স্কুলভবনে বসতবাড়ি!

নাটোর প্রতিবেদক
 | প্রকাশিত : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৮:৫৯

বিদ্যালয়ের ভবন জোরপূর্বক দখল করে একটি পরিবার বসতভিটা হিসেবে ব্যবহার করায় গত এক বছর ধরে পাঠদান বন্ধ রয়েছে নাটোরের সিংড়া উপজেলার দামকুড়ি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। দখলদার জমিদাতা মরহুম হারান মোল্লার ছেলে ওবায়দুর রহমান ও তাকে সমর্থনকারী প্রভাবশালী মহলের চাপে শিক্ষকরা স্কুল ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন, ভয়ে যাচ্ছে না শিক্ষার্থীরাও। কেউ কেউ স্থানীয় এবতেদায়ি মাদ্রাসায় আর কেউ কেউ অন্যত্র ভর্তি হয়ে ক্লাস করছে।

ক্ষুব্ধ স্থানীয় লোকজন জানান, ছয়জন দাতা সদস্যের দান করা ৩৩ শতাংশ জমিতে ১৯৯০ সালে গ্রামের সবাই মিলে গড়ে তোলেন প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। ১৯৯৩ সালে ভবন নির্মাণের পর জমিদাতা হারান মোল্লা বিদ্যালয়টির নাম তার নিজের নামে করতে আদালতে মামলা করেন। ওই মামলায় সরকার ডিক্রি পায়। এর কিছুদিন পর হারান মোল্লা মারা গেলে ছেলে ওবায়দুর ফের মামলা করেন। বর্তমানে মামলাটি চলমান রয়েছে। বছর খানেক আগে ওবায়দুর তার পরিবার নিয়ে স্কুলভবন দখল করে সেখানে বসবাস শুরু করেন।

তাদের অভিযোগ, আইনি জটিলতা ও অবৈধ দখলদারদের প্রভাবের কারণে দখলমুক্ত হয়নি। ওবায়দুর কারও কোনো বাধানিষেধ শোনেননি। কেউ নিষেধ করলে তাকে মারতে উদ্যত হন।

তবে ওবায়দুর রহমান স্কুলের জায়গা নিজের দাবি করে বলেন, ‘এ বিষয়ে মামলা বিচারাধীন। আমার ছেলে লেখাপড়া করছে। তাকে স্কুলে চাকরি দেওয়া হলে বিষয়টির সমাধান করা হবে।’

সাবেক ছাত্র মহসিন সরদার, জিয়ারুল ইসলাম, মতিজান ও রোজিনাসহ আরও অনেকে বলেন, ‘প্রতিষ্ঠার পর আমরা স্কুলে ক্লাস করেছি। ভবনটি করে দিয়েছিল সরকার।’

স্থানীয় বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য মোজাম্মেল হক জানান, স্কুলটি গ্রামের জন্য বিশেষ প্রয়োজন। বেদখলের পর কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দূর-দূরান্তে গিয়ে ভর্তি হতে হয়েছে। দুর্গম এলাকা হওয়ায় অনেক কষ্টে তারা পড়ালেখা করে আসছে।

ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি স্থানীয় ইউপি সদস্য সুলতান আহমেদ অভিযোগ করেন, স্কুলটি গ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের দাবিতে প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু একটি মহল এর ভবিষ্যৎ নষ্টের পাঁয়তারা করছে।

শিক্ষিকা শিউলী খাতুন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে স্কুলটিতে আমরা এলাকার ছেলেমেয়েদের পাঠদান করে আসছি। গতবারও পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষায় (পিইসি) পাঁচজন পরীক্ষার্থীর সবাই পাস করে হাইস্কুলে ভর্তি হয়েছে।’

সিংড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মঈনুল হাসান জানান, গত বছরও স্কুলটিতে সরকারি বই দেওয়া হয়েছিল। ভবন দখল হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে এর স্বাভাবিক কার্যক্রম নেই।

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :