বিএনপি না এলেও প্রার্থীর অভাব হবে না: কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢা্কাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৬:১৪
ফাইল ছবি

আগামী মাস থেকে কয়েক পর্বে হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি না এলেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সরকারি দলের প্রার্থীদের জেতার সম্ভাবনা কম বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বিএনপি প্রার্থী না দিলেও জাতীয় পার্টি, ১৪ দলের শরিক অন্যরা এবং অন্যান্য দল প্রার্থী দেবে বলে মনে করেন তিনি। এছাড়া বিএনপি দলীয়ভাবে প্রার্থী না দিলেও স্থানীয় পর্যায়ে দলের বিভিন্ন নেতা স্বতন্ত্র নির্বাচন করবেন বলে ধারণা ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদকের।

মঙ্গলবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। উপজেলা নির্বাচনের জন্য চেয়ারম্যান পদে দ্বিতীয় দিনের মতো মনোনয়ন ফরম বিক্রির কার্যক্রম উদ্বোধন শেষে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গতবার উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে বিজয়ীর সংখ্যায় বেশি ছিল বিএনপির। গতবার যারা বিজয়ী হয়েছেন তারা এবার নির্বাচন একেবারে ফাঁকা মাঠে ছেড়ে দেবে, আমার তো মনে হয় এটার সম্ভাবনা খুব কম। অনেকই নির্বাচন করতে চাইবেন। বিএনপি নির্বাচনে আসবে না এটা দলীয়ভাবে বলেছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উপ-নির্বাচনে মেয়র পদে তাদের প্রার্থী নেই। কিন্তু কাউন্সিলর- ইউনিয়ন পর্যায়ে অনেক নেতার প্রার্থিতা রয়েছে।’

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘তারা (বিএনপি) হয়তো ওপেনলি প্রতীকে নেই৷ তারা একেবারে মাঠে নেই একথা বলা যাবে না। উপজেলা নির্বাচনে তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিতে পারে। দিলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।’ ‘কাজেই আমাদের সবকিছুই মাথায় রাখতে হচ্ছে। ওপেনলি ঘোষণা দিচ্ছে না তারা (বিএনপি), ভেতরে-ভেতরে প্রার্থিতার জন্যে মনোনয়নপত্র জমা দিচ্ছে। নির্বাচনে বিএনপি না এলেও প্রার্থিতার অভাব হবে না। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা কম। বিএনপি নির্বাচন না করলে অন্যরা করবে না তো নয়। জাতীয় পার্টি আছে, ১৪ দলের শরিকরা আছে।’

উপজেলা আওয়ামী লীগ কেন্দ্রের কোনো গঠনতন্ত্র মানছে না, বিভিন্ন উপজেলায় বর্ধিত সভা পণ্ড হওয়ার অভিযোগ করছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা এ বিষয়ে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করলে অনেকটা ক্ষেপে যান ওবায়দুল কাদের। বলেন, ‘এটা কি সাংবাদিকদের বিষয়। কেন আপনি এ প্রশ্ন করবেন? আমার তৃণমূল নিয়ে কেন আপনার এত মাথাব্যথা? আপনি এটা পারেন না। ডোন্ট ডু ইট। দি সোড ইট ইউর কোয়েশ্চেন। আমাদের তৃণমূল আমরা দেখবো। আওয়ামী লীগের পার্লামেন্টারি ইলেকশন নিয়ে অনেক কথা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত কোনো অভিযোগ টিকেছে? এটা আমাদের দলীয় বিষয়। আমরাই সমাধান করবো। আমাদের নিজস্ব ম্যাকানিজম রয়েছে।’

কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি বড় সংগঠন, পাঁচ বছর পরে উপজেলা নির্বাচন হবে অনেকই প্রার্থী পাওয়ার আশা আছে, ইচ্ছা করেন, অনেকরই আশা আকাঙ্ক্ষা থাকতে পারে। নিয়ম-অনিয়ম নিয়ে দলের মনোনয়ন বোর্ড রয়েছে। এটাতো চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে না, এখানে সার্ভে রিপোর্ট রয়েছে। যদি নিয়ম অনুযায়ী কোথাও কিছু না হয়, সেটা মনোনয়ন বোর্ড দেখবে। অনিয়মে কাউকে আমরা মনোনয়ন দেব না। যাচাই-বাচাই করে মনোনয়ন দেব।’

আওয়ামী লীগ আগে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল উপজেলায় শুধু চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী দেবে কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে এখন চেয়ারম্যানের পাশাপাশি ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদেও প্রার্থী দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে কেন-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের এ সম্পর্কিত সিদ্ধান্তের পরে নির্বাচন কমিশন থেকে জানানো হয়েছে এ ব্যাপারে আইনগত একটা বিষয় রয়েছে। আইনগত দিক দেখলে ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দিতে হবে এবং প্রতীকও দিতে হবে। এই সংবাদ পাওয়ার পরে আমি সিইসি ও সচিবের সঙ্গে কথা বলেছি। আইনগত দিক বিবেচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছি।’

বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিষয়ে জানতে চাইলে সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘মনোনয়ন দেয়ার আগে আমরা বিদ্রোহী প্রার্থী কীভাবে কল্পনা করবো। মনোনয়ন বোর্ড প্রার্থী দেবে। কিন্তু এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কে প্রার্থী হবেন সেটা এখন বলা যাচ্ছে না।’

বিএনপির আন্দোলনের হুমকি প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘গণআন্দোলন করার মতো ইস্যু তাদের কাছে ছিল, কিন্তু তারা তখন আন্দোলন করতে পারেনি। তাদের দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দীর্ঘদিন দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তিনি যখন গ্রেপ্তার হলেন তখন তারা জনমনে বিন্দুমাত্র আলোড়ন তুলতে পারেনি। তাদের আন্দোলন করার মতো কোনো ইস্যু সামনে নেই। নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। এ মুহূর্তে সরকার তো কোনো ইস্যু দিচ্ছে না, তাহলে তারা কিসের ওপর ভিত্তি করে আন্দোলন করবে।’

এ সময় ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী সুলতান মনসুরের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তিনি আওয়ামী লীগে ফিরছেন কি না এটা তার নিজের সিদ্ধান্তের বিষয়। এটা তার নিজস্ব চিন্তা-ধারণা, এটা নিয়ে তার সঙ্গে আমার কোনো কথা হয়নি। আর এ ধরনের কোনো প্রস্তাব আমি দিতে যাব কেন? তারও বিবেক আছে, রাজনীতি করেন। কাজেই তিনি তার বিবেক থেকে এ সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। আমরা কেন তাকে ইনফ্লুয়েন্স করবো।’

(ঢাকাটাইমস/০৫ফেব্রুয়ারি/টিএ/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :