চাঁদা না পেয়ে ভবন নির্মাণে যুবলীগ নেতার বাধার অভিযোগ

নরসিংদীতে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় ১০ তলা বাণিজ্যিক কাম আবাসিক ভবন নির্মাণে বাধা দেয়া ও মালিককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে এক যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে। শহরের নির্মাণাধীন কোঠাবাড়ি শপিং সেন্টারে এ ঘটনা ঘটেছে।

শনিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে কোঠাবাড়ি কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরহাদ হোসেন এসব অভিযোগ করেন। তার অভিযোগ, শহর যুবলীগের সভাপতি দিদারুল হক সরকার বিপ্লব তার কাছে এই চাঁদা দাবি করেন। বিপ্লব নরসিংদী-১ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম হিরুর ভাতিজা।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, শহরের স্টেশন রোডে ২৮ শতাংশ জমিতে ওই ভবন নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছিল কোঠাবাড়ি কনস্ট্রাকশন। আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি ভবনটির নির্মাণ কাজ শুরুর জন্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও দোয়া মাহফিলের জন্য প্যান্ডেল নির্মাণ করা হয়। কিন্তু যুবলীগ নেতা বিপ্লব তার কাছে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় কোঠাবাড়ি কনস্ট্রাকশনের চেয়ারম্যান হান্নান মিয়াকে ফোনে গালিগালাজ করে প্রাণনাশের হুমকি দেন বিপ্লব।

হান্না মিয়াকে তুলে নিয়ে মানসিক নির্যাতন ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগও করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। ঠিকাদার নিয়োগ, তাদের ইচ্ছেমত দামে ইট, বালি, সিমেন্ট ও পাথর কেনার বিষয়ে সম্মতিও আদায় করা হয়।

গত শুক্রবার ফরহাদ হোসেন ও কর্মকর্তারা প্রকল্প পরিদর্শনে গেলে বিপ্লব ও তার সহযোগীরা হামলা চালায় বলেও অভিযোগ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। আর এ হামলার প্রমাণ যেন প্রকাশ না পায় সেজন্য সিসি ক্যামেরার ডিভাইসটিও খুলে নেয়া হয়। রাতে তাঁরা প্রকল্পের ভেতরে নিজেদের ঠিকাদার দাবি করে তাদের কনস্ট্রাকশনের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়ে পাইলিংয়ের সরঞ্জাম রেখে দেয়।

পরে কোঠাবাড়ি কনস্ট্রাকশন কর্তৃপক্ষ ঢাকায় গিয়ে সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম হিরুর অফিসে ও দ্বিতীয় দফায় নরসিংদীতে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন ভূঁইয়া ও পৌর মেয়র কামরুজ্জামানের উপস্থিতিতে তার কাছে অভিযোগ জানান। কিন্তু তিনি অভিযোগ আমলে না নিয়ে উল্টো গালমন্দ করেন।

কোঠাবাড়ি কনস্ট্রাকশনের চেয়ারম্যান হান্নান মিয়া বলেন, ‘আমরা সরকারি বিধি মোতাবেক সকল নিয়ম মেনে সুনামের সাথে কোম্পানির কার্যক্রম পরিচালনা করছি। এ অবস্থায় সংবাদ সম্মেলন থেকে সাবেক প্রতিমন্ত্রীর ভাতিজা বিপ্লবের চাঁদাবাজি ও অত্যাচার থেকে মুক্তি পেতে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।’

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে শহর যুবলীগ নেতা দিদারুল হক সরকার বিপ্লব বলেন, ‘কোঠাবাড়ির জমি বরাদ্দসহ সকল ধরনের কর্মকা- আমি নিজে সমাধান করে দিয়েছি। অনুষ্ঠানের আয়োজনে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে রাখার কথা বললে কোম্পানির চেয়ারম্যান আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করেন। এখন তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার করছে।’

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে নরসিংদী-১ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনার অভিযোগ পেয়েছি এবং বিষয়টি দেখার আশ্বাস দেয়ার পরও ১২ ঘণ্টা না পার হতেই এ সংবাদ সম্মেলন রহস্যজনক এবং বিশেষ মহল কর্তৃক আমার পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি কলুষিত করার অপচেষ্টা।’