বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা ঠেকাবে থ্যালাসেমিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ৩১ জানুয়ারি ২০১৯, ২১:০৫ | প্রকাশিত : ৩১ জানুয়ারি ২০১৯, ২০:০২

মরণব্যাধি থ্যালাসেমিয়া থেকে বাঁচতে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বিয়ের আগে বর-কনের রক্ত পরীক্ষা করাতে মত দিয়েছেন দেশি-বিদেশী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। বিয়ের আগে এ রোগের বাহকদের শনাক্ত করা গেলে অর্থাৎ দুজন থ্যালাসেমিয়া বাহক একে অন্যকে বিয়ে না করলে কোনো শিশুই এ রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করবে না।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স (বিসিপিএস) অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত চারদিন ব্যাপী ‘আন্তর্জাতিক থ্যালাসেমিয়া কর্মশালা-২০১৯’ এর সমাপনী দিনে বক্তারা এসব কথা বলেন।

থ্যালাসেমিয়া বংশগত রক্তস্বল্পতাজনিত একটি রোগ। দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ ভাগ অর্থাৎ প্রায় দেড় কোটি নারী-পুরুষ নিজের অজান্তে থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক। বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৮ থেকে ১০ হাজার শিশু থ্যালাসেমিয়া রোগ নিয়ে জন্মায়। ব্যয়বহুল হওয়ায় এ রোগের চিকিৎসা থেকেও বঞ্চিত হন অনেকে।

কর্মশালায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘থ্যালাসেমিয়া আমাদের সমাজের জন্য একটা বোঝা। এটি নন কমিউনিকেবল ডিজিজ। জিনগত এই রোগটির বর্তমানে আমাদের দেশের প্রায় দশ ভাগ শিশু বহন করছে। যে শিশুগুলো এই বাহক বয়ে বেড়াচ্ছে সেটা কিন্তু তারা ইচ্ছে করে করেনি। তাদের বাবা-মা একই বাহক বহন করায় তাদের এই রোগে পড়তে হয়েছে।’

‘দেশে থ্যালাসেমিয়া যেন বিস্তৃতি না পায় সে জন্য সচেতনতা ছড়িয়ে দেবে সরকার। আমরা নিরাপদ রক্ত সঞ্চালন করার মাধ্যমে থ্যালাসেমিয়াকে নিয়ন্ত্রন করে সমাজকে মুক্তি দেব।’

এনএইচ ফাউন্ডেশন প্রফেসর এন ডাল্টন বলেন, ‘বাংলাদেশ বিভিন্ন সেক্টরে বেশ উন্নতি সাধন করছে। বিশেষ করে স্বাস্থ্য খাতে আগের চেয়ে অনেক এগিয়ে গেছে। মরণব্যাধি থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধ করা বাংলাদেশের জন্য বিশেষ গুরত্বের। কারণ এটা প্রতিরোধ না করা গেলে অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্থ হবে। তাছাড়া থ্যালাসেমিয়া রোগের চিকিৎসা খুব ব্যয়বহুল। তাই এটা প্রতিরোধ করতে হলে এখনই মানুষকে সচেতন করে তুলতে হবে। এই চ্যালেঞ্জটা বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিকদের নিতে হবে।’

কলকাতা ইনস্টিটিউট অফ মোটোলজি এন্ড ট্রান্সফিউশন মেডিসিন মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক মৈত্রীয়া ভট্রাচার্য বলেন, ‘থ্যালাসেমিয়া আমাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করে। এই সমস্যার সমাধান করতে হলে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। কারণ সাইপ্রাস বা গ্রিসের মত আইন করে উপমহাদেশে এটার সমাধান সম্ভব নয়। সামাজিকভাবে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সরকারের উচিত থ্যালাসেমিয়া বাহক আছে কি না সেটা পরীক্ষা করা এবং তার ফ্রি চিকিৎসা দেওয়া।’

ইন্টারন্যাশনাল থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি পল টেলফার বলেন, ‘আমি যুক্তরাজ্যে নন কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম থ্যালাসেমিয়া নিয়ে কাজ করি। এই রোগ থেকে একটা দেশকে মুক্ত করতে হলে সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে।’

‘বিশেষ করে থ্যালাসেমিয়া নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। সবাইকে এটার অপকারী দিকগুলো তুলে ধরতে হবে। সামাজিক ও শিক্ষামূলক সচেতনা অর্থাৎ পরিবার থেকে এটার সচেতনতা শুরু করতে হবে। এটার জন্য এখনই পরিকল্পনা করে এগোতে হবে যেন ভবিষ্যতে এটা আর না হয়।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর (এনসিডিসি) নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘আমাদের দেশে থ্যালাসেমিয়া রোগীর সংখ্যা দিনে দিনে বেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু সেই অর্থে চিকিৎসা হচ্ছে সীমিত আকারে। তাই এ রোগ যেন না হয় সেজন্য সকলকে সচেতন করে তুলতে হবে। এজন্য বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা করে দেখে নিতে হবে থ্যালাসেমিয়ার বাহক আছে কিনা।’

ঢাকাটাইমস/৩১ জানুয়ারি/এনআই/ডিএম

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজধানী এর সর্বশেষ

পুরান ঢাকায় বাবার সঙ্গে অভিমান করে স্কুল শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

প্রীতি উরাংয়ের মৃত্যু: বিচার চায় সচেতন নাগরিক সমাজ

তীব্র তাপপ্রবাহে জনসাধারণের মাঝে পানি, খাবার স্যালাইন বিতরণ বিএনপির

মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরেও নেতাকর্মীরা আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে: সালাম

ঢাকা মেডিকেলে এক কারাবন্দিকে মৃত ঘোষণা

ভাষানটেকে অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫, বাকি একজনও আশঙ্কাজনক

মুগদা-মান্ডা সড়কে অভিযান: ব্যক্তিগত সম্পত্তি ভাঙচুর ও মারধরের অভিযোগ  

মোহাম্মদপুরে তিতাসের এমডির বাসার সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

রাজধানীতে থাকবে না ফিটনেসবিহীন বাস, জুন থেকে মাঠে নামছে বিআরটিএ

আজ ৩ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না রাজধানীর বেশ কিছু এলাকায়

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :