শ্রমিক রপ্তানি

মালয়েশিয়ার সংকেতের অপেক্ষায় বাংলাদেশ

প্রকাশ | ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৮:২৪

মহিউদ্দিন মাহী

মালয়েশিয়ার জনশক্তি রপ্তানির বন্ধ দুয়ার চালুর জন্য দেশটির সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় ঢাকা। গত বছরের অক্টোবরে দুই দেশের সরকারি পর্যায়ে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকের পর আনুষ্ঠানিকভাবে বসেনি দুই পক্ষ। তবে বাংলাদেশ হাইকমিশন দেশটির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে।

মালয়েশিয়ায় নতুন সরকার আসার পর বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায় বিদায়ী বছরের মাঝামাঝি সময়ে। দেশটির নতুন সরকার আবার বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে চায়। এজন্য দুই পক্ষই আলোচনা শুরু করে। এরই অংশ হিসেবে গত অক্টোবরে দুই দেশের মধ্যে বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে মালয়েশিয়া জানায়, বাংলাদেশ থেকে কোনো বিশেষ প্রতিষ্ঠানের বদলে কর্মী পাঠানোর বিষয়টি উন্মুক্ত করে দিতে চায় তারা। এর পাশাপাশি অদক্ষ কোনো কর্মী নেওয়া হবে না বলেও বাংলাদেশকে জানিয়ে দেওয়া হয়।

এসব কিছু বিবেচনায় নিয়ে ডাটাবেস তৈরি করছে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়। এখন তারা মালয়েশিয়ার সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় আছে সরকার। কর্মী পাঠানোর চাহিদাপত্র পাঠানো মাত্রই যেন কর্মী পাঠানোর যায়- সেজন্য যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ করছে তারা।

প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব রৌনক জাহান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর বিষয়টি এখনো প্রস্তুতি পর্যায়ে আছে। গত অক্টোবরে আমরা মালয়েশিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছি। এরপর আর বৈঠক হয়নি। কিন্তু এটা নিয়ে লেবার উইং কাজ করছে।’

এদিকে মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণ নিয়ে এরই মধ্যে বাংলাদেশে নানা প্রচার শুরু হয়েছে। ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে যে, প্লানটেশনে ১০ হাজার কর্মীর জন্য বাংলাদেশে চাহিদাপত্র এসেছে।

তবে এই তথ্যকে ভুল বলছেন প্রবাসীকল্যাণ সচিব। বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর এখনো কোনো চাহিদাপত্র আমরা পাইনি। আমরা এই তথ্যে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য আহ্বান জানাই।’

জিটুজি প্লাস পদ্ধতিতে ১০ রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় কাজের অনুমতি পেয়েছিল বাংলাদেশ। বর্তমানে তাদের মাধ্যমে আবেদন করা প্রায় ১৫ হাজার শ্রমিক দেশটিতে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। কিন্তু এ পদ্ধতিতে দেশটিতে প্রবেশের শেষ সময় ছিল ৩১ ডিসেম্বর।

বেধে দেওয়া সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় জিটুজি প্লাস প্রক্রিয়ায় এসব কর্মীকে পাঠানো সম্ভব হয়নি। ফলে বাতিল হয়ে যায় এসব প্রমিকের চাহিদাপত্র। অপেক্ষমাণ এসব শ্রমিককে মালয়েশিয়ায় যেতে হলে পুনরায় নতুন পদ্ধতিতে যেতে হবে।

২০১২ সালে জিটুজি পদ্ধতিতে কর্মী পাঠাতে মালয়েশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশ। ২০১৬ সালে ১০টি বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সিকে জিটুজি প্লাসের আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তাদের মাধ্যমে ২০১৭ সালে ৯৯ হাজার ৭৮৭ জন বাংলাদেশি শ্রমিক মালয়েশিয়া যান। আর ২০১৮ সালের আগস্ট পর্যন্ত এক লাখ ২৫ হাজার ৮১৯ জন শ্রমিক পাঠিয়েছে এ ১০ রিক্রুটিং এজেন্সি।