সড়কে মৃত্যুর মিছিল বন্ধে কার্যকর পথ খুঁজুন

প্রকাশ | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৪:০৯

আরিফুর রহমান

এত উদ্যোগ এত সচেতনতামূলক কর্মসূচির পরও সড়কে মৃত্যুর মিছিল থামছে না। প্রতিদিন সড়কে ঝরছে প্রাণ। অনেক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের একাধিক সদস্যের মৃত্যু ঘটছে। দুর্ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের পরিবারে নামছে দুর্যোগ। আবার একমাত্র উপার্জনকারীকে হারিয়ে অন্ধকার দেখছে অনেক পরিবার।

দুর্ঘটনা বেশি ঘটছে মহাসড়কগুলোতে। গাড়ি চালানোর সময় চালকদের একটি বড় অংশ গতি ও ওভারটেকের প্রতিযোগিতায় নামে। তাতে করে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনায় নিজের ও যাত্রীদের প্রাণ হারাতে হয়। নিয়ম অমান্য করে ছোট পরিবহনগুলো শাখারাস্তা থেকে মূল সড়কে উঠে দুর্ঘটনায় পড়ছে।

সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু নিয়ে সব মহলেই আছে উদ্বেগ। কিন্তু এই উদ্বেগ কাটিয়ে উঠতে যে ধরনের পদক্ষেপ দরকার, তার অনেক কিছুই বাস্তবায়ন হচ্ছে না। সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর বিচার হয় খুব কম। অনেক ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার পর চালক ও তার সহকারী পালিয়ে যায়। অপরাধী থাকে ধরাছোঁয়ার বাইরে।

গত মাসের দ্বিতীয়ার্ধে সড়ক নিরাপত্তা পক্ষ পালিত হয়েছে। এখন চলছে পুলিশ সপ্তাহ। কিন্তু সড়কে নিরাপত্তা আসছে কই! বর্তমান সরকার দেশের উন্নয়নে অনেক কিছু করছে। মানুষের কল্যাণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে, নিচ্ছে। কিন্তু পথে মানুষের জীবন এখনো অনেকটাই অরক্ষিত।

সরকার নিশ্চয়ই এ নিয়ে ভাবছে। তবে আমরা মনে করি, এই খাতের কর্তৃপক্ষ উপরিতল কারণ দেখিয়ে দায় সারছে। দেশে এত এত দিকের কত পরিবর্তন হচ্ছে, এই খাতে কেন হবে না?

আসলে এ ক্ষেত্রে আন্তরিকতার অভাব রয়েছে। আবার প্রভাবশালীদের কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিরুপায় থাকার তথ্য সংবাদে আসে। তাই আগে সড়কে প্রাণহানি ও দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ শনাক্ত করতে হবে। মহাসড়কে অবৈধ গাড়ি, অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, লাইসেন্সবিহীন গাড়ি ও চালক, গতির প্রতিযোগিতা- সবগুলোর পেছনে অনুঘটক হিসেবে কাজ করে শ্রমিক-মালিক সংগঠন, রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তিদের এই খাতে বেপরোয়া সংশ্লিষ্টতা। এসব বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে কঠোর হলে দুর্ঘটনা অনেক কমে যাবে বলে আমরা মনে করি।

আরেকটি বিষয়। পথচারী ও যাত্রীদেরও সড়ক যাতায়াতে সচেতন হতে হবে। যানবাহনে ওঠার আগে সেটি চলার উপযোগী কি না দেখতে হবে। সড়ক পারাপারে আইন মেনে চলতে হবে। গতির প্রতিযোগিতায় চালককে নিবৃত্ত করতে হবে। তা না হলে শুধু সরকার ও কর্তৃপক্ষকে দোষ দিয়ে লাভ হবে না।

সরকার ও সড়ক কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ, সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সড়কে মৃত্যুর মিছিল থামানোর পথ খুঁজে বের করুন। সড়কে জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।