চিকিৎসক আকাশের ‘আত্মহত্যা’ স্ত্রীর সঙ্গে অভিমানে

প্রকাশ | ৩১ জানুয়ারি ২০১৯, ১৫:০৯

চট্টগ্রাম প্রতিবেদক

চট্টগ্রামের চিকিৎসক মোস্তফা মোরশেদ প্রকাশ আকাশ স্ত্রীর সঙ্গে অভিমান করে আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করছে পুলিশ। তার মৃত্যুর এক ঘণ্টা আগে নিজের ফেসবুক পেজে স্ত্রীকে নিয়ে দেওয়া এক স্ট্যাটাস দেখে এই ধারণা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর।

স্ট্যাটাসটিতে স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে আকাশ লেখেন- ‘ভালো থেকো, আমার ভালোবাসা তোমার প্রেমিকাদের (প্রেমিকদের) নিয়ে।’

বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার দিকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। তখন তার মৃত্যুর কারণ নিয়ে রহস্য তৈরি হয়।

আকাশ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার বরকল এলাকার মৃত আবদুস সবুরের ছেলে। তিনি এমবিবিএস শেষ করে এফসিপিএস পড়ছিলেন।

সঙ্গে আকাশের বিয়ে হয় ২০১৬ সালে। যদিও পরিচয় ২০০৯ সাল থেকেই। তাকে প্রচণ্ড ভালোবাসেন দেখে বন্ধুরা অনেকে ‘বউ পাগলাও’ ডাকত তাকে।

আকাশ লেখেন, বিয়ের আগে তার স্ত্রীর আরেক জনের সঙ্গে সম্পর্কের কথা তিনি জানতে পারেন। তবে দাওয়াত দেওয়া হয়ে গেছে বলে বিয়েটা তিনি লজ্জায় ভাঙেননি। বিয়ের পর স্ত্রী স্ত্রী ভুল বুঝে নতুন করে জীবন শুরুর আশ্বাস দেন আকাশকে।

এর মধ্যে স্ত্রী চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে। আর চলতি বছর সেখানে যাওয়ার কথা ছিল আকাশেরও। এর মধ্যে তিনি জানতে পারে, সেখানেও তার স্ত্রী একটি সম্পর্কে জড়িয়েছেন। নিয়মিত পার্টিতেও যাচ্ছেন। আর এরপর অভিমানী চিকিৎসক পৃথিবী ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

আকাশ ফেসবুকে লেখেন, ‘আমি বারবার বলছি- আমাকে ভাল না লাগলে ছেড়ে দাও কিন্তু চিট করো না মিথ্যা বলো না। আমার ভালোবাসা সবসময় ওর জন্য ১০০% ছিল। আমি আর সহ্য করতে পারিনি। আমাদের দেশে তো ভালোবাসায় চিটিং এর শাস্তি নেই। তাই আমিই বিচার করলাম, আর আমি চির শান্তির পথ বেছে নিলাম।’

‘তোমাদেরও বলছি- কাউকে আর ভালো না লাগলে সুন্দরভাবে আলাদা হয়ে যাও চিট করো না মিথ্যা বলো না। আমি জানি অনেকে বিশ্বাস করবে না এত অমায়িক মেয়ে আমিও এসব দেখে ভালোবেসে ছিলাম। ভিতর বাহির যদি এক হতো। সবাই আমার দোষ দেবে সবকিছুর জন্য তাই ব্যাখ্যা করলাম।’

মার স্বপ্ন পূরণ করতে পারেননি জানিয়ে তার কাছে ক্ষমাও চেয়ে নেন আকাশ। বলেন, ‘তুমি মাফ করে দিও তোমার স্বপ্ন পূরণ করতে পারলাম না। মায়ের ভালোবাসার কখনো তুলনা চলে না।’

হাসপাতালে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে জানা যায়, চিকিৎসক আকাশ শরীরে ইনজেকশন পুশ করে আত্মহত্যা করেছেন। তার শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি।