ঢিলেমি ছাড়তে হবে নগর কর্তৃপক্ষকে
যথাযথ তদারকি না থাকলে একটা পরিবারেও উল্টাপাল্টা কাজ হয়ে থাকে। সিটি করপোরেশনের অভিযানেও তেমনটাই লক্ষ করা গেছে। ঢাকার মতো একটা আধুনিক শহরের পরিচালনায় ঢিলেমি ছেড়ে সিটি করপোরেশনের সঠিকভাবে কাজ করা উচিত। মূলত তাদের কাজের ঢিলেমির জন্য সড়ক-ফুটপাত দখল হয়ে যায়।
তাদের যে কার্যক্রম, তারা যেন সেটা সঠিকভাবে প্রতিপালন করে। এর কোনো বিকল্প থাকার কথা নয়। এর ব্যত্যয় ঘটলে সামগ্রিকভাবে পরিস্থিতি একটা ভারসাম্যহীনতার দিকে চলে যায়। এতে করে সুযোগসন্ধানী সুবিধাভোগী ছাড়া সেটা আর কারও জন্যই মঙ্গলজনক হয় না।
উচ্ছেদ অভিযানে ব্যর্থতার বিষয়ে প্রায়ই তারা সীমাবদ্ধতা ও অসহায়ত্বের কথা তোলে। কিন্তু এটা বললে তো আর কিছু করার থাকে না। প্রশাসন চলবে শক্ত হাতে। ঢিলেমি দিলেই এটা অব্যবস্থার দিকে চলে যাবে। এটা শিক্ষা খাতে হোক, স্বাস্থ্য খাতে হোক বা নগর পরিচালনের ক্ষেত্রেই হোক। তারা যদি মনে করে আমি ঢিলেমি দিয়ে চলব, যা হবার হোক অথবা ভাবে এটা ক্ষমতার বাইরে, তাহলে তো সঠিক কাজটা হবে না। প্রধানমন্ত্রী যেখানে তাদের বলেছেন, ঠিকভাবে কাজ করেন, সেখানে তাদের আর কিসের ভয়?
রাজধানীতে সুপরিকল্পিত নগরায়নে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) একটা মহাপরিকল্পনা রয়েছে। এ পরিকল্পনার আওতায় রাজধানীর উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা পালন করার কথা তাদের। সিটি করপোরেশনেরও এ রকম একটা মহাপরিকল্পনা থাকা উচিত। সেই পরিকল্পনামাফিক করপোরেশনের আওতাধীন এলাকা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। নগরীর শ্রীবর্ধনে এবং অবৈধ স্থাপনা অপসারণে সিটি করপোরেশনকে উচ্ছেদ অভিযানও চালাতে হবে সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী। তবে সেটা হতে হবে নিয়মিতভাবে। আজ করলাম, কাল বন্ধ রাখলাম, আবার হঠাৎ করে একদিন উচ্ছেদ অভিযানে নেমে পড়লামÑবিষয়টা এমন হলে হবে না। পর্যবেক্ষণ, মনিটরিং এবং দেখভাল করার যে বিভাগগুলো করপোরেশনের আছে, তাদের এ বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রেখে যথাযথভাবে কাজটা করতে হবে।’
সবাই বলে যে হকাররা ফুটপাত দখল করে। এরা আসলে ছোট ব্যবসায়ী। ফুটপাতে সাধারণত অস্থায়ীভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য করে থাকে তারা। তবে অনেকে আছে, হকারদের ব্যবহার করে অস্থায়ী স্থাপনা থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ উপার্জন করে। একটা ছোট চায়ের দোকান এক থেকে দুজন লোক দিয়ে চলে অথবা তার সঙ্গে দু-একজন সহকারীও রাখা হয়। মাস শেষে দেখা যায়, লাখ টাকা অথবা তারও বেশি আয় হয় এ দোকান থেকে। এদের কারও কারও ধানমন্ডির মতো অভিজাত আবাসিক এলাকায় ফ্ল্যাটও রয়েছে। এটা কী প্রক্রিয়ায় হয়, সেটা বুঝতে হবে।
লেখক: নগর পরিকল্পনাবিদ