বরিশালের চরবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়
এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে দুবার কেন্দ্র ফি আদায়!
বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আয়নাল হোসেন প্রবেশপত্র নিতে আসা এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে বাধ্যতামূলক ৩৫০ টাকা আদায় করেছেন। এই টাকা ফরম পূরণের সময়ও নেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
তাদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক কয়েকজন শিক্ষককে নিয়ে সিন্ডিকেট করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে নিজের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন। শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে কোচিং ও প্রাইভেটসহ নানা খাতে টাকা আদায় করছেন।
শনিবার শুরু হওয়া এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে বিদ্যালয়টির ৯০ জন শিক্ষার্থী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাদের বেশ কয়েকজন ও ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা বলেন, ফরম পূরণের সময় জনপ্রতি কেন্দ্র ফিয়ের ৩৫০ টাকাসহ মোট তিন হাজার ২০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা নেওয়া হয়েছে। সে সময় শিক্ষার্থীদের কোনো রশিদ দেওয়া হয়নি। আর সে সুযোগটিই কাজে লাগিয়ে প্রধান শিক্ষক আয়নাল হোসেন প্রবেশপত্র দেওয়ার সময় আবারও কেন্দ্র ফিয়ের নামে ৩৫০ টাকা করে নিয়েছেন।
প্রধান শিক্ষক আয়নাল হোসেন প্রথমে কেন্দ্র ফিয়ের নামে ৩৫০ টাকা আদায়ের কথা অস্বীকার করেন। পরে স্বীকার করে বলেন, ‘ফরম পূরণের সময় কেন্দ্র ফি ৩৫৭ টাকা নেওয়া হয়নি, এখন নেওয়া হচ্ছে। ৩৫০ টাকা বা কেন্দ্র ফিয়ের ৩৫৭ টাকা নয়, ৩০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। বাকি ৫৭ টাকা বিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে সমন্বয় করা হবে।’
বরিশাল শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুস ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘এ ধরনের অনেক অভিযোগ পেয়েছি। তাই ১৭৬টি পরীক্ষাকেন্দ্রের সচিবকে এ খাতে টাকা নিতে নিষেধ করা হয়েছে। এ ধরনের কাজ না করতেও প্রধান শিক্ষকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কোনো প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের অর্থ আদায় হলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ দেওয়ার আহবান জানানো হয়েছে।’
অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও আশ্বস্ত করেন শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান। এলাকার লোকজনের অভিযোগ, ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়টিতে যোগদানের পর থেকেই কোচিং-প্রাইভেট ও নানা খাত দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে আসছেন প্রধান শিক্ষক আয়নাল হোসেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়ানো প্রধান শিক্ষকের জন্য নিষিদ্ধ। তারপরও তিনি নিজ বাসায় প্রাইভেট বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলক কোচিং করার নিয়মও করেছেন তিনি।
অভিযোগ রয়েছে, দশম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থীকে তার বাসায় গিয়ে প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করেছেন আয়নাল হোসেন। তার কাছে প্রাইভেট না পড়লে পরীক্ষায় নম্বার কম দেওয়ার ভয় দেখান তিনি।
(ঢাকাটাইমস/৩১জানুয়ারি/ব্যুরো/এআর)