কুষ্টিয়ায় ৫০টি সরকারি গাছ কেটে নেয়ার অভিযোগ
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সবুজ বনায়ন কর্মসূচির প্রায় অর্ধশত সরকারি গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে বন বিভাগ বলছে, এগুলো তাদের গাছ নয়। যদিও এলাকাবাসী ও অভিযুক্তদের দাবি গাছগুলো বন বিভাগের সবুজ বনায়ন কর্মসূচির।
গাছ কাটার বিষয়টি জানাজানি হলে এর সঙ্গে জড়িতরা গাছের গুঁড়ি উপড়ে ফেলার চেষ্টা করে। জনতা তাদের দুই সদস্যকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
দৌলতপুর উপজেলার তালবাড়ীয়া এলাকার বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি আমার তামাকের ক্ষেতে কাজ করছিলাম। এমন সময় কালিদাসপুর এলাকার খুদি, শফি, আব্দুল্লাহসহ বেশ কয়েকজন সড়কের সরকারি গাছ কাটতে থাকেন। তারা আমার সামনেই চার-পাঁচটি গাছ কেটে নিয়ে যান। এর মধ্যে বাবলা, শিশু, নিমসহ মোটা মোটা গাছ ছিল।
শফিকুল বলেন, আমরা কোনো ঝামেলায় জড়াতে চাই না। যার কারণে বাধা দিইনি। আর এরা এলাকার প্রভাবশালী।
আরেকজন প্রত্যক্ষদর্শী আশরাফুল ইসলাম জানান, আমি দেখি আব্দুল্লাহ, আমজাদসহ বেশ কয়েকজন মিলে সরকারি বনায়নের গাছ কাটছে। আমি তাদের বাধা দিলে তারা জানান, সরকারি গাছের মার্কিং করার লেবার খরচের জন্য এগুলো কাটা হচ্ছে। তবে মার্কিং করার জন্য এসব গাছ কাটার কোনো অনুমতি রয়েছে কি না জানতে চাইলে আব্দুল্লাহ বলেন, ‘মামু তুমি বাধা দিও না। উপর থেকে সব পাস করা আছে।’
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, তালবাড়ীয়া-চেংগাড়া রাস্তায় দুই ধারের বাবলা, শিশু, নিমগাছসহ মূল্যবান অর্ধশতাধিক গাছ কেটে নেয়া হয়েছে। যেগুলোর বাজারমূল্য প্রায় আড়াই লাখ টাকা।
এ ব্যাপারে আব্দুল্লাহ জানান, যে গাছগুলো কেটেছি তা বন কর্মকর্তাদের গাছ মার্কিংয়ের লেবার খরচের জন্য। গাছগুলো বনবিভাগের সড়কের বনায়ন কর্মসূচির। সরকারি গাছ সরকারি লোকের টাকার জন্যই কেটেছি।
দৌলতপুর উপজেলা বন কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম বলেন, গাছগুলো আমাদের না। আমাদের গাছগুলো মার্কিং করা আছে। এগুলো কাদের গাছ আমি জানি না।
দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার ঢাকা টাইমসকে বলেন, আমি শুনেছি কোনো গাছ কাটা হয়নি। বন বিভাগের গাছের ডাল কেটেছে তামাক চাষিরা।
এদিকে সরকারি গাছ কাটার বিষয়টি জানাজানি হলে গত মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) গভীর রাতে গাছ কর্তনকারীরা গাছের গুঁড়ি তুলে প্রমাণ নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করেন। এসময় স্থানীয়রা বিশু ও নাসির নামের দুইজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, কাটা গাছের গুঁড়ি তোলার দায়ে দুইজনকে স্থানীয় জনতা আটক করে পুলিশে দিয়েছে। তারা বর্তমানে থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।