ইউনিপে টু

১২ বছরের জেল, ২৭১২ কোটি টাকা জরিমানা

প্রকাশ | ২৩ জানুয়ারি ২০১৯, ১৬:২৯ | আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৯, ১৭:০৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় ‘মাল্টি লেভেল মার্কেটিং’- এম এলএম কোম্পানি ইউনিপে-টু-ইউ বাংলাদেশ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ছয়জনকে ১২ বছরের কারাদ- দিয়েছে আদালত। সব মিলিয়ে জরিমানা করা হয়েছে দুই হাজার ৭০২ কোটি ৪১ লাখ টাকা।

বুধবার ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন এই রায় দেন।

জরিমানার পৌনে তিন হাজার কোটি টাকা ১৮০ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রের অনুকূলে জমা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদেশ পালন না করলে অর্থ আদায়ে রাষ্ট্র আসামিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।

রায়ে মামলা সংক্রান্তে বিভিন্ন হিসাবে জব্দ থাকা ৪২০ কোটি ১৪ লাখ ২৯ হাজার ৬৬৩ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের আদেশও এসেছে। আসামিদের দ্বারা পরিচালিত সম্পত্তিও রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হবে।

রায় ঘোষণার সময় আসামিদের মধ্যে তিন জন উপস্থিত ছিলেন। আর বাকিরা পলাতক।

যারা এই সাজা পেয়েছেন তারা হলেন ইউনিপে-টু-ইউ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুনতাসির হোসেন, চেয়ারম্যান শহীদুজ্জামান শাহীন, নির্বাহী পরিচালক মাসুদুর রহমান, মহা ব্যবস্থাপক এ এম জামসেদ রহমান, উপদেষ্টা মঞ্জুরুল এহসান চৌধুরী এবং ইউনিল্যান্ড লিমিটেডের পরিচালক এইচএম আরশাদ উল¬াহ।

এদের মধ্যে শহীদুজ্জামান শাহীন, মাসুদুর রহমান ও মঞ্জুরুল এহসান চৌধুরী পলাতক। তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

এদের মধ্যে মুনতাসির হোসেন, এ এম জামসেদ রহমান, এইচএম আরশাদ উল¬াহ আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

রায়ে আদালত বলেছে, জরিমানার অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে হবে।

অবৈধভাবে প্রায় সাড়ে ১৩ শ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ২০১১ সালের ২৫ জানুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম ঢাকার শাহবাগ থানায় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এতে বলা হয় আসামিরা বিনিয়োগের আইনকানুন ভঙ্গ করে ‘ভারচুয়াল গোল্ডে’ কথিত বিনিয়োগের কথা বলে অল্প সময়ে বেশি মুনাফার মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে।

২০০৯ সালের নভেম্বর মাস থেকে ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে সিটি ব্যাংক নিউ মার্কেট শাখা, এনসিসি ব্যাংক নারায়গঞ্জ শাখা ও ব্র্যাক ব্যাংক এলিফেন্ট রোড শাখায় ২৪৬ কোটি ৩০ লাখ ৪৫৪ টাকা জমা হয়।

এই অর্থের মধ্যে ইউনিপে-টু-ইউর এমডি মুনতাসির হোসেন ও চেয়ারম্যান শহীদুজ্জামান শাহীন ২৫ কোটি ১২ লাখ ৩ হাজার ২০৭ টাকা ব্যক্তিগত হিসাবে স্থানান্তর করেন।

সে সময় হঠাৎ ইউনিপে টুর কর্তা ব্যক্তিরা উধাও হয়ে যান আর টাকা জমা করা ক্ষতিগ্রস্তরা নানা কর্মসূচি পালন করে অর্থ উদ্ধারের দাবি করে।

২০১১ সালের ২২ জুন এই মামলায় অভিযোগপত্র দেয় দুদক। ২০১৫ সালের ৬ জুলাই অভিযোগ গঠনের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় বিচার।

রাষ্ট্রপক্ষে ২৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৩ জনের সাক্ষ্য শুনে আদালত বুধবার ছয় আসমিকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজার রায় দিল।

আসামিপক্ষের আইনজীবী ফরহাদ হোসেন নিয়ন জানান, মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কোম্পানি ইউনিপে-২ ইউ বাংলাদেশ এর বিরুদ্ধে সারাদেশে ১৪৫ টি মামলা করা হয়। চারটি মামলায় আসামিরা খালাস পেয়েছেন। আর পাঁচটি মামলায় তাদের সাজা হয়েছে।