সারাদেশে ওসমান গনিদের সংখ্যা বাড়ুক

প্রকাশ | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২২:৩৫

শরীফুল হাসান

আমাদের অনেক সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারী নষ্ট হয়ে যান এবং নষ্ট হওয়ার জন্য দায়ী করেন চারপাশের সিস্টেমকে। কিন্তু চাইলে যে সৎভাবে কাজ করা যায় এবং স্রোতের বিরুদ্ধে লড়াই করা যায় তার প্রমাণও চারপাশে আছে। এই ধরেন, মুনীর চৌধুরী স্যার যখন যেখানে গেছেন লড়েছেন। এক ইউসুফ ভাই তো পুরো বিমানবন্দরই বদলে দিয়েছিলেন। মাটির মায়ার সেই এসিল্যান্ড শাহাদাত ভাইকে ভুলবো কী করে? ফেনীতে সোহেল তো মাদকের বিরুদ্ধে লড়েছিল। আমি তাদের সবাইকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি, জানি।

সরকারি সব দপ্তরেই নিশ্চয়ই এমন মানুষ আছেন। আমি যখন এই মানুষগুলোর কথা শুনি, যখন শুনি কোনো সরকারি কর্মকর্তা সৎভাবে লড়াই করছেন আমি তাকে মন থেকে ভীষণ শ্রদ্ধা করি। আমার সেই তালিকায় যুক্ত হলো আরেকটি নাম। তিনি ওসমান গনি। ঝিনাইদহের শৈলকুপার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তিনি।

কেন তিনি আলাদা শুনবেন? জমি আছে, ঘর নেই-এমন মানুষদের টিনের ঘর করে দেওয়ার প্রকল্প নিয়েছে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের মাধ্যমে সারা দেশে এমন এক লাখ ৭০ হাজার গরিবকে ঘর করে দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে এক লাখ ১৫ হাজার ঘর তৈরি হয়ে গেছে। প্রকল্পের আওতায় শৈলকুপা উপজেলায় ৩০৯টি ঘরের জন্য তিন কোটি নয় লাখ টাকা বরাদ্দ আসে। অর্থাৎ প্রতিটি ঘরের জন্য বরাদ্দ এক লাখ টাকা। এই টাকা দিয়েই টিনের ঘরের বদলে আধা পাকা ঘর করে দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে দিয়েছেন ওসমান গনি। তার এই উদ্যোগের ফলে মানুষ যেমন ভালো ঘর পাচ্ছে, তেমনি সরকারি টাকার সদ্ব্যবহার প্রশংসিত হচ্ছে এলাকায়।

যে কারণে ওসমান গনি আলাদা, সেটা হলো সারাদেশে এক লাখ ঘর তৈরি হয়ে গেল, কোথাও তো শুনলাম না কোথাও প্রশাসন পাকা ঘর করে দিয়েছে ওই টাকায়। কিন্তু ওসমান গনি সেই সাহস করেছে।

ওসমান গনির কর্মতৎপরতা অবশ্য নতুন নয়। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) থাকা অবস্থায় ওই অফিসকে ঘুষমুক্ত করেছিলেন। ২০১৬ সালে সারা দেশের ও খুলনা বিভাগের শ্রেষ্ঠ সহকারী কমিশনার (ভূমি) নির্বাচিত হন। ২০১৭ সালে খুলনা বিভাগীয় শ্রেষ্ঠ কর্মকর্তা নির্বাচিত হন। সারাদেশে এমন ওসমান গনির সংখ্যা বাড়ুক।

লেখক : সাংবাদিক