বৃদ্ধ দম্পতি হত্যা: খুনের ধরনে বিস্মিত পুলিশ

প্রকাশ | ২৭ জানুয়ারি ২০১৯, ১৫:৫৬

জাকির হোসেন, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিবেদক

নীলফামারীর সৈয়দপুরে বৃদ্ধ স্বামী-স্ত্রীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। দুই জনের দেহই ছিল ক্ষতিবিক্ষত। নৃশংসতা দেখে পুলিশও বিস্ময় প্রকাশ করা হয়েছে।

এদের মধ্যে নজরুল ইসলামকে হত্যা করা হয়েছে পায়ের রগ, গলা কেটে। তার নাকও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে নেওয়া হয়েছে। তার স্ত্রী সালমা বেগমের গলা কেটে ফেলা হয়েছে।

নিহতরা হলেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী নজরুল ইসলাম ও তার জীবন সঙ্গীনি সালমা বেগম। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ছয় জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে।

রবিবার সকালে উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের বালাপাড়া গ্রামে একটি গবাদি পশুর খামার থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, অবসর নেওয়ার পর পাঁচ বছর আগে সৈয়দপুর শহরের পুরাতন বাবুপাড়া এলাকায় হাজী আসলাম নামে একজনের জমি ইজারা নিয়ে ভেড়ার খামার গড়ে তোলেন। সম্প্রতি ওই জমিটি ছেড়ে দিতে চাপ দিয়ে আসছিলেন আসলাম। তবে নাকচ করেন নজরুল ইসলাম। এনিয়ে দুই পক্ষে বিরোধ চলে আসছিল।

গত ২০ জানুয়ারি নজরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী সালমা বেগম ওই খামারে যান এবং কয়েকদিন থেকে সেখানেই অবস্থান করছিলেন। রাতে দুর্বৃত্তরা খামারে ঢুকে নজরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী সালমা বেগমকে হত্যা করে। এ ঘটনা দেখে ফেলায় খামারের দাড়োয়ান রফিকুল ইসলাম বাধা দেয়ায় তাকেও বেধড়ক এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে তারা।

সকালে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে খামারে তিন জনের রক্তাক্ত নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখে। এদের মধ্যে দাড়োয়ান রফিকুলকে জীবিত ছিলেন। তাকে তাৎক্ষণিক তারাগঞ্জ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

খবর পেয়ে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার জয়নুল বারী ও নীলফামারী জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরিন, জেলা পুলিশ সুপার আশরাফ হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম গোলাম কিবরিয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

বিভাগীয় কমিশনার জানান, ‘এটি খুবই নৃশংস ঘটনা। অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকা- ঘটানো হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে খামারের জায়গার মালিক হাজী আসলাম, তার ছেলে লেবু, সজল ও এলাকার আব্দুর রশিদ, আব্দুল আজিজসহ কাজের মেয়ে রহিমাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে সৈয়দপুর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’   

নীলফামারী জেলা পুলিশ সুপার আশরাফ হোসেন বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।’