনি বলেন, নাইট ডিউটির অংশ হিসেবে ভোর পাঁচটার কিছু পর মহাখালী দিয়ে গুলশান-১ নম্বরের দিকে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ চিৎকার-চেচামেচি শুনে এগিয়ে যাই। কাছাকাছি গিয়ে দেখি মেয়েটিকে মারধর করছে এক যুবক। সাথে আরও একজন ছিল। সে যুবকটির ছোটভাই। পুলিশের গাড়ি দেখে ছেলেটি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। তবে আমার ব্যক্তিগত গার্ড ও গাড়ির চালক যুবককে ধরে ফেলে।
পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, প্রথমে মেয়েটিকে কুপ্রস্তাব দেয়া ও মারধর করার কথা অস্বীকার করলেও মেয়েটি নিশ্চিত করে আলমগীরই তার ওপর হামলা করেছে। ছেলেটি কড়াইল বস্তি এলাকায় মাছের ব্যবসা করে বলে জানিয়েছে।
তাপস জানান, আলমগীরের সঙ্গে থাকা ছোটভাইকে প্রথমে আটক করলেও পরে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় সে নির্দোষ। এজন্য ছোটভাইকে আসামি করা হয়নি।
মেয়েটিকে রক্ষা করতে পেরে স্বস্তি প্রকাশ করেন পুলিশ কর্মকর্তা তাপস।
এদিকে সাহসী ভূমিকার জন্য পুলিশ কর্মকর্তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছে চ্যানেল টোয়েন্টিফোর কর্তৃপক্ষ। চ্যানেলটির রিপোর্টার মোরশেদ হাসিব ঢাকা টাইমসকে বলেন, আমাদের একজন সহকর্মীকে নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচিয়েছেন তাপস কুমার পাল। আমরা তাকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা তার প্রতি কৃতজ্ঞ।
(ঢাকাটাইমস/২৩জানুয়ারি/বিইউ/জেবি)