গৌরীপুরে শহীদ হারুন দিবস পালিত

ব্যুরো প্রধান, ময়মনসিংহ
 | প্রকাশিত : ২৭ জানুয়ারি ২০১৯, ২১:২১

উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে ২৭ জানুয়ারি শহীদ হন হারুন দিবস পালিত হয়েছে। রবিবার দিবসটি পালন উপলক্ষে প্রভাতফেরী, হারুন স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পন, মিলাদ-দোয়া মাহফিল দরিদ্র ভোজ, মানববন্ধন ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

১৯৬৯ সালে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ১১ দফা আন্দোলনের সময় ঢাকা নবকুমার ইনস্টিটিউটের ছাত্র মতিউর রহমান পুলিশের গুলিতে শহীদ হলে সারাদেশে ছাত্র আন্দোলনের নতুন মাত্রা তুঙ্গে উঠে। আর এই বিক্ষোভের জের ধরেই ২৭ জানুয়ারি সোমবার সকাল ১১টায় ময়মনসিংহের গৌরীপুর শহরে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে তৎকালীন থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ও কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি ফজলুল হকের নেতৃত্বে গৌরীপুর কলেজ থেকে ছাত্ররা একটি বিশাল মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের মধ্যবাজার ধানমহালের কাছে আসা মাত্রই তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক এম, এ সামাদের নির্দেশে আন্দোলনরত ছাত্রদের মিছিলের উপর আয়ুব শাহীর দাঙ্গা পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। ওই সময় মিছিলের অগ্রভাগে থাকা পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই শহীদ হন ছাত্রলীগ নেতা গৌরীপুর কলেজের বাণিজ্য বিভাগের ২য় বর্ষের মেধাবী ছাত্র আজিজুল হক হারুন।

শহীদ হারুনের বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার চন্ডীপাশা ইউনিয়নের ছামারুল্লাহ্ গ্রামে। পিতা মৃত মিয়া বক্স, মাতা খাতুন্নেছা। শহীদ হারুনের ছয় ভাই, তিন বোন। তার মাঝে দুই ভাই ও এক বোন বেঁচে আছেন। নান্দাইল-আঠারবাড়ি সড়কের পাশেই ৬৯’র গণ-আন্দেলনে শহীদ আব্দুল আজিজ হারুন চিরনিদ্রায় শুয়ে আছেন। তার জরাজীর্ণ কবরটি এলাকার লোকজনের সহায়তায় কিছু ইট দিয়ে বেষ্টনী করে টাইলস রাখা হলেও এখন আর কেউ এর খোঁজ রাখে না।

হারুনের ছয় ভাইয়ের মধ্যে জীবিত দুই ভাই- আব্দুল হামিদ ও শফিকুল আলম চাঁন মিয়া। হারুনের ছোট ভাই শফিকুল আলম চাঁন মিয়া জানান, ওই সময়ে তিনি পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে গৌরীপুরে গিয়ে জানতে পারে পুলিশ হারুনের লাশ অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গেছে। অবশেষে তিন দিন পর ময়মনসিংহ থেকে মুচলেকা দিয়ে ভাইয়ের লাশ নান্দাইলে নিয়ে আসে এবং পুলিশি প্রহরায় দাফন করা হয়।

হারুনের আরেক ভাই চান বলেন, আমার ভাইয়ের মৃত্যুর পরদিন ঢাকায় আসাদসহ আরো কয়েকজন পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারায়। কিন্তু আসাদের মৃত্যুর ঘটনাটি জাতীয়ভাবে স্থান পেলেও আমার ভাইয়ের রেখে যাওয়া পরিবারের খোঁজ-খবর স্থানীয়ভাবেও কেউ নেয়নি। হারুনের কলেজ বন্ধু নান্দাইলের কূল ধূরুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইছহাক আকন্দ জানিয়েছেন, হারুন ও তিনি গৌরীপুর থানার ২ নং ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান মরহুম গুঞ্জর আলীর সহায়তায় ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে একসাথে থেকে গৌরীপুর কলেজে লেখা পড়া করতেন। ঘটনার দিন ২৭ জানুয়ারি পুলিশের দেওয়া ১৪৪ ধারা ভেঙে ছাত্ররা যখন শহরে মিছিল বের করে তখন মিছিলের সামনে ছিল হারুন। ফলে অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে হারুন গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হয়।

হারুনের পরিবার শহীদ হারুনের জন্য সরকারের কাছে যথাযথ মূল্যায়নের দাবি জানান।

(ঢাকাটাইমস/২৭জানুয়ারি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :