রিজার্ভের অর্থ তিন বছরের মধ্যে ফেরতের আশা

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২১:২৬ | প্রকাশিত : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২০:৪২

নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশের রিজার্ভের চুরি যাওয়া অর্থ আগামী তিন বছরের মধ্যে ফেরত আসবে বলে আশা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নিউ ইয়র্কে ফিলিপিন্সের রিজল ব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে জানাতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি জানান, মামলা নিষ্পত্তি করতে আনুমানিক তিন বছর সময় লাগবে। গত ৩১ জানুয়ারি সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট অব নিউইয়র্কের কোর্টে এই মামলা করা হয়। ১০৩ পৃষ্ঠার মামলায় ১৫ জন ব্যক্তি, সাতটি প্রতিষ্ঠান এবং ২৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে বিবাদী করা হয়েছে।

রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংকে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন আজমালুল। এসময় বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) প্রধান আবু হেনা মো. রাজী হাসান, বিএফআইইউর পরামর্শক দেবপ্রসাধ দেবনাথ, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মামলাটি করতে দেরি হলো কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনজীবী বলেন, মামলার তথ্য, বিভিন্ন তদন্ত ও রিপোর্ট সংগ্রহের কাজে সময় লেগেছে। তথ্য সংগ্রহের সময় মূল অপরাধী ফিলিপাইনের রিজাল কমারর্শিয়াল ব্যাংক-আরসিবিসি যাতে কিছু জানতে না পারে সেজন্য তথ্য সংগ্রহ করতে হয়েছে খুব সতর্কতার সাথে। এ কারণেও মামলা করতে দেরি হয়েছে।

মামলা পরিচালনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের চ্যালেঞ্জের বিষয়ে আজমালুল বলেন, ‘আরসিবিসি অবৈধভাবে বাংলাদেশের অর্থ গেছে এবং এই টাকা কোথায় কোথায় খরচ হয়েছে সেটা প্রমাণ হবে। আর এই প্রমানের ভিত্তিতেই আমরা আশা করছি আমাদের হারিয়ে যাওয়ার রিজার্ভের পুরো অংশ, সুদ এবং খরচসহ ফেরত পাব।’

টাকা ফেরত আসার বিষয়ে খুবই আশাবাদী এই আইনজীবী। বলেন, ‘ফিলিপাইনের আরসিবিসি থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ হ্যাকারদের বের করে নিয়ে যাওয়ার দিন ব্যাংকটির ক্যামেরা বন্ধ রাখা, সুইফট এর সার্ভার অকার্যকর করে রাখা, আরসিবিসি-এর স্থানীয় এক কর্মকর্তার সাজা হওয়া এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির সাথে কয়েকজনের সংশ্লিষ্টতা প্রমানিত হওয়ায় আমরা আশাবাদী চুরি যাওয়ার অর্থ ফেরত পাব।’

হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে থাকা বাংলাদেশের রিজার্ভ থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। ব্যাংকিং লেনদেনের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক সুইফটে ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে ফিলিপিন্সের আরসিবিসিতে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ও শ্রীলঙ্কার দুটি ব্যাংকে ২ কোটি ডলার স্থানান্তর করা হয়।

এর মধ্যে শ্রীলঙ্কার ব্যাংকে স্থানান্তর হওয়া দুই কোটি ডলার ফেরত আনা হয়েছে। তবে রিজল ব্যাংকে যাওয়া অর্থ নানা হাত ঘুরে স্থানীয় কয়েকটি ক্যাসিনোতে চলে যায়। এর মধ্যে একজন ক্যাসিনো মালিকের ফেরত দেওয়া এক কোটি ৪৬ লাখ ডলার ফেরত এসেছে। তবে ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলারের এখানো হদিস নেই।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এই অর্থ ফেরত আনতে আইনি লড়াই করতে দেশটিতে দুটি ল ফার্মকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী চুরি যাওয়া ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার উদ্ধার করে দিতে ‘প্রতি ঘণ্টা কাজ ভিত্তিতে’ পারিশ্রমিক দিতে লাগবে। এখন পর্যন্ত খরচ হয়েছে তিন কোটি টাকা।

যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে করা মামলায় বাংলাদেশ ব্যাংক জিতলেও আরসিবিসি টাকা ফেরত দিতে বাধ্য কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে আজমালুল হক বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আরসিবিসির এ ধরনের চুক্তি রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে তাদের সম্পদও আছে। মামলায় বাংলাদেশ ব্যাংক জিতলে এ সম্পদ থেকেও অর্থ ফেরত পাওয়া কঠিন হবে না।’

অর্থ ফেরত পাওয়ার ব্যাপারে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক ও সুইফটও বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রযুক্তি, কারিগরি ও আইনি সহযোগিতা দিচ্ছে বলেও জানান এই আইনজীবী।

সংবাদটি শেয়ার করুন

অর্থনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

অর্থনীতি এর সর্বশেষ

দুঃস্থ ও অসহায়দের মাঝে জনতা ব্যাংকের ইফতার সামগ্রী বিতরণ

ঈদ উৎসব মাতাতে ‘ঢেউ’য়ের ওয়েস্টার্ন সংগ্রহ

৮ হাজার কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন একনেকে

সিটি ব্যাংকের ২০২৩ সালের মুনাফা ৬৩৮ কোটি টাকা, বেড়েছে ৩৩%

ঈদ অফারে বিনামূল্যে মিনিস্টারের রেফ্রিজারেটর পেলেন আসাদুজ্জামান সুমন

সোনালী ব্যাংকে ‘বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক নেতৃত্ব ও দেশের উন্নয়ন’ শীর্ষক আলোচনাসভা

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ৭টি নতুন উপশাখার উদ্বোধন

স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের শ্রদ্ধা

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে কর্মসংস্থান ব্যাংকের শ্রদ্ধা

স্বাধীনতা দিবসে স্মৃতিসৌধে ইসলামী ব্যাংকের শ্রদ্ধা

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :