মেয়রের নাম ভাঙিয়ে নেতার চাঁদাবাজি

ইফতেখার রায়হান, টঙ্গী (গাজীপুর)
 | প্রকাশিত : ২৫ জানুয়ারি ২০১৯, ০৯:০২

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের নাম ভাঙিয়ে টঙ্গীতে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত আবদুল আলিম ৫৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক।

নিজেকে মেয়রের ঘনিষ্ঠজন পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করে আবদুল আলিম রাতারাতি বিপুল অর্থ-সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তিনি সরকারি জমিতে ঘর তুলে বিক্রি ও ফুটপাতের দোকানিদের কাছ থেকে নিয়মিত টাকা তোলেন বলেও তথ্য রয়েছে।

অভিযোগ আছে, টঙ্গীর মিলগেট তালতলা সড়কের দুই পাশের সরকারি জায়গায় বেশ কয়েকটি কাঁচা-পাকা ঘর তুলে বিক্রি করেছেন আলিম। এসব ঘর প্রতি বর্গফুট এক হাজার টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

টঙ্গী-কালীগঞ্জ সড়কের স্টেশন রোড এলাকায় সড়কের পাশের ফুটপাতের ফল বাজার ও বিভিন্ন দোকান থেকে প্রতি সপ্তাহে ২০০ টাকা করে চাঁদা তোলা হয়। স্থানীয় ‘রেন্ট-এ কার’ ব্যবসায়ী স্বপন, ফলপট্টির মেহেদী ও শাহীন নামের তিনজন এই টাকা তোলেন বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা সবাই আলিমের ঘনিষ্ঠজন হিসেবেই পরিচিত।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ফল ব্যবসায়ী জানান, সিটি নির্বাচনের পর ফুটপাতের দোকানগুলো উচ্ছেদ করা হয়। পরে দোকান বসিয়ে দেওয়ার কথা বলে প্রত্যেক দোকানির কাছ থেকে সিটি করপোরেশনের নামে সপ্তাহে ২০০ টাকা ধার্য করে দেন আবদুল আলিম।

ওই ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, দোকান উডাইয়া দিলে না খাইয়া থাকতে হইব। তাই বাধ্য হয়ে টাকা দিতে অয়।’

চাঁদা তোলার কথা স্বীকারও করেছেন ফল ব্যবসায়ী মেহেদী। বলেন, ‘ফুটপাতে দোকান বসলে চাঁদা দিতে হইব, এটাই নিয়ম! আলিম সাহেবের সাথে সিটি করপোরেশনের মেয়র আর কর্মকর্তাদের ভালো সম্পর্ক। তাই সপ্তাহে তাদের জন্য একটা খরচ দেওয়া লাগে।’

তবে আওয়ামী লীগের নেতা আবদুল আলিম সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি কোনো সরকারি জায়গায় ঘর তুলে ভাড়া বা বিক্রি করি নাই। আর ফুটপাতের দোকান থেকেও আমি কোনো টাকা নিই না। এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।’

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কে এম জহুরুল আলম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নিয়মিত অবৈধ স্থাপনা ও দোকানপাট উচ্ছেদ করা হয়। কিন্তু উচ্ছেদের পর সেগুলো আবার গড়ে ওঠে। তবে এসব অবৈধ স্থাপনা ও দোকান থেকে সিটি করপোরেশনের কোনো কর্মকর্তা আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেন, এমন কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি।’

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ জানানো হলে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘যদি কোনো কর্মকর্তার আর্থিক সুবিধা গ্রহণের প্রমাণ দিতে পারেন, তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

‘যদি আওয়ামী লীগের কোনো নেতা অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ ও চাঁদা আদায় করে থাকেন, তাহলে বিষয়টি মেয়র মহোদয়কে অবগত করেন। আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।’ গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম দেশের বাইরে থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :