সেন্সর বাদ, আসছে সার্টিফিকেট

প্রকাশ | ২৯ জানুয়ারি ২০১৯, ১৮:০৪ | আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০১৯, ১৮:১৩

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

সেন্সর যুগ শেষে ঢাকাই সিনেমা প্রবেশ করতে চলেছে সার্টিফিকেট যুগে। চলচ্চিত্রকর্মীদের দাবির মুখে বদলে ফেলা হচ্ছে সেন্সর সিস্টেম। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের নাম পরিবর্তিত হয়ে ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড’ নামকরণের প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যে। ঢাকা টাইমসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সেন্সর বোর্ডের সভাপতি নাসিরুদ্দিন দিলু।

তিনি বলেন, ‘সারা পৃথিবীতেই চলচ্চিত্রে সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। একেকটি সিনেমা একেকটি বয়সের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়। নতুন এই নিয়মের মধ্য দিয়ে আমাদের এখানেও তাই হবে।’। সেন্সরে জমা দেওয়ার আগে চলচ্চিত্রের প্রচারণার জন্য ট্রেইলারও সেন্সর বোর্ড থেকে অনুমোদন নিতে হবে। সেক্ষেত্রে চলচ্চিত্রটি আদৌ নির্মাণ হয়েছে কি না তার প্রমাণ দিতে হবে। পাশাপাশি এবার চলচ্চিত্রে ‘গ্রেডিং সিস্টেম’ চালু করা হচ্ছে; চলচ্চিত্রের নানা দৃশ্য শিশুমনে ‘কুপ্রভাব’ ফেলে এমন অভিযোগের ভিত্তিতেই নীতিমালায় বিষয়টি যুক্ত করা হচ্ছে বলেও যোগ করেন দিলু।

আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি সেন্সর বোর্ডের সদস্যদের সঙ্গে আরেকটি বৈঠকে এ আইন নিয়ে পর্যালোচনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে জানিয়ে সেন্সর বোর্ডের আরেক সদস্য ও মধুমিতা সিনেমা হলের কর্ণধার ইফতেখার নওশাদ বলেন , ‘সেন্সর বোর্ডের নাম ও কার্যক্রম নিয়ে চলচ্চিত্র কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে বলে কথা বলে আসছিলেন। তারা সেন্সরের পরিবর্তে সার্টিফিকেট চেয়েছেন। তাদের আপত্তি আমলে নিয়ে সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর উদ্যোগে গত বছরের শুরুতে আইনটির খসড়া তৈরি করা হয়। হাছান মাহমুদ তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর এবারই প্রথম আলোচনায় উঠছে আইনটি। আশা করছি খুব শিগগিরই এটি পাস হয়ে যাবে।’

নাম পরিবর্তনের যৌক্তিকতা বর্ণনা করতে গিয়ে ইফতেখার নওশাদ বলেন, ‘সেন্সর বোর্ড বলে কিছু পৃথিবীর কোথাও নেই। সেন্সর শুনলেই মনে হয় আমাদের কাজ সিনেমা কেটে দেওয়া। কিন্তু আমরা তো মূলত সার্টিফিকেট প্রদান করে থাকি। যেহেতু আমাদের কাজ সার্টিফিকেট প্রদান করা সেহেতু নামেও পরিবর্তন আসা উচিত’।

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান নীতিমালায় সিনেমার পোস্টার, ডায়াগ্রাম, স্কেচ, হ্যান্ডবিল প্রিন্ট বা ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারের জন্য বোর্ডের অনুমোদনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এর ব্যত্যয় ঘটলে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, অথবা দশ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।’

 এদিকে নাম পরিবর্তনের এ সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন ঢাকাই সিনেমার তারকারা। একসময়কার জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ও ঢাকা ১৭ আসনের এমপি আকবর হোসেন পাঠান ফারুক বলেন, ‘সরকারের এই সিদ্ধান্তকে আমি সাধুবাদ জানাই। একটি প্রতিষ্ঠানের নাম অনেক বড় ভূমিকা রাখে। আমার কাছে এতদিন সেন্সর বোর্ড শুনলেই মনে হতো অনেক মানুষ বসে আছেন সিনেমা দেখবে বলে। সিনেমা দেখা শেষে তারা কাচি দিয়ে সেটা কাটবে। নতুন নামকরণের পর মনে হবে একদল মানুষ সিনেমা দেখা শেষে একটা সার্টিফিকেট তুলে দেবে পরিচালকের হাতে। এটা অবশ্যই সিনেমার মানুষদের জন্য অনেক বড় একটা প্রাপ্তি।’

ঢাকাই সিনেমার সুপারস্টার শাকিব খান বলেন, ‘সিনেমার জন্য ভালো কিছু হলে ভালো লাগে। আমার কাছে মনে হচ্ছে এই নাম পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে কর্মপরিধিও বদলাবে। সেন্সর বোর্ডে অনেক ধরনের জটিলতা আছে এখনো। এসব কিছুও কেটে যাবে বলে আশা করছি।’

ঢাকাটাইমস/২৯জানুয়ারি/আরআর