ইডি কার্যালয়ে স্বামীকে ছাড়তে এলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী
আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে ভারতের কংগ্রেসের নবনিযুক্ত উত্তর প্রদেশ পূর্বের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর স্বামী রবার্ট ভদ্রাকে জেরা করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। আর সেই জেরায় মুখোমুখি হওয়ার আগে রবার্টকে ইডি অফিসে ছেড়ে দিয়ে গেলেন খোদ প্রিয়াঙ্কা।
আর সেখানেই সংবাদমাধ্যমকে প্রিয়াঙ্কা বলেন,’সবাই জানে কী হচ্ছে। আমি আমার স্বামীর পাশেই দাঁড়াচ্ছি।’ রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, দক্ষিণ দিল্লির ইডি অফিসে হাজির হয়ে আসলে নিজের রাজনৈতিক উপস্থিতিই জানান দিলেন প্রিয়াঙ্কা। যা একই সঙ্গে বার্তা ইডি এবং শাসক বিজেপি শিবিরকে।
লন্ডনে একাধিক সম্পত্তি কেনাবেচা নিয়ে আর্থিক অনিয়ম করার অভিযোগ আছে রবার্ট ভদ্রার বিরুদ্ধে। এই সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৯ মিলিয়ন পাউন্ড বা প্রায় ৯৮ কোটি টাকা। এই নিয়েই তার বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। কারও কারও বক্তব্য, লোকসভা নির্বাচন এগিয়ে আসা এবং প্রিয়াঙ্কার রাজনীতিতে নামার খবর সামনে আসার পর বেড়েছে ইডি-র তদন্তের গতি।
গত বছরের ডিসেম্বরেই দিল্লির একটি ফার্মহাউসে তল্লাশি চালায় ইডি। অভিযোগ, খামারবাড়ির সঙ্গে যুক্ত রবার্ট। জেরা করা হয় তার অন্যতম সহযোগী মনোজ অরোরাকেও। তদন্তে গতি বাড়াচ্ছে ইডি, সেই ইঙ্গিত পেয়ে গত সপ্তাহেই দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রবার্ট ভদ্রা। দিল্লি হাইকোর্ট তাকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিলেও একই সঙ্গে তদন্তের প্রয়োজনে ইডি-র কাছে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশও দেন।
সেই হাজিরা দিতেই বুধবার দক্ষিণ দিল্লির ইডি অফিসে গিয়েছিলেন রবার্ট। আর সবাইকে কিছুটা অবাক করেই তাকে ইডি অফিসে পৌঁছে দিয়ে যান প্রিয়াঙ্কা নিজে। শুধু পৌঁছে দেওয়াই নয়, ইডি অফিস থেকে বের হলে প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘কী চলছে, আপনারা সবাই জানেন। আমি আমার স্বামীর পাশে আছি।’ এর পরই তিনি ইডি অফিস থেকে সরাসরি চলে যান ২৪ আকবর রোডে কংগ্রেসের সদর দপ্তরে।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে জানা যাচ্ছে, এ দিন মোট ৪০টি প্রশ্ন করা হয় রবার্ট ভদ্রাকে। প্রতিটির উত্তরই তাকে লিখিতভাবে দিতে বলা হয়। তার সঙ্গে অন্য আর একটি কক্ষে অবশ্য হাজির ছিলেন তার আইনজীবীও।
আনন্দবাজার জানায়, শুধু স্বামীর পাশে দাঁড়াতেই প্রিয়াঙ্কা হাজির হয়েছেন ইডি অফিসে, এমনটা না-ও হতে পারে। কারও কারও মতে, বিজেপি শিবিরের কাছে নিজের রাজনৈতিক উপস্থিতির বার্তা পৌঁছে দেওয়াই আসল উদ্দেশ্য। সোমবার আমেরিকা থেকে ফেরার পরই তৎপরতা বাড়িয়েছেন প্রিয়াঙ্কা। কখনো উত্তর প্রদেশের কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বৈঠক, কখনো কংগ্রেস সদর দপ্তরে নিজের ঘর বেছে নেওয়া, কখনও বা কংগ্রেস নেতাদের ফোন করে এলাকার খোঁজখবর নেওয়া— প্রতি দিনই রাজনীতির আঙিনায় নিজের উপস্থিতি বাড়াচ্ছেন তিনি। এখনও সরকারিভাবে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বভার না নিলেও তার উপস্থিতি ছাপ ফেলেছে কংগ্রেস শিবিরে। এ বার সম্ভবত সেই উপস্থিতি তিনি ছড়িয়ে দিলেন শাসক শিবিরেও, এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের।
(ঢাকাটাইমস/৬ফেব্রুয়ারি/এসআই)