লক্ষ্মীপুরে ভয়ংকর হয়ে উঠছে সড়ক

আব্বাছ হোসেন, লক্ষ্মীপুর
| আপডেট : ২৭ জানুয়ারি ২০১৯, ১৮:২৪ | প্রকাশিত : ২৭ জানুয়ারি ২০১৯, ১৮:২৩

গত কয়েক দিনে লক্ষ্মীপুরে সড়কে মৃত্যুর হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। আট দিনে জেলার বিভিন্ন এলাকায় সড়কে ঝরেছে ১২ প্রাণ। এর মধ্যে একটি দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ছয়জন মারা গেছেন। এসব দুর্ঘটনার জন্য বিশেষজ্ঞরা দায়ী করছেন গাড়ির অনিয়ন্ত্রিত গতিকে। চালকের অদক্ষতা এবং চালকের সহকারী দ্বারা গাড়ি চালানো এসব দুর্ঘটনার বড় কারণ বলে জানিয়েছে ট্রাফিক বিভাগ। সড়কে বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে বিআরটিএকে আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

গত আট দিনের খবর বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২৪ জানুয়ারি পৌর শহরের দক্ষিণ তেমুহনিতে অফিসার্স ক্লাবের সামনে পিকআপ ভ্যানের চাকার পিষ্ট হয়ে মিজানুর রহমান রুবেল নামের এক স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু হয়। ২৩ জানুয়ারি লক্ষ্মীপুর-ঢাকা মহাসড়কের পশ্চিম মান্দারী এলাকায় ট্রাক-সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংষর্ষে একই পরিবারের ছয়জনসহ সাতজন নিহত হন।

২১ জানুয়ারি সকালে লক্ষ্মীপুরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নিহত ও অন্তত ৩০ জন আহত হন। লক্ষ্মীপুর-ঢাকা মহাসড়কের যাদৈয়া নামক এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ১৯ জানুয়ারি সকালে রামগতি-লক্ষ্মীপুর সড়কের নুড়ি গাছতলা এলাকায় লেগুনা ও পিকআপ ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে আলাউদ্দিন স্বপন নামে এক পথচারী নিহত হন। ১৮ জানুয়ারি সকালে লক্ষ্মীপুর মজুচৌধুরীরহাট সড়কে ট্রাকচাপায় মোটর সাইকেল আরোহী গৃহবধূ সুমি নিহত হন। ১৭ জানুয়ারি দুপুরে লক্ষ্মীপুর-মজুচৌধুরীর হাট সড়কে পিকআপ ভ্যানচাপায় ইদ্রিস মিয়া নামে এক বালু শ্রমিক নিহত হন।

লক্ষ্মীপুর জজ কোর্টের আইনজীবী মোশারফ হোসেন মিঠু জানান, শুধু ছোট যানবাহনে দুর্ঘটনা ঘটছে তা নয়, ভারী যানবাহনেও প্রতিদিন জেলার কোথাও না কোথাও দুর্ঘটনা ঘটছে। তিনি মনে করেন, এসব ঘটনায় চালকদের বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে ভুক্তভোগীদের। দায়ী চালকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে কোনো মায়ের বুক এভাবে খালি হবে না।

লক্ষ্মীপুর ট্রাফিক সার্জেন্ট ইব্রাহিম বলেন, চালকদের মধ্যে ট্রাফিক আইন না মানার প্রবণতা বেশি। এ ছাড়া হেলপার দিয়ে গাড়ি চালানো, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল বা হেডফোন ব্যবহার, মাদক সেবন করে গাড়ি চালানো, বিপজ্জনক ওভারটেকিং এবং পথচারীদের অসতর্কতায়ও দুর্ঘটনা ঘটছে।

নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের জেলা সভাপতি কার্তিক সেনগুপ্ত ঢাকা টাইমসকে বলেন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে আমরা আন্দোলন করে যাচ্ছি। এরপরও সড়কের অবস্থা পাল্টায়নি। যানবাহনের নিয়ন্ত্রণহীন গতি থামিয়ে দিচ্ছে মানুষের জীবনের গতি। সড়কে এখন প্রাণ হাতে নিয়েই যাত্রা করতে হয় মানুষকে। আমাদের সংগঠন জেলায় দুর্ঘটনা রোধে বিভিন্ন সময় জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়েছে এবং চালাচ্ছে। অনিয়ন্ত্রিত গাড়ির গতিরোধে ট্রাফিক বিভাগের ভূমিকাই মুখ্য।

জেলা ট্রাফিক পুলিশের টিআই মামুনুর রশিদ ঢাকা টাইমসকে বলেন, লাইসেন্স ও ফিটনেসবিহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে আমাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত আছে। সড়ক দুর্ঘটনার অধিকাংশই ঘটছে অদক্ষ চালকদের যথাযথ প্রশিক্ষণের অভাবে। এসব বিষয় দেখভাল করা ও চালকদের সচেতন করার দায়িত্ব বিআরটিএ’র। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

(ঢাকাটাইমস/২৭জানুয়ারি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :