বরিশালের সরব আ.লীগ, দর্শক বিএনপি

আরিফিন তুষার, বরিশাল ব্যুরো প্রধান
 | প্রকাশিত : ২৪ জানুয়ারি ২০১৯, ০৯:২২

আসন্ন উপজেলা নির্বাচন ঘিরে বরিশালের ১০টি উপজেলায় আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রস্তুতি চলছে জোরেশোরে। এই মুহূর্তে তাদের সব তৎপরতার কেন্দ্রে রয়েছে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে দলের মনোনয়ন নিশ্চিত করা। তৃণমূলে প্রচার-প্রচারণার থেকে দলের হাইকমান্ডকে খুশি করাটাই মনোনয়ন-প্রত্যাশীদের এখন প্রধান লক্ষ্য।

নির্বাচন নিয়ে ভিন্ন অবস্থান বিএনপির। ক্ষমতাসীন মহল সরগরম হয়ে উঠলেও নীরব দর্শক বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা। বিএনপির হয়ে চেয়ারম্যানসহ তিনটি পদে একাধিক প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতার আগ্রহ থাকলেও দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছেন তারা। কেন্দ্র থেকে দিকনির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত তারা সামনে আসতে পারছেন না।

বরিশাল জেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সদর উপজেলায় উপজেলায় দলীয় প্রার্থী নিয়ে আওয়ামী লীগ-বিএনপিতে নানা মেরুকরণ আগে থেকেই আছে। রাজনৈতিক প্রভাব আর ব্যক্তির পছন্দ-অপছন্দের ওপর গুরুত্ব পাচ্ছে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনয়ন।

২০১৪ সালের নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগের মনোনয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচত হন সাইদুর রহমান রিন্টু। সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রয়াত শওকত হোসেন হিরনের ব্যবসায়িক পার্টনার রিন্টু আওয়ামী লীগে কোনো পদে ছিলেন না তখন। বর্তমানে মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রিন্টু এবারও দলের মনোনয়ন চাইবেন।

তবে এবার সদর উপজেলায় তার মনোনয়ন পাওয়াটা খুব সহজ হবে না বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা। উপজেলার উন্নয়নের প্রশ্নে তার ভ’মিকা প্রশ্নবিদ্ধ বলছেন অনেকে। এবার মনোনয়ন যুদ্ধে তাকে লড়তে হবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মনিরুল ইসলাম ছবি, যুবলীগ নেতা মাহামুদুল হক খান মামুন, আনোয়ার হোসাইন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ইমরান শহীদ চপলের সঙ্গে।

এখনো আলোচনায় না এলেও বিএনপির সম্ভাব্য মনোনয়ন-প্রত্যাশীদের তালিকায় রয়েছেন মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি মনিরুল আহসান, কোতোয়ালি বিএনপির সভাপতি অ্যাডভাকেট এনায়েত হোসেন বাচ্চু ও সহ-সভাপতি নুরুল আমিন। তাদের মধ্যে ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এনায়েত হোসেন বাচ্চু।

সদরের মতো করেই জেলার অপর নয়টি উপজেলাতেও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন-প্রত্যাশী একাধিক নেতা। হিজলা উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ টিপু সিকদার, মেহেন্দিগঞ্জের অ্যাডভোকেট মনসুর আহমেদ, বাকেরগঞ্জের সামসুল আলম চুন্নু, মুলাদীর মিঠু খান, বাবুগঞ্জের সরদার খালেদ হোসেন স্বপন, বানারীপাড়ার গোলাম ফারুক, উজিরপুরের হাফিজুর রহমান ইকবাল, গৌরনদীর সৈয়দা মনিরুন্নাহার মেরী, আগৈলঝাড়ার গোলাম মুর্তজা খানসহ বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যানরাও প্রার্থী হচ্ছেন।

কোনো কোনো উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যানরা পদোন্নতির সিঁড়ি বেয়ে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন পেতে মরিয়া হয়ে লবিং চালাচ্ছেন। বর্তমান চেয়ারম্যানদের পাশাপশি দলীয় মনোনয়ন পেতে ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছেন বেশ কয়েকজন তরুণ প্রার্থী।

চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যশী হিজলা উপজেলায় বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের যুব-ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদ ও বরিশাল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদ এস এম জাকির হোসেন, মুলাদী উপজেলায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও ঢাকা মহানগর (উত্তর) যুবলীগের সহ-সম্পাদক শফিকুর রহমান সুমন, বাবুগঞ্জ উপজেলায় বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি সুজন আহাম্মেদ নিজ নিজ এলাকায় চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচার-প্রচারণা।

বরিশাল জেলার বিভিন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের বিষয়টি নির্ভর করছে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এমপির ওপর। তাই সম্ভাব্য প্রার্থীদের অনেকেই তার শরণাপন্ন হচ্ছেন। মনোনয়ন নিশ্চিত করতে তার দৃষ্টি কাড়ার চেষ্টা করছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।

তবে প্রার্থিতা বিষয়ে এখনো কেন্দ্র থেকে কোনো দিকনির্দেশনা আসেনি বলে জানান বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস। কেন্দ্র থেকে যেভাবে নির্দেশনা দেবে সেভাবেই প্রার্থী বাছাই করে তা কেন্দ্র পাঠানো হবে। কেন্দ্র থেকে চ’ড়ান্ত হবে প্রার্থী। তবে নির্বাচনের জন্য তারা সাংগঠনিকভাবে প্রস্তুত বলে জানান তিনি।

স্থানীয় বিএনপিও নির্বাচন নিয়ে কেন্দ্র থেকে কোনো নির্দেশনা পায়নি। কেন্দ্রীয় কমিটির বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট বিলকিছ আক্তার জাহান শিরিন বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচনে না যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কেননা আমরা জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের মতামত নিচ্ছি। তারা সবাই নির্বাচনে না যাওয়ার বিষয়ে মতামত দিয়েছে।’

বিলকিছ বলেন, এর আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিয়েছে। কিন্তু এত বড় একটি সংসদ নির্বাচন হয়েছে, সেখানে কোনো কোনো আসনে বিএনপির প্রার্থীরা একটি ভোটও পায়নি। কাজেই সুষ্ঠু ভোটের আশা করা যায় না। বরং নেতাকর্মীরা নতুন করে হামলা-মামলা ও গ্রেপ্তার হয়ে জেলে যাবে। ঘরছাড়া এবং নির্যাতিত হবে। তাই বর্তমান নির্বাচন কমিশন এবং অবৈধ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে কেউ যেতে রাজি নন।’

(ঢাকাটাইমস/২৪জানুয়ারি/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :