অর্থপাচার: ক্রিসেন্টের চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ৩০ জানুয়ারি ২০১৯, ২০:১০ | প্রকাশিত : ৩০ জানুয়ারি ২০১৯, ১৭:৫০

বিদেশে ৯১৯ কোটি টাকা পাচারের মামলায় ক্রিসেন্ট গ্রুপের তিন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলার পরই গ্রেপ্তার হয়েছেন চেয়ারম্যান এমএ কাদের।

বুধবার রাজধানীর চকবাজার থানায় মামলার পর শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর কার্যালয় থেকে আটক করা হয় কাদেরকে। এর আগে জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তাসহ মোট ১৭ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়।

সংবাদ সম্মেলন করে এসব বিষয় জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। তিনি জানান, ক্রিসেন্ট গ্রুপের তিন প্রতিষ্ঠান ক্রিসেন্ট লেদার ৪২২ কোটি ৪৬ লাখ, রিমেক্স ফুটওয়্যার ৪৮১ কোটি ২৬ লাখ টাকা ও ক্রিসেন্ট ট্যানারিজ ১৫ কোটি ৮৪ লাখ বিদেশে পাচার করেছে। শুল্ক গোয়েন্দার তদন্তে বিষয়টি প্রমাণ হয়েছে।

এ ঘটনায় ক্রিসেন্ট গ্রুপের চার পরিচালকসহ জনতা ব্যাংকের ১৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে আছেন রিমেক্স ফুটওয়্যারের চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক লিটুল জাহান মিরা, ক্রিসেন্ট লেদার প্রোডাক্টস ও ক্রিসেন্ট ট্যানারিজের চেয়ারম্যান এমএ কাদের এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুলতানা বেগম মনি।

এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, ক্রিসেন্ট লেদার প্রোডাক্টস থেকে জনতা ব্যাংকের ইমামগঞ্জ করপোরেট শাখা যে রপ্তানি বিল কেনে, তার মধ্যে চার মাসে টাকা ফেরেনি, এমন বিলের সংখ্যা ২১৫টি এবং টাকার পরিমাণ ৪২৮.৫৩ কোটি টাকা।

২০১৮ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ২১৫টি বিলের মধ্যে মাত্র তিন বিলের বিপরীতে ৫.৯৭ কোটি টাকা প্রত্যাবাসিত হয়েছে। ফলে ২১২টি বিলের বিপরীতে ৪২২.৪৬ কোটি টাকা অপ্রত্যাবাসিত রয়েছে।

এনবিআরের তদন্তে উঠে এসেছে কোম্পানি এবং ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগসাজসে ৪২২.৪৬ কোটি টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা বিদেশে পাচার হয়েছে।

এছাড়া রিমেক্স ফুটওয়্যারেরও জনতা ব্যাংকের ইমামগঞ্জ শাখা হতে ২৪০টি বিলের বিপরীতে ৪৮১.২৬ কোটি টাকা অপ্রত্যাবাসিত রয়েছে।

জনতা ব্যাংকের যেসব কর্মকর্তা আসামি হয়েছেন, তারা হলেন, সিনিয়র অফিসার (বরখাস্ত) আবদুল্লাহ আল মামুন, মো. মনিরুজ্জামান, মো. সাইদুজ্জাহান, প্রিন্সিপাল অফিসার (বরখাস্ত) রুহুল আমিন, মগরেব আলী, খায়রুল আমিন, এজিএম (বরখাস্ত) আতাউর রহমান সরকার, ডিজিএম মো. ইকবাল, এ কে এম আসাদুজ্জামান, কাজী রইস উদ্দিন আহমেদ, জিএম (বরখাস্ত) মো. রেজাউল করিম, ডিএমডি (বরখাস্ত) ফখরুল আলম এবং বর্তমানে সোনালী ব্যাংকের ডিএমডি জাকির হোসেন।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, এছাড়াও আরো কিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুসারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। মাদকের বিরুদ্ধেও একই অবস্থান। মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও চোরাচালান আইনে তাৎক্ষণিক বিচার করা হবে। মোবাইল কোর্টের পাশাপাশি নিয়মিত কোর্টও চলবে।’ দেশে বিনিয়োগের পরিবেশ রয়েছে, রপ্তানির অবারিত সুযোগ, তারপরও কেন টাকা পাচার হচ্ছে- এমন প্রশ্নে এনবিআর প্রধান বলেন, ‘যারা টাকা পাচার করেন, তারা ভোগ করতে পারেন না। আমরা আগে শুনতাম সুইস ব্যাংকে টাকা রাখার ঘটনা। কিন্তু তারাও টাকা ফেরত দেয় না। অথচ অনেকে দেশের ব্যাংকের টাকা লুট করে নিয়ে যাচ্ছে।’

১০-১২ কোম্পানির পাচারের তথ্য এনবিআরে

এনবিআর প্রধান জানান, দেশে ১০-১২টি কোম্পানি টাকা পাচারের তথ্য এনবিআরের কাছে রয়েছে। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক করে তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘টাকা ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক ফার্ম নিয়োগ দেওয়ার কাজ চলছে। ইতিমধ্যে বিদেশি কয়েকটি ফার্মের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে বলা হয়, মাদক কারবারির সঙ্গে জড়িতদের সম্পদের হিসাব নেওয়া হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

অপরাধ ও দুর্নীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

অপরাধ ও দুর্নীতি এর সর্বশেষ

পল্লবীতে পাভেল হত্যা: নেপথ্যে মাদক ব্যবসা, গ্রেপ্তার ৮

মাদক-ইয়াবা কারবারে বদির দুই ভাইয়ের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে সিআইডি

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের হটলাইন থেকে গ্রাহককে ফোন, অ্যাকাউন্টের টাকা হাওয়া

রাজধানীতে মাদকবিরোধী অভিযানে আটক ৮, মামলা ৬

ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি গ্রেপ্তার 

এটিএম বুথের প্রহরী হত্যা: টাকা লুটের উদ্দেশ্যে নাকি ব্যক্তিগত কারণ? কী বলছে পুলিশ?

রাজধানীতে এটিএম বুথের নিরাপত্তাকর্মীকে কুপিয়ে হত্যা

কেএনএফকে সহযোগিতা, বান্দরবান থেকে একজন গ্রেপ্তার

ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের হামলার শিকার সেই চিকিৎসকের মৃত্যু

রাষ্ট্রপতির আত্মীয় পরিচয়ে প্রতারণা, নিঃস্ব বহু ট্রাভেল ব্যবসায়ী

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :