সদস্যদের মাদক পরীক্ষা

র‌্যাবের উদ্যোগ অন্যরাও অনুসরণ করুক

প্রকাশ | ২৪ জানুয়ারি ২০১৯, ০৯:১৭

আরিফুর রহমান

দেশে মাদক এক ভয়াবহ সমস্যা, এ নিয়ে সন্দেহ-সংশয়ের কোনো জায়গা নেই। মাদকের ভয়াবহতা এমনই যে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বড় কর্মকর্তাদের মাঝেও এর বিস্তার দেখা গেছে। ভারতের ফেনসিডিলের আধিপত্য শেষে এখন মাদক সাম্রাজ্যে রাজত্ব করছে মিয়ানমারের ইয়াবা নামের এক সর্বনাশা বড়ি। তাতে আক্রান্ত হচ্ছে শ্রেণি-পেশানির্বিশেষে সব বয়সী মানুষ।

মাদকের এই সর্বগ্রাসিতা থেকে দেশের সরকারি চাকুরেদের রক্ষা করতে নিয়োগের আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মাদক পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করেছে আদালত। সেটি কতটুকু বাস্তবায়িত হয়েছে তা এখনো জানায়নি সরকারি কোনো দপ্তর।

তবে বাংলাদেশ পুলিশের এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নে (র‌্যাব) যোগ দেওয়ার আগে এমন পরীক্ষা চালু আছে। এখন সেখানে  চাকরিরতদের ডোপ টেস্টের উদ্যোগ নিয়েছে বাহিনীটি। বাহিনীতে কাউকে সন্দেহ হলে মাদকের পরীক্ষা করা হচ্ছে তার। সারা দেশে মাদকবিরোধী সাঁড়াশি অভিযানে অগ্রণী ভূমিকা পালনকারী র‌্যাবের কোনো সদস্য যাতে মাদকে জড়িয়ে না পড়েন সে জন্যই এই উদ্যোগ। কর্মকর্তাদের মতে, তারা স্বচ্ছ থাকতে চান। তারা চান না তাদের কোনো কর্মীর মাদকসম্পৃক্ততা নিয়ে বিতর্ক উঠুক। আর বাহিনীর সদস্য নিজেই যদি সুস্থ না থাকে, তাহলে কাজ করবেন কীভাবে। সবাইকে সচেতন রাখতে এটা করা হচ্ছে বলে জানান তারা।

র‌্যাবের কর্মকর্তাদের এই উপলব্ধি অত্যন্ত প্রশংসনীয়। সরষের মধ্যেই যদি ভূত থাকে তবে তাতে ভূত আরও বেশি ঘাড়ে চেপে বসার আশঙ্কা থাকে। তারা সেটি হতে দিতে চান না।

আমরা র‌্যাবের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। বাহিনীর সদস্যদের শতভাগ মাদকমুক্ত রাখতে এই ব্যবস্থা কার্যকর হতে পারে বলে আমরা মনে করি। এতে বাহিনীর সব সদস্যের দায়িত্ব পালনে মনোবল বাড়বে বলে বিশ্বাস করি।

আমরা মনে করি, র‌্যাবের এই উদ্যোগ অনুসরণ করা উচিত সরকারি সব প্রতিষ্ঠানের। বিশেষ করে পুলিশ, মাদক নিয়ন্ত্রণসংশ্লিষ্ট সব সংস্থা, চোলাচালান রোধে নিয়োজিত বাহিনীতে অবশ্যকরণীয় হওয়া দরকার এই মাদক পরীক্ষা। কেউ মাদক পরীক্ষা উতরে চাকরি নেয়ার পর তার আবার আসক্ত হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। এ ধরনের মানুষ সরকারি দপ্তরের কাজের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। মাদক নিয়ন্ত্রণ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কিংবা অপরাধ নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত বাহিনীর কেউ মাদক নিলে তার দ্বারা বাহিনীর গোপন তথ্য যে অপরাধীদের কাছে পৌঁছে যাবে এটা হলপ করে বলা যায়।

আমরা জেনেছি, র‌্যাবের দরবার শেষে সবার রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তারপর পরীক্ষা করে দেখা হয় কারও মাদকে আসক্তি রয়েছে কি না। এই ব্যবস্থা শুধু সরকারি অফিসে নয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও চালু হতে পারে।