ডিএনসিসি ও উপজেলা নির্বাচন

নির্বাচনী গণতন্ত্রে বিএনপির অংশ নেয়া উচিত

আরিফুর রহমান
 | প্রকাশিত : ২৫ জানুয়ারি ২০১৯, ০৮:৫৬

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) নির্বাচনের তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ এরই মধ্যে দলের প্রার্থিতা প্রায় চূড়ান্ত করেছে। কিন্তু গতকাল সন্ধ্যায় বিএনপির মহাসচিব জানিয়ে দিয়েছেন, তার দল ডিএনসিসির মেয়র ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। এই সিদ্ধান্ত কতটুকু সুবিবেচিত হলো কিংবা দলের জন্য ইতিবাচক হবে তা সময়ই বলে দেবে।

বিএনপি যে এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে তা অনুমেয়ই ছিল। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বড় বিপর্যয়ের পর দলটি বর্তমান সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে যাবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে ইতিপূর্বে। এমনকি সংসদ নির্বাচনে দলের বিজয়ীরা শপথ পর্যন্ত নেননি এখনো।

কিন্তু গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে নির্বাচনই যেকোনো রাজনৈতিক দলের অভীষ্ট। নির্বাচনে অংশ না নেয়া ক্ষতির কারণ হয় দলের জন্য। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে বড় ধরনের খেসারত দিতে হয়েছে বিএনপিকে। দলের নেতৃত্বের অবস্থাও তথৈবচ। এর প্রভাব একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও কাটিয়ে উঠতে পারেনি দলটি।

এবার সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে গিয়ে বিএনপি-সমর্থিত অনেক উপজেলা চেয়ারম্যান বিপাকে পড়েছেন। তারা নিজ পদ থেকে পদত্যাগ করে ভোটে নেমেছিলেন। তাদের অনেকের পদত্যাগ ওই সময় গৃহীত হয়নি বলে মনোনয়ন বাতিল হয়। অনেকের ভোটে পরাজয় হয়েছে। কিন্তু তারা আছেন দোদুল্যমানতায়। তাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে কি না তা যেমন স্পষ্ট নয়, আবার তারা এখন দায়িত্ব পালন করতে পারবেন কি না তা নিয়েও আছে সংশয়।

স্থানীয় সরকারে বিএনপির যতটুকু প্রতিনিধিত্ব ছিল, সংসদ নির্বাচন সামলাতে গিয়ে তা-ও শেষ। তার ওপর তারা যদি আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে না যায় তাহলে রাজনীতিতে বা স্থানীয় সরকারে তাদের যে কোনো অবস্থানই থাকবে না, এটা সহজেই বলা যায়।

একই অবস্থা ঢাকা উত্তর সিটির ক্ষেত্রে। মেয়র আনিসুল হকের মৃত্যুর পর ঘোষিত (পরে স্থগিত) উপনির্বাচনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের প্রক্রিয়ায় হাত দিলেও এবার কোনো আগ্রহ দেখাল না। এটি দলের সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক রাজনীতিচর্চার অন্তরায় হিসেবে একসময় সামনে আসবে বলে অনুমান করি।

নির্বাচনে জয়-পরাজয় থাকবেই। কিন্তু কারচুপি কিংবা পরাজয় হবে এমন চিন্তায় নির্বাচন থেকে দূরে থাকা কোনো কাজের কথা নয়। বরং বিএনপির উচিত হবে, আসন্ন উপজেলা ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে অংশ নেওয়া।

পাশাপাশি জনগণের ভোটের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী সদস্যদের সংসদে যাওয়া সুবিবেচিত হবে বলে আমরা মনে করি। ভোটাররা তাদের প্রতিনিধি হিসেবে বিএনপি ও জোটের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছে। তারা যদি এখন সংসদে না যান, তাহলে ওই এলাকার মানুষ যে আশা নিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচন করেছেন, তার প্রতি অবজ্ঞা দেখানো হবে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এলাকার ভোটারদের আরেকটি উপনির্বাচনের সামনে ফেলা দেয়া হবে। তাদের সময় আর জনগণের অর্থ অপচয়ের বিষয়টি তো আছেই।

গণতান্ত্রিক রাজনীতির সৌন্দর্য রক্ষায় বিএনপির উচিত হবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেওয়া। জনগণের রায়ের প্রতি আস্থা রাখা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজপাট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা