ফেনীর রতনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়

কথা রাখলেন প্রধানমন্ত্রী, কিন্তু আটকে নির্মাণকাজ

আরিফ আজম, ফেনী
 | প্রকাশিত : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১১:১৪

প্রবাসীর পাঠানো এসএমএসে সাড়া দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের রতনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভবন নির্মাণের নির্দেশের বাস্তবায়ন নেই সাত মাসেও।

২০১৮ সালের ২২ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মোবাইল ফোনে আনোয়ার হোসেন খোকন নামের একজন সৌদি প্রবাসী ওই বিদ্যালয়ের দুরবস্থার কথা জানিয়ে একটি এসএমএস পাঠিয়েছিলেন। স্কুলটি স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা আফজালুর রহমানের জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু প্রয়োজনীয় শ্রেণিকক্ষের অভাবে ছাত্র-ছাত্রীরা পড়াশোনা করতে পারছে না।

এসএমএসটি পাওয়ার পর ওই দিন ভোর সাড়ে ৬টায় প্রধানমন্ত্রী তার একান্ত সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়াকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন বলে উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম জানান। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মনোজ কুমার রায়, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুনসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ বিদ্যালয়টি পরিদর্শনে ছুটে যান।

প্রথম ধাপে চারতলা ভীত বিশিষ্ট পাঁচটি শ্রেণিকক্ষের একটি ভবন নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার কথা সে সময় জানানো হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে এটি নির্মাণের দায়িত্ব পান জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীলের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘সেতু এন্টারপ্রাইজ’। ভবনটি নির্মাণে ৬৯ লাখ টাকা বরাদ্দও দেওয়া হয়। নির্মাণকাজের কার্যাদেশ পাঁচ মাস দেওয়া হলেও কাজ শুরু হয়নি।

স্থানীয়রা জানান, জমির মালিকানা-সংক্রান্ত জটিলতাই কাজ শুরুর না হওয়ার কারণ। তৎসংলগ্ন হাজী সৈয়দের রহমান উচ্চ বিদ্যালয় ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জমি নিয়ে বিরোধ আছে। ১৯৭২ সালে বাড়ির পাশেই ৪০ শতাংশ জমিতে প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন তখনকার ইউপি মেম্বার আফজালুর রহমান। ৭৪ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়। ওই স্কুলে আধাপাকা টিনশেড ভবনের তিনটি কক্ষে পাঠদান চলত। ভবনটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়লে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়। পরে আরেকটি ভবন নির্মাণ করা হলেও সেটিতেও শিক্ষার্থীদের স্থান সংকুলান হয় না।

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি কোহিনুর আক্তার ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিদ্যালয়টি ভবন নির্মাণের ঘোষণা দেওয়ায় এলাকাবাসী দারুণ খুশি। রতনপুর হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ জায়গা নিয়ে অসহযোগিতা করায় ভবনটির নির্মাণকাজ থমকে আছে। অথচ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ৫-৬ শতাংশ ও আশপাশে আরও কিছু জায়গা হাইস্কুলের দখলে রয়েছে।

বিভিন্ন সময় প্রতিবন্ধকতার কারণে ভবন নির্মাণ হয়নি। এ কারণে শিক্ষার্থীদের অনেক কষ্ট করতে হয়। পাঠদানও ব্যাহত হচ্ছে।’ রতনপুর হাজী ছৈয়দের রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহজাহান ঢাকা টাইমসকে বলেন, দুটি বিদ্যালয়ের সৌন্দর্য রক্ষা ও খেলাধুলার পরিবেশ রক্ষার্থে ভবন নির্মাণের জায়গা নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতু এন্টার প্রাইজের স্বত্বাধিকারী শুসেন চন্দ্র শীল ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘ভবন নির্মাণে কয়েকবার সার্ভে হয়েছে। তবে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর স্থান নির্ধারণ করে না দেওয়ায় ভবনটির নির্মাণকাজ শুরু হয়নি। আশা করি, শিগগিরই জটিলতা নিরসন হয়ে ভবনটির নির্মাণকাজ শুরু হবে।’

আফজালুর রহমানের প্রবাসী ছেলে আনোয়ার হোসেন খোকন বলেন, ‘এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে আনার চেষ্টা করেছি। নজরে আসামাত্রই তিনি প্রশংসনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।’

এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী বেলায়েত হোসেন ঢাকা টাইমসকে জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ভবনের লে-আউট দেওয়া হয়েছে। দুটি বিদ্যালয়ের মধ্যে জায়গা নিয়ে বিরোধ রয়েছে। সার্ভে করে সমাধান করা হবে বলে উভয় প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। সমাধান হলে ভবনটির নির্মাণকাজ শুরু হবে।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিক্ষা এর সর্বশেষ

জবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য অনলাইনে ক্লাস, চলবে সেমিস্টার পরীক্ষা

কুবির তিন দপ্তরে শিক্ষক সমিতির তালা

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন

ববির মেডিকেলে  চিকিৎসকের দায়িত্বে অবহেলা, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা

ইউনিভার্সিটি অফ স্কলার্সের বিবিএ ১৫তম ব্যাচের নবীন বরণ অনুষ্ঠিত

এবার কুবির আরেক সহকারী প্রক্টরের পদত্যাগ

গুচ্ছের হাবিপ্রবি কেন্দ্রে তিন ইউনিটে পরীক্ষার্থী ১২৩৪১ জন

জাবি অধ্যাপক তারেক চৌধুরীর গবেষণা জালিয়াতিতে তদন্ত কমিটি

বিএসএমএমইউর ১২৪ শিক্ষক-চিকিৎসক ‘গবেষণা অনুদান’ পেলেন সাড়ে ৪ কোটি টাকা

ঢাবির সুইমিংপুলে শিক্ষার্থীর মৃত্যু: তদন্ত কমিটি গঠন

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :